Search
Close this search box.

সানস্ক্রিন নিয়ে যতো খুঁটিনাটি!

লাবণ্যময়,দাগহীন ত্বক পেতে নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার-এর কোন তুলনা হয় না।

বেসিক স্কিন কেয়ারে সানস্ক্রিন  এক অপরিহার্য প্রোডাক্ট যা ব্যবহার না করলে আপনার স্কিন কেয়ার অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। মেছতা, অতিরিক্ত তিল, সানট্যান বা সানবার্ন, পিগমেন্টেশন ইত্যাদি-এর প্রথম সমাধান হলো সানস্ক্রিন।

তাই চলুন আজকে দেখে নেওয়া যাক সানস্ক্রিন সম্পর্কে যাবতীয় কিছু খুঁটিনাটি তথ্য। 

কেমিক্যাল সানস্ক্রিন কী? 

অর্গানিক বা কেমিক্যাল সানস্ক্রিন মূলত সানস্ক্রিন নামে পরিচিত।

কেমিক্যাল সানস্ক্রিন আমাদের ত্বকের ভিতরে এবসর্ব হয়ে যায় এবং UV Ray শোষণ করে এটি তাপ আকারে স্কিন থেকে বের করে দেয় যার কারণে UV Ray এর কার্যক্ষমতা কমে যায়।

এই সানস্ক্রিনে সাধারণত অক্সিবেনজোন,অ্যাভোবেনজেন এ ধরনের উপাদান থাকে।

ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন কী? 

ফিজিক্যাল বা মিনারেল সানস্ক্রিন সানব্লক নামেও পরিচিত।

এই ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন আমাদের স্কিনের উপর একটি ঢাল হিসেবে থাকে, এটি স্কিনের ভিতরে এবসর্ব হয় না এবং UV Rays কে প্রতিফলিত করে ফেরত পাঠায়।

টাইটানিয়াম ডাই অক্সাইড এবং জিংক-অক্সাইড এগুলো মূলত ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন এর ইনগ্রেডিয়েন্টস।

কেমিক্যাল সানস্ক্রিন  নাকি ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন কোনটা ত্বক-এর জন্য বেশি ভালো? 

দুটোই ভালো, দুটোই ভালো প্রটেকশন দেয়। কোনটারই কোন সাইড ইফেক্ট নেই।

আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন সেটা নির্ভর করে আপনার কনসার্ন এর উপর।

এসপিএফ কী? 

এসপিএফ মানে হল সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর, অর্থাৎ আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষা কতক্ষণ দিতে পারবে তা নির্ভর করছে একটি সানস্ক্রিনে কত পরিমাণ এসপিএফ আছে। 

আপনার সানস্ক্রিনে এসপিএফ সবসময় ৩০ বা তার উপরে আছে কি না এটা খেয়াল করতে হবে।

যে সানস্ক্রিনে যত বেশি এসপিএফ আছে সেটা আপনার ত্বককে তত ভালোভাবে সুরক্ষা দেবে।

তাই সানস্ক্রিন  কেনার আগে এসপিএফ ফ্যাক্টরের দিকে নজর রাখা খুবই জরুরি।

পি এ প্লাস কী? 

এ প্লাস বলতে বোঝায় প্রোটেকশন গ্রেড অফ ইউভি এ, অর্থাৎ পি এ হলো সানস্ক্রিনের সেই ফ্যাক্টর যা নির্দেশ করে সানস্ক্রিনটি সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি বি রশ্মির পাশাপাশি ইউভি এ রশ্মি থেকে কতোটা সুরক্ষা দিতে পারবে।

যতো বেশি পি এ প্লাস, তত বেশি ইউভি এ থেকে সুরক্ষা। সানস্ক্রিনে এসপিএফ বেশি যতো বেশি থাকে পি এ প্লাসও তত বেশি থাকে।

সানস্ক্রিন কতক্ষণ পর পর রিএপ্লাই করা উচিত? 

দুই বা তিন ঘন্টা পর পর৷ 

কতটুকু সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজনীয়?  

দুই আঙ্গুল সমপরিমাণ। 

ঘরে থাকলে সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন আছে কি?  

জি অবশ্যই। বাসায় থাকলে এসপিএফ ১৫ থেকে ৩০ এর নিচের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

কারণ বাসায় থাকলেও কোনো না কোনো ভাবে রোদ আপনাকে স্পর্শ করছেই৷ 

রান্নার সময় কি সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে? 

জি রান্নার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

রোদ না উঠলে বা মেঘলা দিনেও কি সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে? 

ঘরের বাহিরে গেলে সূর্যের আলো যদি আপনার শরীরে এসে পড়ে তাহলে অবশ্যই আপনাকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে সেটা যতই মেঘলা দিন হোক না কেন!

সানস্ক্রিন কিভাবে রিএপ্লাই করবেন? 

টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে বা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে সানস্ক্রিন রিএপ্লাই করতে পারেন৷

মেয়েদের সানস্ক্রিন কি ছেলেরাও ব্যবহার করতে পারবে?  

জি পারবে৷

বাহিরে বের  হওয়ার কতক্ষণ আগে সানস্ক্রিন  ব্যবহার করা উচিত? 

বিশ থেকে তিরিশ মিনিট আগে।

একটি সানস্ক্রিন সর্বোচ্চ কত সময় পর্যন্ত  প্রটেকশন দিবে? 

দুই ঘন্টা। তাই প্রতিবার দুই ঘন্টা পর পর  সানস্ক্রিন রিএপ্লাই করতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার কি সানস্ক্রিন-এর আগে ব্যবহার হয় নাকি পরে? 

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরে সানস্ক্রিন  ব্যবহার করতে হবে।

কত বছর বয়স থেকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে?

ছয় বছর বয়স থেকে। 

সানস্ক্রিন কিভাবে তুলবেন বা সানস্ক্রিন তোলার সঠিক উপায় কি? 

ডাবল ক্লিনজিং-এর মাধ্যমে।

মেকআপ করার আগে কখন সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে? 

প্রাইমার ব্যবহার করার আগে সানস্ক্রিন  ব্যবহার করতে হবে। 

বডিতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে? 

আমাদের ত্বক-এর মতোই বডিরও সূর্য থেকে প্রটেকশন দরকার।

তাই সানবার্ন থেকে বাঁচতে চাইলে শরীরের অনাবৃত জায়গাগুলোতে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। 

শীতকালেও কি সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে? 

জি শীতকালেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

গরমের দিনের মতো শীতের দিনেও কিন্তু সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের একইরকমভাবে ক্ষতি করে।

সানস্ক্রিন-এর কি কোন মেয়াদ থাকে? 

জি থাকে। কোনো কোনো সানস্ক্রিন খোলার ৬ মাস বা ১২ মাস তা ব্যবহার উপযোগী থাকে।

এছাড়াও সানস্ক্রিনে জিঙ্ক অক্সাইড ব্যবহার করা হয় যা একটা নির্দিষ্ট সময় পরে এর কার্যকারিতা হারায়।

তাই, অন্যান্য প্রোডাক্টের মতোই সানস্ক্রিনও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। তাই, প্রোডাক্টের লেবেলে থাকা তারিখ দেখে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

মাস্ক, ছাতা, নিকাব পড়লে কি সানস্ক্রিন-এর প্রয়োজনীয়তা আছে?

জি আছে। আপনি যত যা-ই ব্যবহার করুন না কেন সানস্ক্রিন আপনি কোনোভাবেই বাদ দিতে পারবেন না। 

ফাংগাল একনে থাকলে কি সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে? 

জি৷ তবে ফাংগাল একনে সেইফ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। 

সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পর তেলতেল অনুভূত হলে কি করবেন?  

এসপিএফ যুক্ত পাউডার বা নরমাল সেটিং পাউডার দিয়ে সেট করে নিতে পারেন৷ 

সানস্ক্রিন চোখের চারপাশে ব্যবহার করা যাবে? 

আপনার পছন্দের সানস্ক্রিনটি চোখের চারপাশে লাগিয়ে দেখুন।

যদি কোন ধরনের ইরিটেশন বা জ্বালাপোড়া না হয়  তাহলে ব্যবহার করতে পারেন। 

ত্বকের সানস্ক্রিন কি ঠোঁটে ব্যবহার করা যাবে? 

না৷ ত্বকের সানস্ক্রিন কোনভাবেই ঠোঁটে ব্যবহার করা যাবে না। ঠোঁটে এসপিএফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করতে হবে। 

মেকআপ বা ক্রিমে থাকা এসপিএফ কি সূর্য থেকে পর্যাপ্ত প্রটেকশন দেয়? 

না। মেকআপ বা ক্রিমে থাকা এসপিএফ দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা দিতে পারবে না।

দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার জন্য অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। 

সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরেও কেন কালো হয়ে যাচ্ছেন? 

এর দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমটি হলো, সানস্ক্রিন বারবার রিএপ্লাই না করার কারণে আপনি সঠিকভাবে সূর্য থেকে পর্যাপ্ত প্রোটেকশন পাচ্ছেন না।

তাই কালো হয়ে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় কারণ হলো আপনার ব্যবহার করা সানস্ক্রিন হয়তো আপনাকে পর্যাপ্ত প্রোটেকশন দিচ্ছে না।

এমতাবস্থায় সানস্ক্রিন পরিবর্তন করতে হবে। 

ত্বকে সানস্ক্রিন থাকলে ওযু হবে?

হ্যাঁ হবে। অনেকেই আছেন যারা ওয়াটার রেসিস্টেন্ট সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন এবং ওযু হবে কিনা এই চিন্তায় থাকেন।

তবে এখানে চিন্তার কিছু নেই। এক্ষেত্রে একটি পরীক্ষা করতে পারেন।

একটি টিস্যু নিন। টিস্যুতে বেশ খানিকটা সানস্ক্রিন  নিয়ে এর উপরে ফোঁটা ফোঁটা পানি দিন।

দেখবেন টিস্যুর ওপর পাশ ভিজে গিয়েছে। অর্থাৎ ওয়াটার রেসিস্টেন্ট হলেও  এসব সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে পানি লাগবে না এমনটা নয়। তাই সমস্যা নেই৷ ওযু হবে।