Search
Close this search box.

বিষন্নতা দূর করার উপায়

স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সবচেয়ে যে বিষয় টি জরুরি তা হলো মন ভালো রাখা।

ডায়েট বা ব্যায়াম স্বাস্থ্য ভালো রাখে কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আপনার নিজেকে নিয়ে সুখী থাকা।

আপনি সুখী থাকলেই আপনার কাজ ও অন্যান্য সব কিছুই ভালো কাটবে।

আর মন খারাপ থাকলে ধিরে ধিরে আপনাকে বিষন্নতা ঘিরে ধরবে।

বিষণ্ণতার কারণে হতে পারে নানা সমস্যা

বিষণ্ণতা বা মন খারাপের নানা কারণ থাকতে পারে।

কিন্তু সেগুলো জরিয়ে বসে না থেকে মন কে ভালো করে তুলতে হবে নানা কাজের মাধ্যমে।

কারণ মন ভালো না থাকলে তা দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটে।

শুধু তা নয়,  তার সাথে সাথে শরীরের উপর ও বেশ প্রভাব পরে। মন খারাপের বিষয় গুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক সময় খুব বিষণ্ণতায় ডুবে গেলে বরং নিজের মানসিক ও শারিরীক দুটোর জন্যেই খুব বেশি খারাপ প্রভাব পরে। 

তাই অবশ্যই মন ভালো থাকা খুব বেশি জরুরি।

বিষণ্ণতার কিছু লক্ষণ

কিছু সাইকায়েট্রিস্ট বিষণ্ণতার লক্ষণ সম্পর্কে জানিয়েছেন এবং তা হলো।

  • নিজেকে কারণে অকারণে দোষী ভাবা
  • কাজে মনোযোগ দিতে না পারা
  • নিজেকে খুব অসহায় মনে করা
  • মাঝে মাঝে বিভিন্ন কাজ ভুলে যেতে থাকা
  • কারণে অকারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা ও বিরক্ত বোধ লাগা।
  • সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হওয়া
  • খুব অল্পতেই হতাশা ও আশাহীন হয়ে যাওয়া
  • ঘুমের সমস্যা বা ইনসমনিয়ার শিকার হওয়া
  • কাজের প্রতি অনাগ্রহ, হোক সেটা তার পছন্দের কিংবা অপছন্দের
  • সারাক্ষণ মন খারাপ হয়ে থাকা ও খারাপ লাগে এমন জিনিস বার বার ভাবা
  • সুইসাইডিয়াল এটেম্পট বা আত্বহননের চেষ্টা করা

এসব লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন ও দ্রুত এর চিকিৎসা নিতে হবে। 

বিষণ্ণতা দূর করে মন ভালো করার উপায়

আমাদের মনকে সব সময় ভালো রাখার চেষ্টা করলে বিষন্নতা আমাদের ঘিরে ধরবে না।

তাই নানা কারণে মন খারাপ হলেই বিভিন্নভাবে নিজেদের ভালো ও সুখী রাখার চেষ্টা করবো।

আর তার জন্য যা যা করতে পারি তা হলো,

মেকআপ করুন

সাজতে কার না ভালো লাগে? মন খারাপ হলেই সাজুন।

নিজেকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিন। 

লিপ্সটিক, মেইক-আপ এসব দিয়ে নিজেকে রাঙিয়ে নিন।

চাইলে নতুন জামা করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরুন।

দেখুন আপনাকে কেমন লাগছে। 

নিজেকে সুন্দর ভাবে সাজালে মন ফ্রেশ হয় ও যেকোনো বিষণ্ণতা কেটে যায়। 

শরীরচর্চা

নিয়মিত শরীরচর্চা করলে মন ও শরীর ভালো থাকে।

শরীরচর্চার ফলে এন্ডরফিন নামক হরমোন নির্গত হয় যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

অনেকের মধ্যেই একটা কনফিডেন্ট তৈরি হতে থাকে নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে।

এটি মানসিক উদ্বেগ কমাতে ও অবসাদ কমাতে খুবই কার্যকর। 

গান শুনুন

হঠাৎ কোনো কারণে মন খারাপ হলে নিজের পছন্দের প্লে-লিস্ট থেকে গান প্লে করুন। 

এমন ভালো ভালো গান শুনলে মন খুব তরতাজা অনুভব করে।

গানের সাথে তাল মিলিয়ে সুর মিলিয়ে গাইতে থাকলে মন ভালো হবে নিশ্চিত।  

গান শুনতে শুনতে মনে পরে যেতে পারে অনেক সুখের স্মৃতি বা কোনো ভালো মুহুর্ত।

আসতে আসতে খুব হালকা লাগবে ও মন ভালো হয়ে যাবে। 

রান্না করুন

রান্না কর‍তে অনেকে ভালোবাসে।

কিন্তু সেই রান্নার প্রশংসা শুনলে আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। 

মন ভালো না থাকলে নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে যান রান্নার কাজে।

রান্না করে পছন্দের সব ডিশ তৈরি করে ফেলুন। দেখবেন খুব ভালো লাগছে।

পুরোনো ছবির এলবাম

সবার বাসায়ই নিজেদের পরিবারের এক আলাদা করে এলবাম থাকে।

নিজেদের বিশেষ দিন বা বিশেষ মুহুর্তের তোলা ছবি গুলো দেখুন।

এক একটি ছবির সাথে এক একটি কাহিনী রয়ে যায়।

সেইগুলো মনে করতে করতে মন ভালো হয়ে যাবে।  

হাসি

যারা বিষণ্ণতায় ভোগে তাদের মুখে হাসি কম থাকে।

মুখে একটু হাসি পারে সব দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দিতে।

গবেষকরা বলছেন, শুধু মন নয়, শরীরকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে প্রাণ খুলে হাসি।

এটি আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও গড়ে তোলে। তাই ফুলে একটু হাসি অবশ্যই রাখবেন।

খেলা করুন

ফেইসবুক বা অন্যকোনো ডিভাইসে নয়, বরং পরিবারের সদস্যদের সাথে বা বন্ধুবান্ধব দের সাথে খেলা করুন। 

সবাইকে আপনার বাসায় দাওয়াত করুন আর সনাই মিলে যে গেইম টি খেলা যায় সেসব খেলুন।

উল্লেখযোগ্য কিছু খেলা হচ্ছে লুডো, ক্রিকেট, ক্যারাম, টেবিল টেনিস ইত্যাদি। 

পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে খেলতে খেলতে দেখবেন মন ভালো হয়ে গিয়েছে। 

ঘুরতে বের হোন

মন ভালো করতে তেমন কিছু করার না থাকলে, ঘুরতে বের হয়ে যান।

পার্ক, নদীর তীর আশেপাশে যেসব জায়গা আপনার পছন্দের সেইখানে ঘুরতে বেরিয়ে যান।

প্রকৃতির তাজা বাতাস পেয়ে আপনার মন ভালো হতে বাধ্য। 

খুব সতেজ ও ফুরফুরে লাগবে নিজের কাছেই। 

সাহায্য করুন

অন্যকে সাহায্য করলে নিজের মন থেকেই এক তৃপ্তি পাওয়া যায়।

মনের মধ্যে প্রশান্তি আসে। 

মায়ের ঘরের কাজে সাহায্য করুন।

কী প্রয়োজন, কী না প্রয়োজন তা এগিয়ে দিন। 

বাইরে অনাথ দুস্থদের পাশে দাড়ান। তাদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। 

এতে করে আপনার নিজের কাছে খুব ভালো লাগা কাজ করবে। 

কথা বলুন

নিজের ভিতর সব কষ্ট জমতে না দিয়ে নিজের পরিবার ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। 

একান্তই বলতে না চাইলে, তাদের কল করে কথা বলুন। যোগাযোগ করুন।

মন খুলে কথা বলুন দেখবেন খুব ভালো লাগবে।

মন ভালো রাখতে কিছু খাবার খান

প্রতিদিনের এই ব্যস্ত জীবনে সুন্দর একটু মুহুর্ত উপভোগ না করতে পারলে স্বভাবতই ক্লান্ত ও মেজাজ খিটখিট হয়ে থাকে। 

মন ভালো করার উপরন্তু ট্রিকস ছাড়াও আপনার জন্য রয়েছে এমন কিছু খাবার যা মন ভালো করতে সর্বদাই প্রস্তুত। 

চকলেট 

কী? খুব ভালো লাগছে চকলেট এর কথা শুনে? হ্যাঁ, ভালো লাগারই কথা।

চকলেট কে না পছন্দ করে? মন ভালো করতে এর জুড়ি নেই।

কারণ চকলেট খেলে এন্ডোমরফিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা মনকে ভালো করে তোলে।

তবে মিল্ক চকলেট না, মন ভালো করতে চাইলে খেতে হবে ডার্ক চকলেট। 

ডার্ক চকলেট এর সাথে যদি থাকে ড্রাই ফ্রুটস তবে তো কোনো কথাই নেই। 

ডিম

ডিমে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন যা আমাদের মন ভালো করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও ডিম খেলে ওজন কমে। আমাদের শরীরে এনার্জি ও সঞ্চালন করে।

ডিম পুষ্টিতে ভরপুর। ক্লান্তি কাটাতে অবশ্যই ডিম খেতে হবে।

আর মন ভালো রাখতে হলে অবশ্যই।

কারণ ডিম এনার্জির পাশাপাশি আমাদের উদ্বেগও কমায়।

মুরগী

মুরগী কে না পছন্দ করে? মুরগীর যেকোনো আইটেম ই সবার কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও সুস্বাদু। 

মুরগীতে  আছে এমন কিছু উপাদান যা মন কে ভালো করে খুব সহজেই। 

তাছাড়াও এতে আছে প্রোটিন ও অন্যান্য গুণাবলি যা রেগুলার খেলে আমাদের শরীর ও মন দুটোর জন্যেই উপকারী। 

মধু

মধুর কথা শুনে অবাক লাগছে?

হ্যাঁ, মধু হাজার ও গুণাবলীর অধিকারী।

মধু উদ্বেগ ও মনখারাপ নিমেষের মধ্যে সারিয়ে দিয়ে মন কে করে তোলে ফ্রেশ ও সতেজ।

মন ভালো রাখতে মধুর থেকে ভালো আর কিছু হয় না। 

তাছাড়াও মধু হজমেও সাহায্য করে। এসব ছাড়াও মধুর অনেক গুণাগুণ রয়েছে।

তাই বিভিন্ন খাবারের সাথে মধু এড করে খাওয়া শুরু করুন।

এতে উপকার পাবেন।