ব্রেকফাস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ব্রেকফাস্ট এড়িয়ে যান।
ব্রেকফাস্ট দিনের পর পর এড়িয়ে গেলে দেখা দিতে পারে নানান সমস্যা।
গ্যাস্ট্রিক তাদের মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা।
রাতের খাবারের পর অনেক বড় একটি গ্যাপ পড়ে যায়।
তাই সকালের ব্রেকফাস্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাছাড়া যারা ডায়েটে আছেন তাদেরও দিতে হবে এক্সট্রা নজর।
হেলদি ব্রেকফাস্ট আপনার দিন শুরু করার একটি ভালো অভ্যাস হতে পারে।
কারণ আবার লাঞ্চের জন্য অনেক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
ডায়েটে থাকাকালীন খেয়াল রাখতে হবে খুব বেশি ক্যালরি যাতে ইন্টেক না হয়।
আবার অল্প একটু খেলেও ক্ষুদা লেগে যায় লাঞ্চের আগেই।
তাই এমন কিছু উপাদান দিয়ে আপনি আপনার ব্রেকফাস্ট সাজাবেন যা ডায়েটের জন্য ভালো আর পেটও খুশি।
আসুন পাঁচটি হেলদি ব্রেকফাস্ট রেসিপি জেনে নেয়া যাক।
১) দইচিড়া রেসিপি
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- চিড়া
- টকদই
- আমন্ড
- ডালিম
- কিসমিস
- অ্যাপল
প্রস্তুত প্রণালী
- একটি বাটিতে এককাপ চিড়া নিয়ে নিন। অবশ্যই আগে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
- এর মধ্যে ৬/৭ টেবিলচামচ টকদই অ্যাড করুন।
- ভালোভাবে এইগুলো মিক্স করুন। এবার এতে একটি সবুজ অ্যাপল কুঁচি কুঁচি করে কেটে দিন।
- এর মধ্যে অ্যাড করুন একে একে কয়েকটি আমন্ড, কিসমিস ও ডালিম।
- সব গুলো উপাদান ভালোভাবে মিক্স করেই রেডি হয়ে গেলো স্বাস্থ্যকর দইচিড়া।
এই রেসিপি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। টকদই ওজন কমাতে সাহায্য করে।
টকদইতে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
তাছাড়া চিড়া শরীর ঠান্ডা রেখে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। আমন্ড ও কিসমিস এনার্জি দিবে।
এই ব্রেকফাস্ট আমাদের অনেক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
২) ওটস
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- ওটস
- দুধ
- প্রোটিন পাওডার (অপশনাল)
- কলা
- খেজুর
প্রস্তুত প্রণালী
- একটি বাটিতে ওটস নিয়ে নিন।
- তাতে ২৫০ মি.লি. দুধ অ্যাড করুন। এবার একটু ভিজতে দিন।
- কিছুক্ষণ ভিজানো হয়ে গেলে অ্যাড করুন কুঁচি করে কাটা কলা, খেজুর ও এক টেবিলচামচ প্রোটিন পাওডার।
প্রোটিন পাওডার সম্পূর্ণ অপশনাল। আপনি চাইলে বাদ ও দিতে পারেন এটা।
- ভালোভাবে সবগুলো উপাদান একসাথে মিক্স করে করুন।
ওটসে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণাবলী। এই পুষ্টিগুলি শরীরে ভারসাম্য বজায় রাখে।
ওটস ওজন নিয়ন্ত্রণ করে ও ওজন বাড়তে দেয় না। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ।
যা শরীরকে শক্তিশালী রাখে ও অনেক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি রাখে।
প্রতিদিন একগ্লাস দুধ পান করলে আজেবাজে খাবারের চাহিদা কমে যায়।
যার ফলে ওজনও কমে যায়। কলা ও খেজুর খুবই উপকারী আমাদের শরীরের জন্য।
তাছাড়াও আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৩) সটেড ভেজিটেবল
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- গাজর
- বাঁধাকপি
- ব্রকলি
- ফুলকপি
- বরবটি টুকরো
- গোলমরিচ গুঁড়ো
- মাখন
- অলিভ অয়েল
প্রস্তুত প্রণালী
- সবগুলো সবজি ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন।
- সবগুলো সবজি একটি কড়াইতে পানি দিয়ে তাতে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
- সিদ্ধ হয়ে গেলে পানি ঝড়িয়ে নিন।
- অন্য একটি প্যান নিন। এইখানে এক টেবিলচামচ অলিভ অয়েল অ্যাড করে করে নিন।
এতে অল্প একটু বাটার দিয়ে নাড়তে থাকুন।
এর মধ্যে এক টেবিলচামচ গোলমরিচ গুঁড়া অ্যাড করে ভালোভাবে নাড়তে থাকুন।
- কিছুক্ষণ পর সিদ্ধ সবজিগুলো দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিতে হবে।
এর মধ্যে স্বাদমতো লবণ অ্যাড করে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে নামিয়ে নিতে হবে।
প্রতিদিন এক বাটি করে এই সটেড ভেজিটেবল খেলে ওজন কমার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
সবুজ সবজি ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে ভালো উপাদান।
৪) স্যামন মাছ
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- স্যামন মাছ
- অলিভ অয়েল
- বাটার
- গোলমরিচের গুঁড়া
প্রস্তুত প্রণালী
- মাছ ভালোভাবে কেটে ধুয়ে নিন।
- মাছের মাঝ বরাবর হালকা করে কেটে নিন।
- একটি প্যানে অলিভ অয়েল নিন। এটা একটু গরম হতে দিন।
- এর মধ্যে অল্প বাটার অ্যাড করে গলিয়ে নিন। তারমধ্যে দিয়ে দিন গোলমরিচ গুঁড়া।
- ভালোভাবে নেড়ে চেয়ে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে আস্ত মাছ ছেড়ে দিন। এপিঠ ওপিঠ ভালোভাবে ভেঝে নিন। ওপরে অল্প একটি গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে সার্ভ করে নিন।
মাছ খুবই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার।
চর্বিযুক্ত মাছ যেমন- স্যামন, ট্রাউট, ম্যাকারেল, তেলাপিয়া ইত্যাদি মাছ খেতে পারেন।
এগুলোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও প্রোটিন।
বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছগুলো বেছে নিয়ে খেলে ওজন কমার পাশাপাশি তারা সুস্থ থাকে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৫) ডিম ও পিনাট বাটার
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- দুইটি ডিম
- ব্রাউন ব্রেড
- পিনাট বাটার
- অলিভ অয়েল
প্রস্তুত প্রণালী
- একটি প্যানে অল্প একটু অলিভ অয়েল ব্রাশ করে নিন।
- এতে ডিম ফেটে ঢেলে দিন। একটু গোলমরিচগুঁড়া ছিটিয়ে দিয়ে নামিয়ে নিন।
- পিনাট বাটার ব্রাউন ব্রেডে একটি চামচের সাহায্যে মেখে নিন।
- ভালোভাবে মাখানো হলে ডিম সাইড ডিশ হিসেবে নিয়ে খেয়ে ফেলুন।
বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভালো ফ্যাট।
বাদামে ফ্যাট জাতীয় উপাদান থাকা সত্ত্বেও এটা ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।
আর ডিমের সাদা অংশ ওজন কমাতে সাহায্য করে।
যাদের ওজন বেশি তারা ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে খেতে পারেন।
এসব খাবারের পাশাপাশি জিরার ড্রিংকস খেতে পারেন।
জিরা আমাদের ওজিন কমাতে সাহায্য করে।
হেলদি ব্রেকফাস্টের সাত্যে একটি মজাদার হেলদি ড্রিংক রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।