রাত করে অফিস থেকে ফিরলেন, খুব খিদে পেয়েছে।
আপনি রাতে খেতে বসে স্বাভাবিক ভাবে যা খান তার থেকে অনেক বেশী খাবার খেয়ে ফেললেন।
বা আপনার বাচ্চা সারাদিন পর স্কুল, টিউশন করে বাড়ি ফিরেছে। সারাদিনে ভালো করে টিফিন করা হয়ে ওঠেনি তার।
আপনি তাকে বেশ ভালো করে এক থালা ভাত খাইয়ে দিলেন।
রাতে যদি আপনার বেশী খাবার অভ্যেস থাকে তাহলে সাবধান।
বিভিন্ন রিসার্চ, স্টাডি থেকে জানা গেছে রাতের খাবার আমাদের শরীরে যতটা না বাড়তি মেদকে ডেকে আনে, তার থেকেও বেশী মেদ ডেকে আনে রাতে কী খাচ্ছেন, সেটা।
রাতে খাবার সময় সতর্ক থাকুন।
কী খাচ্ছেন, তাতে কত ক্যালোরি আছে, সেসমস্ত ভালো করে দেখে নিন।
বাড়তি ক্যালোরি যুক্ত খাবার কিন্তু আপনার পক্ষে সবসময়েই ক্ষতিকর।
তা সে রাতই হোক, আর সকাল!
সারাদিন কম খাবার খাওয়ার অভ্যেস
সারাদিন আপনি অফিস করছেন বা বাইরে বাইরে থাকছেন।
কাজের চাপে হয়ত ভালো করে ব্রেকফাস্টও করার সময় পাননি।
লাঞ্চও সেরেছেন নমো নমো করে।
এক পেট খিদে নিয়ে রাতে বাড়ি ফিরলেন ও ফ্রিজ থেকে বের করে যা হাতের কাছে পেলেন, খেয়ে নিলেন।
বাড়ি ফিরে চটজলদি যে খাবারগুলো আমরা খাই, তাতে অধিকাংশ সময়েই প্রচুর ফ্যাট ও ক্যালোরি থাকে, যা আমাদের শরীরে বাড়তি মেদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
রাত করে খাওয়ার অভ্যেস
আপনার যদি খুব রাত করে খাওয়ার অভ্যেস থাকে, তাহলে তা জলদি বদলান।
কারণ রাত করে খেলে যদি তার পর পরই আপনি শুয়ে পড়েন, তাহলে তা আমাদের শরীরের ক্ষতি করে।
বৈজ্ঞানিকরা বলছেন যে রাতে ঘুমোতে যাবার অন্তত দেড় থেকে দু’ঘণ্টা আগে ডিনার সারুন।
কারণ শুয়ে থাকার চেয়ে শরীর সোজা থাকলে, বা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়।
যে যে খাবার রাতে খাবেন না
রাতের খাবারে যাতে অতিরিক্ত ক্যালোরি না থাকে, সেজন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর, ব্যালান্সড একটা ডায়েট চার্ট বানান।
স্যান্ডউইচ, বার্গার, পিৎজা বা পাউরুটি জাতীয় খাবার ত্যাগ করুন।
কারণ রাতে পাউরুটি অনেকসময় ঠিক করে হজম হয় না ও কোলেস্টেরল তৈরি করে।
আপনার যদি রাতে স্যালাড খাবার অভ্যেসও থাকে, তাহলে আজ থেকে সেটাও ছাড়ুন।
কারণ স্যালাডে থাকা লেটুস পাতার মধ্যে তা অনেকসময় গ্যাসের কারণ হয়ে ওঠে।
এছাড়া কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন ও পাস্তা, ভাত ইত্যাদিও কম পরিমাণে খাবার চেষ্টা করুন। রাতে যতদূর সম্ভব কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাওয়াই উচিত।
রাতে কী কী খাবেন
রাতের খাবার এমন বাছুন যাতে তা আপনার সারাদিনের খাবারকে ব্যালেন্স করতে পারে।
কার্বোহাইড্রেট আমাদের ওজন বাড়ায়, তাই রাতের ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম করে বেশী করে সবজি খান।
এছাড়া স্যুপ, মাছ, মাংস—তা যেন অবশ্যই মুরগির মাংস হয়, দই যোগ করুন।
যাই খান, তাতে যেন বেশী ক্যালোরি বা ফ্যাট না থাকে।
আর রাতের খাবার শরীরে বাড়তি মেদ ডেকে আনে বলে কিন্তু রাতের খাবারটাকেই স্কিপ করার কথা ভাববেন না।
কারণ অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে আপনার শরীরে বাড়তি খিদে তৈরি হয়, ফলে পরে আপনি অনেকটা খাবার একসাথে খেয়ে ফেলতে পারেন।
এছাড়া রাতে খাবার না খাওয়া কিন্তু আপনার শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া ডেকে আনতে পারে।
তাছাড়া অনেকক্ষণ খাবার না খেয়ে থাকা কিন্তু বাড়তি মেদের একটা কারণ।
তাই রাতের খাবার সবসময় ঠিক সময়ে, ভেবেচিনতে খান। খাবারের পরিমাণ কমান, স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
তাহলেই কিন্তু আপনি সুস্থ থাকবেন। দেখবেন রাতে দিব্যি খেয়েও কি সুন্দর ছিপছিপে থাকছেন!