Search
Close this search box.

শরীরচর্চায় অ্যালোভেরার ৪০টি গুনাগুন

অ্যালোভেরা আমাদের ঠিক কোন কোন কাজে লাগে এই নিয়ে অনেক আর্টিকেলই আপনারা পড়েছেন।

চুল থেকে ত্বক, এমন কোনও সমস্যা নেই যেক্ষেত্রে অ্যালোভেরা আপনার উপকারে আসে না।

বাইরে থেকে ব্যবহার করুন বা রস খান, অ্যালোভেরা সব কিছুতেই হিট।

তবে আপনারা যদি এমন একটা আর্টিকেল পান, যেখানে অ্যালোভেরা ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে সেটা একসঙ্গে লেখা থাকবে, তাহলে কেমন হয়!

১. ময়েশ্চারাইজ করে

শীতে স্কিনে ময়েশ্চার ধরে রাখতে অ্যালোভেরা জেল অনবদ্য। অন্য কোনও ময়েশ্চারের আর দরকার হবে না।

বাড়িতে অ্যালোভেরা গাছ থাকলে সেখান থেকে রস নিয়ে লাগাতে পারেন। না হলে ভাল ব্র্যান্ডের অ্যালোভেরা জেল কিনে নিন।

যাদের ড্রাই স্কিন তাঁদের গরমকালেও স্কিন ড্রাই হয়ে যায়। তাঁদেরও স্কিনে ময়েশ্চার ধরে রাখতে গরমেও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার কড়া উচিত।

২. স্কিনের নারিশমেন্ট

অ্যালোভেরায় আছে প্রচুর এনজাইম যা আমাদের স্কিনের জন্য খুব উপকারী।

এছাড়াও আছে ভিটামিন এ, বি১২, সি এবং ই। এই সব উপাদানই আমাদের স্কিনের সার্বিক উন্নতির জন্য খুব দরকারি।

তাই অ্যালোভেরা স্কিনে রোজ ব্যবহার করলে স্কিন ভিতর থেকে সুন্দর হয়ে ওঠে।

৩. স্কিন ক্লিনসার

স্কিন ভিতর থেকে পরিষ্কার করতেও কিন্তু অ্যালোভেরার জুড়ি মেলা ভার। অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে রেখে দিন ১৫ মিনিট।

তারপর অল্প অল্প জল হাতে নিয়ে মুখ ম্যাসাজ করুন হাল্কা হাতে। তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

ঘরে কোনও ক্লিনসার তৈরি করলে তাতেও দিয়ে দিন অ্যালোভেরা জেল। এতে ওই ক্লিনসারের উপকারিতা আরও বেড়ে যাবে।

৪. সানবার্ন দূর করে

গরমের দেশে থেকে সানবার্ন হবে না তা কি আর হয়! রোদ আমাদের মুখে যে ট্যান ফেলে তা দূর করা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

কিন্তু অ্যালোভেরা খুব কম সময়ে সহজেই এই ট্যান দূর করে দেয়। বাড়ি ফিরে শুধু ৩০ মিনিট অ্যালোভেরা জেল মুখে মেখে রেখে দিন।

তারপর সাধারণ জলে ধুয়ে নিন। রোজ করে দেখুন, ফল পাবেনই।

৫. ব্রণ দূরে থাকবে

স্কিনের যে সমস্যাগুলো আমাদের সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ফেলে তার মধ্যে অন্যতম হল ব্রণ।

অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান স্কিন ভিতর থেকে পরিষ্কার করে।

অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করে। তাই ব্রণ হওয়া কমে আসে। ব্রণর দাগও আস্তে আস্তে চলে যায়।

৬. স্কিন পোর্স মজবুত করে

অনেকের অতিরিক্ত নানা রকম প্রোডাক্ট ব্যবহার করার জন্য স্কিন পোর্স আলগা হয়ে যায়, বড় হয়ে যায়।

এতে স্কিনের নানা সমস্যা দেখা দেয়। অ্যালোভেরা স্কিন পোর্স ভরাট করে, মজবুত করে। স্কিন পোর্স টাইট রাখে।

৭. বয়সের ছাপ দূরে রাখে

কম বয়সেই একটা তারুণ্যহীন ত্বক কেমন লাগে! জানি ভাল লাগে না।

স্কিনে বলিরেখা, পিগমেনটেশন, স্কিন ঝুলে যাওয়া এসব আমাদের বয়স্কদের মতো দেখায়। অ্যালোভেরা স্কিন টানটান করে।

ফলে বলিরেখা বা স্কিন ঝুলে যাওয়ার সমস্যা হয় না। পিগমেনটেশন কমে আসে। ফলে স্কিন ফিরে পায় তারুণ্য।

৮. স্ট্রেচ মার্ক দূর করে

আমরা যদি মোটা থেকে রোগা হই, তাহলে স্ট্রেচ মার্ক দেখা যায় আমাদের শরীরে।

প্রেগনেন্সির পরেও স্ট্রেচ মার্ক হয়। এই দাগ খুব সহজে যেতে চায় না। অ্যালোভেরা জেল এই দাগের ওপরে লাগান নিয়ম করে রোজ।

এক মাস পর থেকেই তফাৎ বুঝতে পারবেন।

৯. মেকআপ রিমুভাল

মেকআপ তুলতে কোনও কেমিক্যাল রিমুভার ব্যবহার করেন? এতে কিন্তু স্কিনের বেশ ভালই ক্ষতি হয়।

প্রাকৃতিক রিমুভার আছে তো হাতের কাছে- অ্যালোভেরা।

অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মেকআপ রিমুভ করুন।

এতে মেকআপ উঠেও যাবে, আর কোনও ক্ষতিও হবে না স্কিনের।

১০. স্কিন ব্রাইট করে

ব্রাইট স্কিন আমরা সবাই চাই। অ্যালোভেরা যেহেতু স্কিন ভিতর থেকে পরিষ্কার করে, ট্যান দূর করে, তাই আমাদের আসল গায়ের রঙ বেরিয়ে আসে।

আপনি যদি অ্যালোভেরা জেল আর অল্প অলিভ অয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে নেন, তাহলেও খুব সুন্দর জেল্লা পাবেন।

১১. রিফ্রেশ করে স্কিন

অনেক ক্ষণ পর বাইরে থেকে এসে স্কিন ডাল লাগছে? খুব ক্লান্ত লাগছে মনে হয় স্কিন? সঙ্গে সঙ্গে রিফ্রেশিং লাগার জন্য ব্যবহার করুন অ্যালোভেরা জেল।

অল্প অ্যালোভেরা জেল তুলোয় নিয়ে মুখে থুপে থুপে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট রেখে অল্প বরফ দিয়ে মুখ ঘষে নিন।

তারপর ধুয়ে নিন। খুব তাড়াতাড়ি রিফ্রেশ লাগবে।

১২. পা এক্সফোলিয়েট করুন

পায়ের যত্নের জন্যেও ব্যবহার করুন এই অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা জেল আর চিনি নিয়ে একটা সমুদ পেস্ট তৈরি করে নিন।

আপনি চাইলে অ্যালোভেরার সঙ্গে কর্নস্টার্চ নিয়ে নিতে পারেন। এই মিশ্রণ পায়ে লাগিয়ে ব্রাশ দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করুন পা।

তারপর অল্প গরম জল দিয়ে পা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে এক দিন করে করুন। পা পরিষ্কার হবে, মরা চামড়া দূর হয়ে যাবে আর পা নরম থাকবে।

১৩. চুল কন্ডিশন করে

কন্ডিশনার শেষ হয়ে গেছে? কোনও চিন্তা নেই। বাড়িতে অ্যালোভেরা গাছ থাকলে সেখান থেকে রস নিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন।

১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর এটি করতে পারেন। অ্যালোভেরা খুব ভাল চুল কন্ডিশন করতে পারে।

যে কোনও কেমিক্যাল কন্ডিশনারের থেকে কন্ডিশনার হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা অনেক ভাল।

১৪. চুলের বৃদ্ধি ঘটায়

চুল যাদের কম, কোনও কিছু করেই ভাল ফল হচ্ছে না, তাঁরা একবার অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহার করে দেখুন।

এক দিন ছাড়া ছাড়া চুলে আর স্ক্যাল্পে অ্যালোভেরা জেল বা বাড়ির গাছ থেকে পাতা নিয়ে সেই রস লাগিয়ে নিন আর রেখে দিন ২০ মিনিট মতো।

তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন। এক মাস টানা করলে খুব ভাল উপকার পাবেন।

১৫. খুশকি দূর করে

আপনার যদি অল্প খুশকি থাকে তাহলে অ্যালোভেরার সাহায্যে সহজেই আপনি খুশকি দূর করতে পারেন।

শুধু অল্প অ্যালোভেরা নিয়ে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে রেখে দিন ৩০ মিনিট মতো। তারপর শ্যাম্পু করে নিন।

সপ্তাহে তিন দিন করতে পারেন। খুব ভাল ফল পাবেন।

১৬. পি.এইচ লেভেল ঠিক রাখে

স্ক্যাল্পের পি.এইচ লেভেল ঠিক রাখতেও অসাধারণ কাজ দেয় এই অ্যালোভেরা।

স্ক্যাল্পে যাতে ব্যাকটেরিয়াল বা ফাঙ্গাস সমস্যা না হয় তা অ্যালোভেরা দেখে ভাল ভাবে।

পি.এইচ লেভেল ঠিক থাকলে ডগা ভাঙা, চুল রুক্ষ হওয়ার মতো সমস্যা খুব কম হয়। চুলের অনেক সমস্যাই কমে যায়।

১৭. শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

অ্যালোভেরা ত্বক আর চুলের পাশাপাশি আমাদের শরীরের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ভিতর থেকে আমাদের ইমিউনিটি বাড়িয়ে তুলতে অ্যালোভেরা খুব ভাল কাজ দেয়।

রোজ যদি এক গ্লাস অ্যালোভেরার জুস খাওয়া যায় তাহলে খুব ভাল থাকে শরীর। এতে এনার্জিও বাড়ে।

রোজ সকালে এক গ্লাস জলে অ্যালোভেরা রস আর তার সঙ্গে অল্প বিটনুন, গোলমরিচ, আমচুর পাউডার, লেবুর রস দিয়ে জুস বানিয়ে খেতে পারেন।

১৮. ওজন কমাতে সাহায্য করে

অ্যালোভেরা আমাদের শরীরের মেটাবোলিজম ঠিক রাখে। এতে খাবার ভাল করে হজম হয়। অতিরিক্ত মেদ শরীরে জমে না।

তাই ওজন ঠিক থাকে। আর অ্যালোভেরার রস আমাদের খিদেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে মাঝে মাঝে যখন তখন খাওয়ার ইচ্ছেও তৈরি হয় না।

১৯. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে

আজকের দিনে ডায়াবেটিক সমস্যা একটি মহামারীর জায়গায় যেতে চলেছে। প্রত্যেক ঘরে অন্তত একজন এই রোগের শিকার।

আর এই রোগ হলে তো কোপ পড়ে খাওয়ার ওপর। কি খাওয়া উচিত আর কি খাওয়া উচিত নয় সেটাই বোঝা যায় না।

ডাক্তারের দেওয়া ওষুধের পাশে নিয়ম করে অ্যালোভেরার রস খেতে পারেন। অ্যালোভেরা আমাদের শরীরে প্রাকৃতিক ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায় যা সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২০. কোলেস্টেরল কমায়

কোলেস্টেরল আমাদের হার্টের নানা রকম সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। অ্যালোভেরা আমাদের শরীরে ট্রাইগ্লিসারিডের মাত্রা কম করে।

এর ফলে শুধু কোলেস্টেরল কম হয় তা নয়। হার্ট অ্যাটাক, হার্টের ওপর চাপ পড়ার মতো সমস্যাও অনেকটা কমে আসে।

২১. শরীরের তাপ কমায়

অ্যালোভেরা স্বভাবতই খুব ঠাণ্ডা। তাই এটি আমাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। গরমের সময়ে তাই অ্যালোভেরার রস খাওয়া উচিত।

এতে আমাদের পেট ঠাণ্ডা থাকে। হজমের সমস্যাও তাই খুব একটা আর হয় না সেভাবে।

২২. দাঁতের যত্নে

অ্যালোভেরার রস অল্প জলে নিয়ে সেটি দিয়ে রোজ মুখ কুলকুচি করুন। এতে দাঁতের দুর্গন্ধ দূর হবে।

যদি আপনার দাঁত ক্ষয়ের সমস্যা থাকে সেই সমস্যাও অনেকাংশে কমে আসবে। এতে মাড়িও শক্ত হবে।

তাই মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হবে। ব্যাকটেরিয়া দূর হবে মুখ থেকে। আর নিয়মিত পরিষ্কার হওয়ার জন্য দাঁতে পাথর জমবে না।

২৩. মুখের আলসারের সম্ভাবনা কমে

যখন আপনার নিয়মিত তেলতেলে স্পাইসি খাবার খাওয়া হয়ে যায়, বা ধরুন নিয়মিত আপনার পেট পরিষ্কার হচ্ছে না, তখন মুখে আলসার হয়।

মুখে আলসার শুনে খুব একটা ভয় পাবেন না। অনেক সময়ে দেখবেন ঠোঁটে, জিভে, মাড়িতে গোটার মতো হয় যেখানে খুব জ্বালা করে।

খুব ভাল করে খাওয়াও যায় না। জায়গাটা খানিক লাল হয়ে থাকে। একেই আলসার বলছি।

তবে ঘন ঘন এটি হলে আর অনেক দিন থাকলে কিন্তু ডাক্তার দেখানো উচিত। অল্প হলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন।

অ্যালোভেরার রস যেহেতু পেট পরিষ্কার করে ফলে এইসব আর হয় না।

২৪. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

অ্যালোভেরার হড়হড়ে ভাব শক্ত মলকে নরম করে। এটি নিয়ম করে নিলে মলদ্বার পিচ্ছিল থাকে। টিস্যু নরম রাখে।

ফলে মল নির্গমনে সাহায্য হয়। রোজ অ্যালোভেরার জুস খাওয়া তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।  

২৫. ভিটামিনের যোগান ঠিক রাখে

আমাদের শরীর ভাল রাখতে ভিটামিন যে কত দরকার সেটা তো আর নতুন করে বলার কিছু নেই।

এখন কোন ভিটামিন কোন খাবারে পাবেন, কি কি খাবেন এই দেখে খেতে গেলে তো মুশকিল।

কিন্তু বেশির ভাগ ভিটামিন যদি কোনও একটা জিনিসেই পাওয়া যায় তাহলে ভাল হয় না! আর সেই জিনিস হল অ্যালোভেরা।

রোজ যদি অ্যালোভেরা খান তাহলে কিন্তু ভিটামিনের কোনও ঘাটতি হবে না।

২৬. শরীর হাইড্রেটেড রাখুন

আমাদের শরীরের অধিকাংশ অংশ জুড়ে আছে জল। তাই শরীরে জলের ভাগ বজায় রাখা খুব দরকার।

জলের পরিমাণ ঠিক থাকলে বা শরীর হাইড্রেটেড থাকলে স্কিন যেমন ভাল থাকে, তেমনই শরীরের অনেক রোগ কমে যায়।

অ্যালোভেরা জুসকে এনার্জি ড্রিংক হিসেবে নিন। এতে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে।

২৭. পোড়া জায়গায় ব্যবহার করুন

রান্না করতে করতে অনেক সময়ে আমাদের ছেঁকা লাগে। আমাদের সাধারণ প্রবণতা হল সেই জায়গায় সঙ্গে সঙ্গে বরফ দেওয়া।

কিন্তু ডাক্তার এটি সমর্থন করেন না। তাই এমন যদি কিছু দেওয়া যায় যেটা বরফ নয়, কিন্তু ঠাণ্ডা অনুভূতি দেবে।

এমন জিনিস হল অ্যালোভেরা। অল্প একটু অ্যালোভেরার জেল নিয়ে লাগিয়ে নিন। আরাম পাবেন, জ্বালা কমবে।

২৮. পোকা কামড়ালে

বোলতার মতো পোকা কামড়ালে, বলা ভাল হুল ফুটিয়ে দিলে যে জ্বালা হয় সেটা যার হয় সেইই বোঝে।

তখন কিকরে একটু ব্যথা কমবে এই ভেবেই আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। সবার আগে হুল বের করুন। তারপর অ্যালোভেরার রস ওই জায়গায় লাগিয়ে নিন।

এতে বিশ কমবে, ব্যথা কমবে আর ঠাণ্ডা ভাব অনুভব করবেন।

২৯. কখনও অল্প শ্বাসকষ্ট হলে

অনেকের একটু বেশি হাটলে শ্বাসের সমস্যা হয়।

সেই সময়ে যদি গরম জলে অ্যালোভেরা ফুটিয়ে নিয়ে সেই জলে ভাপ নিতে পারেন, তাহলে নিঃশ্বাসের সমস্যা অনেক তাড়াতাড়ি কমে আসবে।

৩০. র‍্যাশ হলে

র‍্যাশ নানা কারণে হতে পারে। আমি এখানে বলছি বাচ্চাদের ডায়পার থেকে যে র‍্যাশ হয় তার কথা। অনেক সময়ে ভিজে ডায়পার পরে থাকলে এই র‍্যাশ হয়।

কেমিক্যাল কিছু ব্যবহার করাও ঠিক নয় বাচ্চাদের জন্য। তাই র‍্যাশ হওয়া জায়গায় অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন।

খুব তাড়াতাড়ি র‍্যাশ চলে যাবে আর খুব বেশি হবেও না।

৩১. ডিটক্স করে শরীর

আমরা আগেই বলেছি যে অ্যালোভেরা মেটাবলিজম ঠিক করে। কিন্তু এর থেকেও বেশি কিছু করে অ্যালোভেরা।

অ্যালোভেরা আমাদের কিডনি আর লিভার ভাল রাখতেও সাহায্য করে। কিডনি আর লভার ভাল থাকলে আমাদের শরীর ডিটক্স হয়।

ভিতর থেকে শরীর পরিষ্কার হয়। রক্ত বিশুদ্ধ হয়।

৩২. ইউটিআই রোধ করে

ইউটিআই অর্থাৎ ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন রোধ করতে অ্যালোভেরা খুব ভাল কাজ দেয়।

বিশেষ করে মহিলাদের জন্য এক্ষেত্রে অ্যালোভেরা খুব কাজ দেয়। ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন থাকলেও অ্যালোভেরা দারুণ কাজ দিতে পারে।

শুধু নিয়ম করে অ্যালোভেরার জুস খেতে হবে রোজ দিনে একবার।

৩৩. ব্লাড সার্কুলেশন ঠিক করে

রক্তের মাধ্যমে আমাদের শরীরের জন্য দরকারি সমস্ত মিনারেল, ভিটামিন শরীরের সমস্ত কোষে পৌঁছে যায়। তাই ঠিক মতো ব্লাড সার্কুলেশন হওয়া খুব দরকার।

অনেক সময় ব্লাড সার্কুলেশনে সমস্যা হয়। কিন্তু অ্যালোভেরার সাহায্যে এই সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।

৩৪. এপিলেপ্সি সমস্যাতেও কাজ দেয়

এপিলেপ্সি রোগের কথা খুব একটা শোনা নেই। মূলত স্নায়ু বা নার্ভজনিত সমস্যা এটি। জেনেটিক কারণেও অনেক সময়ে হয়।

আবার মাথায় কোনও আঘাত পেলে সেখান থেকেও হতে পারে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে অ্যালোভেরা এক্ষেত্রে কাজ দিতে পারে।

যদিও এটি সময়সাপেক্ষ, কিন্তু খুব ভাল ট্রিটমেন্ট হতে পারে অ্যালোভেরার সাহায্যে। একটি কাপড়ের মধ্যে অ্যালোভেরার ওই রস নিয়ে মাথায় দিতে পারেন।

ঘ্রাণ নিতে পারেন। এতে নার্ভ ভাল কাজ করবে।

৩৫. অ্যালোভেরা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল

অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে আমরা মূলত হলুদ আর নিমপাতার কথাই জানতাম। আজ থেকে সেই তালিকায় অ্যালোভেরার নাম যোগ করে নিন।

রোজ এই গরমের সময়ে বা বর্ষাকালে জলে যদি কয়েক টুকরো অ্যালোভেরা দিয়ে স্নান করতে পারেন তাহলে ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা অনেক কম থাকবে।

৩৬. হার্পস রোধ করে

হার্পস এক ধরণের স্কিনের সমস্যা। মূলত মুখের চারদিকে এটি হয়। কিন্তু শরীরের অন্য যে কোনও অংশেই হতে পারে।

র‍্যাশের মতো হয় এটি। সেক্সুয়াল ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে হয় এটি।

অ্যালোভেরার রস যদি যেখানে এই র‍্যাশ হয়েছে সেখানে লাগিয়ে দেওয়া যায় রোজ নিয়ম করে, তাহলে অনেক তাড়াতাড়ি উপশম হয় এই হার্পসের।

৩৭. ফ্রস্টবাইট হওয়া রোধ করে

ফ্রস্টবাইট এক বিশেষ ধরণের স্কিন সমস্যা। অনেক সময়ে স্কিনের একটা অংশ হয়তো ফ্যাকাসে হতে শুরু করলো।

অল্প লাল হয়েও যেতে পারে সেই জায়গা। তারপর আস্তে আস্তে সাদা হয়ে যেতে থাকে আর ওই অংশ থেকে ছাল উঠতে শুরু করে।

এক্ষেত্রে অ্যালোভেরা জেল রোজ ওই অংশে লাগালে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।

৩৮. অ্যালার্জি হলে

অ্যালার্জি হলে সাধারণত চট করে আমরা ডাক্তারের কাছে যাই না। আবার ভাবতেও থাকি কি দেওয়া যায় ওই জায়গায় যাতে খুব বেশি না চুলকায়।

বেশি চুলকালে গরম হয়ে যায় জায়গাটা। অ্যালোভেরা দিয়ে দিন। এতে গরম ভাব কমবে, চুলকানিও কমে যাবে।

৩৯. রসাশিয়া দূর করে

রসাশিয়া আরেক ধরণের ত্বকের সমস্যা। অনেক সময়ে স্কিন লালচে হয়ে যায় আর ছোট ছোট লাল লাল ফুসকুড়ি মতো সারা গায়ে হতে থাকে।

মূলত মধ্যবয়সী একটু ফর্সা গায়ের রঙের মহিলাদের এটি বেশি হয়। এটা অনেকেই ব্রণ বলে ভুল করেন।

এই সমস্যা হলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

৪০. সোরাইসিস হওয়া আটকায়

অন্যতম ভয়ের একটি রোগ স্কিনের জন্য। বড় বড় চাক হয়ে স্কিনে ফোঁড়ার মতো হয়ে যায়। দেখতে খুবই বাজে লাগে।

অনেকটা জায়গা জুড়ে হয়। নিয়ম করে ওই অংশে যদি অ্যালোভেরা দেওয়া যায় তাহলে অনেক দ্রুত এই সমস্যা চলে যাবে।

ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে।

আশা করি অ্যালোভেরার এতো গুণ আপনাদের অ্যালোভেরার প্রতি প্রেম অনেক বাড়িয়ে দেবে।

বাড়িতে একটি অ্যালোভেরা গাছ লাগান আর ভাল করে ব্যবহার করুন।