পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাক হেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে যায়।
আর ব্ল্যাকহেডস এমন জেদি জিনিস যে সহজে যেতেই চায় না।
আজকের আর্টিকেল তাই এই ব্ল্যাকহেডস থেকে রেহাই পাওয়ার সহজ টিপস নিয়ে।
কেন হয় ব্ল্যাকহেডস?
আমাদের শরীরের যে ন্যাচারাল তেল বা সিবাম সেটি আমাদের মুখের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
কিন্তু যখনই এই সিবাম বেশি নিঃসৃত হয় তখনই সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত সিবাম মুখের ডেড স্কিনের সঙ্গে মিশে পোরস বন্ধ করে দেয়।
ওই জায়গায় তখন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বেশি হয়। এর ফলে কিছু দূষিত পদার্থ জমা হয় স্কিনে।
যখন ওই দূষিত পদার্থ স্কিন থেকে বেরিয়ে আসতে চায়, তখনই আমাদের ব্ল্যাকহেডস দেখা দেয়।
কী করলে ব্ল্যাকহেডস কম হবে?
১. দিনে দু’বার মুখ ধোয়া
রোজ দিনে দু’বার মুখ ধোয়া খুব দরকার। বিশেষ করে বাইরে থেকে এসে মুখ ধোয়া তো মাস্ট।
আর মুখ পরিষ্কার করতে হবে মাইল্ড ফেস ওয়াশ দিয়ে।
মুখ পরিষ্কার করার মানেই হল স্কিন থেকে জমে থাকা ময়লা, তেল সব বের করে দেওয়া।
ফলে তেল বা মরা চামড়া কোনওটাই জমে আর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হবে না।
থুঁতনিতে মানে যেখানে বেশি ব্ল্যাকহেডস হচ্ছে সেই জায়গা ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।
২. পোর্স স্ট্রিপ ব্যবহার করতে পারেন
পোর্স স্ট্রিপ হল ওই ব্যান্ড-এইডের মতো। যেখানে ব্ল্যাকহেডস আছে সেই জায়গার ওপর এই পোর্স স্ট্রিপ দিয়ে খানিক পর তুলে নিলে ব্ল্যাকহেডস উঠে আসে।
শুনেই নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে যে বেশ ব্যথা লাগবে। হ্যাঁ, তা লাগে, সঙ্গে জায়গাটা লাল হয়েও যেতে পারে।
তাই আমরা বলব, নতুন ব্ল্যাকহেডস বা সবেমাত্র হয়েছে এমন ব্ল্যাকহেডস তোলার জন্যই পোর্স স্ট্রিপ ব্যবহার করুন।
যেহেতু এই ধরণের ব্ল্যাকহেডস খুব গভীরে নেই স্কিনের, তাই সহজে বেরিয়ে আসে। ব্যথা লাগে না।
কিন্তু অনেক দিনের পুরনো ব্ল্যাকহেডস তোলার জন্য এই পদ্ধতি ভালো না।
৩. এক্সফোলিয়েশন
রোজ দিনে দু’বার করে মুখ ধুয়েও যদি মনে হয় যে মুখের তেলতেলে ভাব কমছে না, তাহলে এক্সফোলিয়েট করা মাস্ট।
ভালো এক্সফোলিয়েশন সিরাম দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে ভিতর থেকে ময়লা উঠে আসে।
আর দিনের পর দিন এই কাজ করলে ব্ল্যাকহেডস নরম হয়ে সহজেই উঠে আসবে।
আর স্কিন যেহেতু পরিষ্কার হচ্ছে তাই নতুন করে ব্ল্যাকহেডস হওয়ার সম্ভাবনাও কমছে।
প্রত্যেক সপ্তাহে একদিন সময় নিয়ে মুখ এক্সফোলিয়েট করুন। বিশেষ করে যে জায়গায় ব্ল্যাকহেডস হয়েছে সেখানে।
৪. ক্লে বা চারকোল মাস্ক
চারকোল মাস্ক ব্ল্যাকহেডস দূর করার জন্য বিখ্যাত। ভিতর থেকে ময়লা, জমা তেল এইসব সহজেই দূর করতে জুড়ি মেলা ভার এই চারকোল মাস্কের।
ক্লে মাস্কও খুব ভালো কাজ দেয় ব্ল্যাকহেডস দূর করতে। চারকোল আসলে আপনার স্কিনকে ডিটক্স করে।
যে কোনও ভালো চারকোল মাস্ক কিনুন। আপনি চারকোল পিল-অফ মাস্কও কিনতে পারেন।
মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে এক দিন করুন।
এক মাসের মধ্যেই দেখেবেন ব্ল্যাকহেডস বেশ উঠে আসছে।
৫. ক্রিম জাতীয় মেকআপ নয়
যাঁদের ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা খুব বেশি তাঁরা কখনই খুব ভারী মেকআপ করবেন না।
ভারী মেকআপ মানেই স্তরে স্তরে মেকআপ করা। আর এর জন্য আপনাকে বেশ কিছু সলিউশন ব্যবহার করতে হবে।
এগুলি কিন্তু ওই ব্ল্যাকহেডসের জন্য ভালো নয়। আর তাছাড়া মেকআপ যদি ভালো করে তোলা না হয় তাহলে তো ব্ল্যাকহেডস কমার জায়গায় বেড়ে যাবে।
তাই হাল্কা মেকআপ করুন আর চেষ্টা করুন ফাউন্ডেশনের ওপরেই মোটামুটি মেকআপ রাখতে।
কনসিলার বা ওই জাতীয় অনেক কিছু ব্যবহার করবেন না। আর মেকআপ ভালো করে তুলবেন।
না হলে পোর্স বন্ধ হয়ে গিয়ে সমস্যা বেড়ে যাবে।
৬. সি সল্ট আর লেবুর রস
সি সল্ট বা সৈন্ধব লবণের খড়খড়ে গুণের জন্য ব্ল্যাকহেডস উঠে আসে তাড়াতাড়ি। এর সঙ্গে যদি লেবুর রস দেন, তাহলে তা স্কিন আরও পরিষ্কার করবে।
উপকরণ
২ চামচ সি সল্ট, খানিক লেবুর রস।
পদ্ধতি
সি সল্ট আর লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন। দেখবেন যেন মিশ্রণটার মধ্যে খড়খড়ে ভাবটা থাকে।
একদম স্মুদ পেস্ট হলে হবে না। এবার থুঁতনিতে যেখানে ব্ল্যাকহেডস আছে সেখানে আস্তে আস্তে ঘষুন।
হাল্কা হাতে ঘষবেন। তারপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে জল দিয়ে ধুয়ে নেবেন। এক দিন ছাড়া ছাড়া এটি করতে পারেন।
এই কিছু সাধারণ জিনিস আপনাকে ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি দিতে পারে।
তবে ব্ল্যাকহেডস হওয়ার আগে থেকেই এই কাজগুলি করলে ব্ল্যাকহেডস আর হবে না। সেটা তো আরও ভালো, তাই না!