গাজর অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও আঁশসমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি।
কমলা রঙের এ সবজিতে আছে বিটা ক্যারোটিন, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
কাঁচা গাজর, সালাদ, জুস বা তরকারিতেও খাওয়া যায়। চোখ, ত্বক, চুল ও শরীরের নানা অঙ্গের জন্য গাজরের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।
অন্যান্য সবজির তুলনায় গাজর অত্যন্ত পুষ্টিকর। উদাহরণস্বরূপ মুলার চেয়ে গাজরে ফসফরাস আছে ২৬ গুণ, ক্যারোটিন প্রায় ৬৩০ গুণ।
গাজরের রসের উপকারিতা
১. চোখের মহৌষধ
গাজরের আকর্ষণীয় বর্ণের মধ্যেই রয়েছে এর ঔষধি গুণ।
গাজরের বিটা ক্যারোটিন নিজে নিজেই ভিটামিন-এ’তে রূপান্তরিত হয় যা দেহের জন্য খুবই উপকারী।
বিটা-ক্যারোটিন আমাদের দেহের ভেতরে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে রেটিনল বা ভিটামিন-এ’তে রূপান্তরিত হয়, আর ভিটামিন-এ আমাদের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আমাদের দেশে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার শিশু অন্ধ হয়ে যায় ভিটামিন-এ’র অভাবে।
সাধারণত ৫ মাস থেকে ৫ বছর বয়সের শিশুরাই চোখের সমস্যায় ভোগে।
প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ শিশু রাতকানা রোগে আক্রান্ত হয়।
তাই শিশুকে প্রতিদিন ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হয়।
গাজর ক্যারোটিনের রাজা, যা ভিটামিন-এ’র উৎস।
তাই শিশুদের প্রতিদিন অন্তত মৌসুমের সময় গাজর খাওয়ানো উচিত।
২. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
গাজরের রস লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়। ফলে হজম শক্তির উন্নতি হয়।
৩. হাড়ের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
রোগ প্রতিরোধ গাজরের অস্টিওপরোসিস, আথ্রাইটিস ও বিভিন্ন রস হিতকর।
৪. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
গাজরে রয়েছে ভিটামিন-ই, যা ক্যান্সার প্রতিরোধী। তাই গাজর ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
গাজরে বিদ্যমান বিটা-ক্যারোটিন আমাদের ত্বককে সূর্যের অতি বেগুণি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা করে এমনকি ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।
৫. বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে
বয়সের ছাপ কমাতে গাজরের রস সাহায্য করে।
গাজর বিটা- ক্যারোটিন সমৃদ্ধ, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং কোষের ক্ষয় রোধে সহায়ক। ফলে দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়াকে রোধ করে।
৬. ওজন কমায়
গাজরে ক্যালোরির পরিমাণ যৎসামান্য, যা ওজন কমাতে বেশ সহায়ক।
৭. কোলস্টেরল কমায়
গাজরে পটাসিয়াম বিদ্যমান, যা কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৮. চর্বি কমায়
গাজরের রস লিভারের চর্বি ও পিত্ত কমাতে সাহায্য করে।
৯. ত্বকের লাবণ্য বাড়ায়
গাজরের রস ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বককে সুরক্ষা করে।
১০. ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমায়
বয়সজনিত যে কোনো ব্যথা-বেদনা ও শরীরের জ্বালাপোড়া কমাতে গাজরের রস হিতকর।
গাজর এর উপকারিতার শেষ নেই।
তাই-সুস্থ নীরোগ থাকতে যদি চান, নিয়মিত গাজর খান।