মোটা দাড়ি বা গোঁফ, ছেলেদের একটা ফ্যাসিনেশনের জায়গা।
যদি গোঁফে তা না দেওয়া গেল, তাহলে আর কিই বা হলো!
দাড়ি না গজানোটা বা কম গজানো ছেলেদের কাছে তাই খুবই খারাপ একটি অভিজ্ঞতা।
এতে নিজের তো খারাপ লাগেই, চারপাশের মানুষের থেকেও অনেক কথা শুনতে হয়।
আত্মবিশ্বাসও কমে যায়। দাড়ি বা গোঁফ হলো ম্যাচুরিটির লক্ষণ।
তাই এটি ঠিক মতো না হলে আপনাকে বাচ্চা বাচ্চা লাগে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়।
তাই মোটা গোঁফ বা দাড়ি না থাকলে আপনার যে কষ্ট, তা দূর করতে আমরা আজ এসে গেছি আপনার পাশে।
আর্টিকেল পড়ুন আর ব্যবহার করেই দেখুন এই চারটি ঘরোয়া প্যাক।
কেন কম হয় দাড়ি বা গোঁফ?
অনেকের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দেয়।
অনেক ক্ষেত্রেই এর জন্য দায়ী থাকে জিন।
যদি আপনার বাড়িতে আপনার বাবা-কাকার কম চুল থাকে, টাকের সমস্যা থাকে, তাহলে কিন্তু আপনার মধ্যে কম বা পাতলা দাড়ি বা গোঁফ গজানোর প্রবণতা আসতে পারে।
আবার এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে হরমোনের সমস্যাও।
দাড়ি- গোঁফ গজানোর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী থাকে এন্ড্রোজেন হরমোন।
এই হরমোন যদি বয়ঃসন্ধির সময়ে কম ক্ষরিত হয়, তাহলে ঠিক সময়ে দাড়ি বা গোঁফ আসতে চায় না।
তৃতীয় যে কারণের দিকে নজর দেন বিশেষজ্ঞরা সেটি হলো স্ট্রেস বা চিন্তা।
চিন্তা কিন্তু অনেক সময়ে আমাদের হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়।
তখন এই সমস্যাটি বেশি করে হয়।
তাই চিন্তা যতটা সম্ভব কম করুন।
সমস্যার চার দাওয়াই
এবার আপনাদের জানাবো ঘরোয়া চারটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে আপনি সহজেই ঘন দাড়ি আর গোঁফ পেতে পারেন।
১. নারকেল তেল আর কারিপাতার প্যাক
এটি একটি অসাধারণ পদ্ধতি যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার দাড়ি আর গোঁফ খুব সুন্দর ভাবে ঘন করে তুলবে।
নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড আপনার মুখের হেয়ার ফলিকল মজবুত করবে, সংখ্যায় বাড়াবে, আর কারিপাতা মুখের পোর্স পরিষ্কার করবে।
যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি দাঁড়ি গজাবে।
উপকরণ
২ চামচ নারকেল তেল, শুকনো কারিপাতা, ৩ চামচ ক্যাস্টর অয়েল।
পদ্ধতি
- প্রথমে শুকনো কারিপাতা গুঁড়ো করে নিন।
- এবার একটি পাত্রে নারকেল তেল, কারিপাতা গুঁড়ো ২ চামচ নিয়ে ভালো করে মেশান।
- এই মিশ্রণে এবার দিন ক্যাস্টর অয়েল আর আবারও খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণটি এবার মুখে ব্যবহার করার পালা। তবে ব্যবহার করার আগে মুখে খানিক স্টিম নিয়ে নিতে হবে।
- এবার গালে এই মিশ্রণ লাগিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন আর ১৫ মিনিট রেখে দিন।
- তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
এটি আপনি যদি নিয়ম করে সপ্তাহে তিন দিন করতে পারেন, তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার মুখে ঘন দাড়ি আর গোঁফ আসতে বাধ্য।
২. লেবু আর দারুচিনির প্যাক
দাঁড়ি ভালো করে গজানোর জন্য কিন্তু মুখ পরিষ্কার থাকা খুব দরকার।
ডেড সেল ভিতর থেকে পরিষ্কার না হলে হেয়ার ফলিকল বাইরে আসবে কী করে?
পাতিলেবু সেই এক্সফোলিয়েশনের কাজটি করে। ভিতর থেকে আপনার ত্বক পরিষ্কার করে লেবু।
আর দারচিনি পাতলা দাড়ি বা গোঁফ থাকলে তা ঘন করবে।
উপকরণ
৪ চামচ লেবুর রস, ২ চামচ দারচিনি গুঁড়ো।
পদ্ধতি
- প্রথমে দারচিনি গুঁড়ো করে নিন।
- একটি পাত্রে লেবুর রস আর দারচিনি গুঁড়ো নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- এই মিশ্রণ মুখে ব্যবহার করুন, অর্থাৎ গালে, আর ২০ মিনিট রেখে দিন।
- তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
সপ্তাহে দু বার এটি অবশ্যই করা উচিৎ।
৩. আমলা তেল আর সর্ষের পাতার প্যাক
চুলের জন্য আমলা যে খুবই ভালো তা তো আপনারা জানেনই।
এবার আমলার এই উপকার আপনার দাঁড়ির জন্যও কাজে লাগান।
আর সর্ষের পাতা হরমোন স্টিমুলেশনের ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয়।
উপকরণ
৩ চামচ আমলা তেল, কয়েকটি পাতা।
পদ্ধতি
- বাজার থেকে সর্ষের পাতা সংগ্রহ করে নিন।
- এই পাতার একটি স্মুথ পেস্ট আগে বানিয়ে নিন।
- একটি পাত্রে আমলার তেল আর এই প্যাক নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন আপনার গালে, ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন আর রেখে দিন ২০ মিনিট মতো।
- তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
এটি সপ্তাহে এক দিন করলেই দু মাসের মধ্যে ফল পাবেন।
৪. পেঁয়াজের রস
শুনে অবাক হচ্ছেন তো? কিন্তু পেঁয়াজ দাড়ি আর গোঁফ ঘন করতে খুবই ভালো কাজ দেয়।
চুল ঠিক মতো সালফারের শক্তি না পেলে বাড়তে পারে না।
পেঁয়াজের রসে আছে প্রচুর সালফার। এটি রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে।
আর ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে দাঁড়ি আর গোঁফ ঘন করতে সাহায্য করে।
উপকরণ
৩ চামচ পেঁয়াজের রস, ২ চামচ অলিভ তেল।
পদ্ধতি
- আগে পেঁয়াজ কুড়িয়ে তার থেকে রস বের করে নিন।
- এবার একটি পাত্রে এই রস আর অলিভ তেল নিয়ে ভালো করে মেশান।
- এই মিশ্রণ গালে লাগিয়ে রেখে দিন ১৫ মিনিট।
- তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
এই পদ্ধতি সপ্তাহে তিন দিন করলে খুব তাড়াতাড়ি ঘন দাড়ি আর গোঁফ পাবেন।
উপরের এই চারটি প্যাকের থেকে যে কোনও একটি ব্যবহার করুন
সঙ্গে ভালো করে ঘুমোন, ভালো করে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।
এতেই আপনার দাড়ি আর গোঁফ সুন্দর ভাবে বেড়ে আপনার মধ্যে আনবে কাঙ্ক্ষিত সৌন্দর্য।