আমাদের সমাজে সংখ্যায় বাড়তে থাকা এই ম্যাসিভ ডিভোর্স রেটের কারণ কী?
আমরা চেস্টা করেছি এর কারণগুলো খুঁজে বের করতে।
ধারাবাহিক এই সিরিজের চতুর্থ (শেষ পর্ব) রইলো আজ।
প্রথম পর্ব পড়ার জন্য ক্লিক করুন এখানে
দ্বিতীয় পর্ব পড়ার জন্য ক্লিক করুন এখানে
তৃতীয় পর্ব পড়ার জন্য ক্লিক করুন এখানে
এবং এ যুগের রীতিনীতির বদল
বর্তমান যুগতা তথ্য প্রযুক্তির যুগ।
সেই সাথে শিক্ষারও প্রসার আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি।
শিক্ষার প্রসারের সাথে সাথে মানুষের চিন্তাধারাও অনেক প্রশমিত হচ্ছে।
এর সাইড ইফেক্ট নেগেটিভ এবং পজিটিভ, দুই ক্ষেত্রেই পড়ছে।
দিনশেষে শুধু তুমি-আমি
নেগেটিভ ক্ষেত্রে প্রথম যেটা আসছে, সেটা হল মানসিকতা।
এ যুগে টেকনলজির জন্য, মানুষ সব কিছু খুব ছোট থেকেই বেশ সহজে পেয়ে যাচ্ছে।
এর ফলে, কোন কিছু অর্জনের জন্য যে ধৈর্য্য দরকার, সেটায় ছেলে- এবং মেয়ে দুইজনই পিছিয়ে পড়ছে।
সংসারটা যে খালি বেড অফ রোজেস না, দুইজনেরই কিছু স্যাক্রিফাইজ, কিছু কম্প্রোমাইজ, কিছু এডজাস্ট করে, তবেই সংসারটা টিকিয়ে রাখতে হবে- এদিকটার ব্যাপারে এই জেনারেশনের যুগলরা কোন কাজই তেমন একটা করে না।
আগেকার যুগলদের দিকে তাকালে , দেখতে পাব- অল্প কিছুতেই তারা হাল ছাড়ছে না।
কোন কিছু একটা ওয়ার্ক-আউট না করলে, তারা দুজন সেটা নিয়ে বসছে।
দরকার হলে,নিজেকে একটু আধটু বদল করছে। নিজেদের বিলিয়ে দিয়ে হলেও সংসার টিকিয়ে রাখছে।
অসম্ভব মায়ায় তারা তাদের এই সংসারটাকে রেখেছিল আগলে। তারা তাদের ঘরের ভাঙা রেডিওটাও পর্যন্ত বারবার সারিয়ে সারিয়ে ব্যবহার করতো।
তাও কখনও ফেলে দেয়ার চিন্তা করেননি।
সেখানে জীবন-সঙ্গীদের হাত ছেড়ে দিবে? কোন শিক্ষিত-বংশীয় পুরুষ-কিংবা নারী তা কল্পনাতেও সম্ভব ভাবেননি।
কিন্তু আজকাল, কেইস এক্কেবারে উলটো। এক ঘন্টার পিজ্জা/বার্গার ডেলিভারির মতোই জীবণ-তা ফাস্ট ডেলিভারি বেইজড হয়ে গেছে।
ফাস্ট ফাস্ট ভালোবাসা চাই, জলদি জলদি স্ট্যাব্লিশড হওয়া চাই।
জলদি ঘরের পর্দা, ফ্রিজ, ৬০ইঞ্চি টিভি চাই। সন্তান জন্মদানের পরেই জলদি জলদি আকর্ষণীয় ফিগারে আবার বউকে ফেরত পাওয়া চাই।
এতসব জলদির ভীড়ে, হারিয়ে যাচ্ছে আসল ভালোবাসার দর্শনগুলোই
আর ভালোবাসা যেখানে আর ঠাঁই করতে পারে না, সেখানে খুব বেশিদিন সংসারটা যে টিকবে না, সেটা তো জানা কথা।
এখনকার দম্পতিরা ভুলে গেছে- একটা পুরা জীবণে, চরম পরিণতির অনেক আগেই বাবা-মায়েরা হারিয়ে যায়।
সন্তানেরা বড় হয়ে যে যার জীবণে চলে যায়। বুড়ো বয়সে, ঐ কুঁচকে থাকা চামড়ার হাতটাতে চুমো খেতে ঐ বুড়ো বরটাই থাকে।
শারীরিক আকর্ষণ থাকে নাহ
নিজের ব্যাপারে ভুলে গেলেও, সময় বুঝে ভুলোমনের বুড়ো স্বামীকে কাঁপা কাঁপা হাতে ওষুধ আর পানি এগিয়ে দিতে সেই স্ত্রীটাই কাছে থাকে।
এই জেনারেশনের কাপলরা, জীবনের শেষ দিনগুলোর শুধুমাত্র এই তুমি আর আমি কনসেপ্টটাও যদি বুঝতো, অনুধাবন করতো!
তাহলেও হয়তো, এই ডিভোর্সের সংখ্যা বাড়তো না।
কিন্তু ফাস্ট ফাস্ট ইন্টারনেট আর পার্সেল ডেলিভারি সহজে পেতে পেতে এই জেনারেশন, দূরের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করার অত সময়ই পায় নাহ।
ফলে ডিভোর্স না হয়ে উপায় থাকে না।
অপশনের অভাব নেই
আধুনিক যুগে, স্পেশালি সোশ্যাল মিডিয়া আর মেসেঞ্জারের এই ছড়াছড়ির যুগে, এই সকল টেকলজির সহজ লভ্যতাও ভীষণভাবে কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডিভোর্স রেট বাড়ার।
কারণ এসকল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার জীবণ সঙ্গী খোঁজার অপশন বেশি। আগেকার আমলে একতা প্রেমই বিয়ের আগে টিকে থাকতো ১০-১৫ বছর।
অথচ, এখন ৩-৪ মাসেই ব্রেক আপ।
ব্রেক আপের সাথে সাথেই সিরিয়ালে অপেক্ষাওরত আরেকজনের সাথে বিয়ে।
এমনও কেইস রয়েছে, প্রেমের পরিণতিতে এংগেইজমেন্টও হয়ে গেছে সঙ্গীর সাথে।
কিন্তু তার পরেও ব্ল্যাক আপ প্ল্যান হিসেবে বিপরীত লিঙ্গের একজন “ভাল বন্ধু” অলটারনেট অপশন হিসেবে ঠিকই আছে।
দেশে কারো সাথে না হোক, বিদেশের কারো সাথে ঠিকই হয়ে যাচ্ছে।
স্বামী সময় দিচ্ছে না? স্ত্রী ঝুঁকে পড়ছে এই ইন্টেরনেট পরকীয়ায়
স্বামীর অফিসের সুন্দর কলিগের সাথে স্বামীও বেশ আগের থেকেও চালিয়ে যাচ্ছে নানা অনৈতিক সম্পর্ক।
এসবই হচ্ছে এই ইজিলি এভেইলেবল মানুষজনের জন্য। তার ফলে দেখা দিচ্ছে প্রচুর পরিমাণ ডিভোর্স।
এখানেও পাঠকদের একটা বিষয়ে অবগত করা প্রয়োজন, পরকীয়ার বিষয়টাই যেহেতু এসেছে, আমাদের দেশে কোথাও পরকীয়া শব্দতা শুনলেই ৮০% ক্ষেত্রে অটোমেটীক কেন যেন নারীর উপরেই দায়ভার চলে আসে।
নারীর নিজের পরকীয়ার জন্য দায়ী করা হয় তার শিক্ষার প্রসার আর চাকরিকে।
চাকরিতে গিয়েছে বলেই নাকি নারী সুযোগ পেয়েছে পুরুষের সাথে মিশতে।
এসব চিন্তাধারার লোক ভুলেই যাচ্ছে, পরকীয়া নারীটা করছে কিন্তু একজন পুরুষের সাথেই।
নারী একা একা পরকীয়া করতে পারবে না, যতক্ষণ না পুরুষটা আগ্রহ দেখায়। তাই পরকীয়ার জন্য নারী-পুরুষ উভয়েই সমানভাবে দায়ী।
এখন যদি পালটা যুক্তি দেয় কেউ, নারী অফিসে গেছে বলেই তো সেই পুরুষ সুযোগ পেল।
তা ভাই, একই লেখাপড়া করে যদি পুরুষ অফিস যেতে পারে, কেন নারী নয়? আর পরকীয়া ঠেকাতে কেন নারীকেই ঘরে থাকতে হবে?? পুরুষ থাকুক।
ঘরের কাজ কর্ম করুক, নারীরা অফিস করুক, নিজের লেখাপড়াটাকে তারা কাজে লাগাক
পুরুষ বিহীন অফিসে নারী আর পরকীয়া করবে না।
কী? ভেবে বসলেন নারীবাদী উত্তর দেয়া হয়ে গেল?
এর উত্তর দিতে ৮৫% মুসলিম প্রধান দেশে বলতে বাধ্যই হচ্ছি আবারও সেই ইসলাম ধর্মের রেফারেন্সে।
আমাদের ধর্মের ইতিহাসেও কিন্তু দেখা যায়,পুরুষরা অনেক বেশি সংসারের কাজে পটয়সী।
নারীরা বরং কিছুটা এক্সকিউজ পাবে পুরুশের তুলনায় এসব সংসারের কাজ থেকে।
এমনকি অনেক রেফারেন্স আছে, যে নবী হযরত মুহাম্মদ (স) অনেক ঘরের কাজ করতেন তার স্ত্রীদের পাশাপাশি।
অনেক রেফারেন্স এটারও আছে, যুদ্ধ থেকে ফিরে দেখেন, কোন এক কারণে তার স্ত্রী রান্না শুরুই করেননি।
তিনি ক্ষুধা পেটেই সেই যুদ্ধ ফেরত তলোয়ার থেকে রক্ত ধুয়ে, সেই তলোয়ার দিয়ে সবজি কাটতে লাগলেন।
বহু উদাহরণ হযরত আবু বকর (রা), উসমান (আ) এর মতো বিখ্যাত সাহাবীদের জীবনীতেও আছে
যেখানে ইসলাম বারবার বলেছেন রাসূল (সঃ) আর তার সঙ্গীদের অনুসরণ করে চলতে।
সেখানে আশা করাই যায়, ঘরে বসে থেকে কোন পুরুষের কাজ করার বিপক্ষে যুক্তি দেয়া সাজে না, যেহেতু বাইরে তাদের কাজ করতে গেলেই, নারী কর্মী দেখে পরকীয়ার কন্ট্রোল থাকে না।
আর ধর্মের বাইরে যুক্তি দিবেন? পশ্চিমা বিশ্বে অনেক পুরুষই কিন্তু সমান তালে নারীদের সাথে তাদের সংসারের কাজ করছে।
এমনকি নারীর থেকেও ভালো করে তারা এইসকল হাউজহোল্ড কাজ করে ফেলে।
আরও একটা ক্ষেত্রে এদেশে , ঘরে থাকা নারীদেরকেও , তাদের স্বামীদের এই পরকীয়ার জন্য দায়ী করা হয়।
কারণ হিসেবে বলে, নারী নাকি আগের মতো আকর্ষণীয় থাকে না,স্বামীর কেয়ার করতে পারে না।
তাই পুরুষ আপনা আপানি সুন্দরী বাইরের মেয়েদের সাথে সম্পর্ক করে।
অথচ পুরুষদের পরকীয়ার পক্ষের সাফাই গাইবার সময়ে, তারা ভুলে যায়, ঘরের স্ত্রীও কিন্তু শুরুতে, ঐ বাইরের মেয়ের চাইতে কোন অংশে কম আকর্ষণীয়া ছিলেন না।
কিন্তু সেই স্ত্রী দিনের পর দিন সংসারের কাজ একাধারে সামলাতে সামলাতে, সন্তান দানের মতো বিশাল একটা কাজের পর, সেই সন্তানদের যাবতীয় দেখ ভাল করতে করতে নিজের দিকে মনযোগ দেয়ার কথা ভুলেই যায়।
কিংবা সময় পায় না। কুলিয়ে উঠতে পারে না। এরফলে ঘরের কাজে ব্যস্ত মেয়েটা ধিরে ধীরে হারিয়ে ফেলে তার বাহ্যিক সৌন্দর্য।
সেই পুরুষের ঘর সামলাতে, বাচ্চা সামলাতেই যে নারী তার সব কিছু ত্যাগ করলো, সে নারীর এপিয়ারেন্সের জন্য পুরুষ যদি পরকীয়া করে, তবে মূল্যবোধ থেকেই, তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী থাকবে এই পুরুষ।
কোনভাবেই স্ত্রী দায়ী নয়। এটা এদেশের সনাতনী সংস্কৃতিমনা মানুষ না মানলেও, এটাই যে সত্য, তা নিকটবর্তী ভবিষ্যতেই মানুষ টের পাবে।
এবং না মানিলেও, আরও কিছু সত্য…
এ রচনা লেখার শুরু থেকেই, গ্ল্যামোজেনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, কোন পক্ষে বায়াসড হয়ে নয়, বরং উওভয়পক্ষের দিক বিবেচনা করেই, একটা নিরপেক্ষ স্টাডি করে পাঠকের সামনে বাস্তব ফ্যান্টগুলোকে তুলে ধরা, যার জন্য ডিভোর্স রেইট বেশি।
প্রায় ১৮০০ টা কেইস স্টাডি এবং ৫০ টার উপর বর্তমান আলাদতের ফাইল রিসার্চ, এবং এদেশে আদিকাল থেকে প্রচলিত কিছু সনাতনী সমাজ ব্যবস্থার কনসেপ্ট থেকে শুরু করে, ৮৫% মুসলিম প্রধান দেশে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কজনিত ইসলামের সহীহ রেফারেন্সগুলোকে নিয়ে গবেষনা করেই আলোচ্য ব্যাপারগুলো নিয়ে কথা বলা হয়েছে।
গবেষনায় অঞ্ছল হিসেবে বাংলাদেশের সমাজকে বেছে নেয়া হয়েছে, এবং দুঃখজনক হলেও রেজাল্ট যা বলছে- ডিভোর্স রেইট বৃদ্ধির জন্য ৯০% ক্ষেত্রে দায়ী ছেলে নিজে এবং তার পরিবারের মানসিকতা।
২০২১ সালে এসে, তারা ঠিকই পুত্রবধূ হিসেবে নির্যাবত করেন লেখাপড়া জানা, অবস্থাপন্ন (অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের থেকে উচ্চ অবস্থানের) পরিবারের মেয়েদের, যারা আদরের সাথেই তার পরিবারে মানুষ।
ছেলে সন্তানের মতোই সমান যোগ্যতায় লেখাপরা করে মানুষ সেসকল পুত্রবধূ।
কিন্তু ছেলে বা ছেলে পক্ষ, এইছেলের সমান করে মানুষ করা এই আধুনি,শিক্ষিত, কর্মজীবি বউ এর কাছ থেকেও ঠিক প্রাচীনকালের হাজার বছর ধরে উপন্যাসের হালিমা, কিংবা রবী ঠাকুরের হৈমন্তীর মতো আচরণ আশা করে।
তাদের মতে, সেই মেয়েকেই এডজাস্ট করতে হবে। সকালে সূর্যোদয়ের সাথে উঠে সেই শ্বশুর শাশুড়ির নাস্তা বানাতেও হবে, আবার অফিসেও সারাদিন কাজ করতে হবে।
ঘরে বসেও অনলাইনে ব্যবসা করা বউমায়ের কাছ থেকে তারা আশা করে আগের যুগের বউদের মতো ঘরের মেঝে লেপা।
আজকের বউদের অফিস থেকে এসে, ক্লান্ত হওয়ার সুযোগ নেই
মুখরোচক নাস্তা শ্বশুর শাশুড়ির সামনে না আনলে, রাতে হরেক পদের খাবার টেবিলে না পেলে, মেয়ে খারাপ- এডজাস্ট করতে পারে না।
অথচ নিজের পুত্র অফিস থেকে এসে ঘরের কোন কাজ না করলেও, ছেলেমানুষ, কোন কাজ কেন করবে-যুক্তিই দিয়ে থাকেন।
এই যুগে সমান শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং আর্নিং নিয়েও মেয়েটার এডজাস্ট করতে হবে শুধু, এটাই আশা করেন ছেলেপক্ষ।
অথচ মেয়েটা যে একটা নতুন সংসারে এসেছে, তার মানিয়ে নেয়ার জন্যও যে একটা পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে, এটা বুঝতে চান না কোন ছেলে পক্ষই।
স্বামীরাও শুধুমাত্র সচেতন থাকেন ধর্মের একাধারী শিক্ষা পেয়ে বাবা মায়ের মনে যেন কষ্ট না লাগে।
তারা ধর্মে স্ত্রীর চোখেও যেন কিছুতেই কষ্টে পানি না আসে, সে দায়িত্ব স্বামীর- এ কথাটা খুব সুন্দর করে এড়িয়ে চলে।
স্ত্রীকেই রাতের আধারে বলে- মানিয়ে চলতে শেখো
কিন্তু বাবা মাকে কখনও বলে না, স্ত্রীর উপর কোন প্রেসার দিবেন না। আপনাদের যা দরকার, তা মেটানোর দায়িত্ব আমার।
আপনারা ওকে খারাপ কথা বা খোটা দিতে পারবেন না। মেয়েটা সংসারে নতুন এসেছে। তাকে সময় দিন।
তার মন এখনই বিষায় দিলে, কিভাবে আপন করে নিবে মেয়েটা আপনাদের?
স্বামীরা মায়ের চোখের পানি দেখেই রাগে পাগল হয়ে যায়, কিন্তু একবারও ভাবে না- মেয়েটা তার জন্মের পর থেকে সব শিকড়, আপনজনকে ছেড়ে এই ঘরে এসেছে, সবকিছু ত্যাগ করে এসেছে, সেই স্ত্রীর চোখে কত পানি জমে আছে।
কঠিন বাস্তবতা এই আধুনিক যুগেও যে, মা নালিশ করলে ভাল। কিন্তু স্ত্রী নালিশ করলে, স্ত্রীর মন কালো।
আর শ্বাশুড়িরাও, তাদের ইয়াংকালে তাদের শ্বাশুড়ি কর্তৃক যে অত্যাচারের শিকার হয়ে এসেছে, অবচেতন মনে দিনের পর পর অত্যাচারিত হয়ে যে বিকৃত মানসিকতাকে গড়ে তুলেছে, সেটাই ঢালেন বউ এর উপর!
যুক্তি দিলে বলেন, আমাদের মা-খালা-নানীরা করে আসে নাই? তুমি নতুন?
তাদের প্রতি একটাই জবাব, অতীতের রেফারেন্স দিলে, আপনার পূর্বপুরুষ তো ইসলাম ধর্মের অনুসারীও ছিলেন না।
অন্যান্য ধর্মের পূজারী ছিলেন।
সেগুলোকে অনুসরণ না করে যদি আল্লাহর ভয়ে ইসলামের নিয়মকে অনুসরণ করতে পারেন; তাহলে সেই একই আল্লাহর ভয়ে, নানী দাদীর ট্রাডিশন ভুলে, নতুন করে বউকে তার স্থান এবং ইসলাম অনুযায়ী সুবিধা কেন দিতে পারবেন না?
একই উত্তর এবং প্রশ্ন স্বামীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য
হ্যা। ইসলাম ধর্মে অবশ্যই বলা আছে ডিভোর্স সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ।
তবে তার সাথে সাথে আরও কিছু ধর্মীয় ব্যাপারও আছে।
স্বামী ধর্ম মানবে না, ছেলের পরিবার ধর্ম মানবে না, স্বামী আল্লাহর বিধান মেনে স্ত্রীকে রক্ষা করবে না।
মানবিকতার দিক থেকেও স্ত্রীকে সমান মানুষ ভাববে না।
সেখানে স্ত্রী একই লেভেলের পড়ালেখা করে, একই আদরে বড় হয়ে, একই পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে, আশেপাশে যোগ্য এত জীবনসঙ্গী থাকার পরেও, কেন দিনের পর দিন অন্যায়ভাবে স্বামী এবং ছেলে পক্ষের এবিউজিং সহ্য করে করে ২০২১ সালে এসেও সংসার টিকিয়ে রাখতে একাই লড়ে যাবে, বলতে পারেন?
সংসার আটকানো, আর এডাস্টমেন্টের দায়িত্ব কি এ যুগে এসেও খালি মেয়েদের?
এই বিবেচনার অবকাশটুকু পাঠকদের উপরেই ছেড়ে ইতি টানলাম গ্ল্যামোজেনের এই বিশেষ আলোচনার।
আধুনিক, শিক্ষিত স্বামী স্ত্রীর সম-অধিকার এবং সমচেষ্টাতেই বিকশিত হোক প্রতিটা সংসার জীবণের সৌন্দর্য, আর সেটাই গ্ল্যামোজেনের একান্ত কাম্য।