রাতারাতি পরিবর্তন কে না চায় বলুন? তাও যদি সেটা নিজের সৌন্দর্য হয়, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু আমাদের ব্যস্তজীবনে ত্বকের পরিচর্যার সময়ই তো হয়ে ওঠে না। আর এটিই নাইট ফেস মাস্ক এর মাহাত্ম্য। যা আপনি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে লাগিয়ে নিয়ে নিশ্চিন্তে আরাম করবেন। আজ থাকছে শুষ্ক ত্বকের জন্য ৬টি ফেস মাস্ক।
নাইট ফেস মাস্ক এর সুবিধা
- এটি রাসায়নিকমুক্ত ।তাই বাজারচলতি প্রোডাক্টের থেকে একদম আলাদা। প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে পারবেন।
- নিজেই বানাতে পারবেন আপনার নাইট ক্রিম । সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ও কাজ করবে।
- রাতে এপিডার্মাল সেল স্কিন রিপেয়ার এর কাজ করে ।এ প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করে এই ফেস মাস্ক। পাশাপাশি পুষ্টি ও হাইড্রেসান ও দেবে। শুষ্ক ত্বক নরম করবে।
৬টি ঘরোয়া পদ্ধতি নাইট ফেস মাস্ক বাড়িতে বানানোর
এই ফেস মাস্কগুলো সারা বছর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন নিতে সাহায্য করবে।
১. কোকোনাট অয়েল ফেস মাস্ক
শুষ্ক ত্বকের জন্য কোকোনাট অয়েল খুবই ভালো কাজ করে। ট্রান্সপিডেরমাল ক্ষরণ বন্ধ করে । প্রদাহজনিত ট্যানিং এর মাত্রা নির্দিষ্ট করে।
বানানোর পদ্ধতি
- ১টেবিল চামচ ভার্জিন নারকেল তেল বা ফ্রোজেন কোকোনাট অয়েল নিন। আপনার পছন্দ মতো ক্রিমের সাথে মেশান।
- এবার আস্তে আস্তে স্কিন এর উপর লাগান। রাতভর ছেড়ে দিন ও সকালে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে তিনদিন পরপর ব্যবহার করুন।
২. ওয়াটারমেলন স্লিপিং মাস্ক
তরমুজ এমনিতেই খুব রিফ্রেশিং । এর মধ্যে একটা তরতাজা করার ব্যাপারও আছে। এতে থাকা লাইকোপিন স্কিন ড্যামেজ প্রতিরোধ করে । হার্মফুল রেডিক্যাল থেকে মুক্তি দেয়।
বানানোর পদ্ধতি
- গ্রেটেড ১ কাপ তরমুজ নিন। কিউব শেপে কাটুন।
- জুস বার করুন।এবং তুলো দিয়ে ফেসে ভালো করে লাগান।
- রাতে ঘুমানোর আগে শুকিয়ে নিন। তারপর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নাইট ক্রিম লাগিয়ে নিন।
- এটি চাইলে রোজ ব্যবহার করতে পারেন। না হলে সপ্তাহে তিনদিন।
৩. হলুদ ও দুধের মাস্ক
হলদি দুধের আয়ুর্বেদিক উপকারিতা আমরা সবাই জানি। এটি মাইক্রোব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি অক্সিডেন্ট এ পরিপূর্ণ। ফটোএজিং এবং এলোপেশিয়াও ভালো করে।
দুধের ল্যাকটিক এসিড ও কেসিনোজেন স্কিন টেক্সচার ও দৃঢ়তা বাড়ায়।
বানানোর পদ্ধতি
হাফ চামচ হলুদ ও পুরো ১চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে ভালো করে মিক্স করুন।
- কটন প্যাড দিয়ে স্কিন এ লাগান।
- তবে শোয়ার সময় পুরোনো বালিশ ব্যবহার করবেন ।নাহলে হলুদ এর দাগ লেগে যেতে পারে।
- সকালে উঠে ভালো করে মুখ ধুয়ে নেবেন। রোজ না হলে সপ্তাহে তিনদিন এটি ব্যবহার করুন।
৪. শসার ফেস মাস্ক
শসা খুবই উত্তম খাদ্য । শুধু দেহের জন্যই নয় বরং স্কিনের জন্যও। শসার রস ত্বক হাইড্রেটেড করে ।
ক্ষতিকর টক্সিন ধ্বংস করে। সানট্যান ও রিঙ্কেল আটকাতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
বানানোর পদ্ধতি
- অর্ধেক শসা নিয়ে তার নির্যাস সমেত রস বের করুন।
- এবার তুলো দিয়ে নিজের মুখে ও ঘাড়ে ভালো করে রাব করে নিন।
- রাতের জন্য ছেড়ে দিন ও সকালে উঠে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে রোজ চাইলে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
৫. অলিভ অয়েল মাস্ক
অলিভ অয়েল ফ্ল্যাভেনইড ও ফেনলিক এসিডে ভর্তি । যা স্কিনের পুনর্গঠন ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
বানানোর পদ্ধতি
- কয়েকফোঁটা ভার্জিন অলিভ অয়েল নিন। নাইট ক্রিম এর সাথে মিশিয়ে মিক্সচার তৈরি করুন।
- মিক্সচারটি মুখে ভালোভাবে মেসেজ করুন। রোজ ব্যবহার করুন টানা একমাস।
৬. অ্যালোভেরা ও ভিটামিন ই ফেস মাস্ক:
অ্যালোভেরাতে ভিটামিন এ, সি ও ই থাকে। এতে ১৮ টিরও বেশি অ্যামিনো এসিড ও স্যালিসাইলিক এসিড ও এনজাইম থাকে।
এর কোলাজেন স্কিনে সংশ্লেষণ ঘটায় । সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করে।
বানানোর পদ্ধতি
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল বাজার থেকে কিনে আনুন।
- ক্যাপসুল স্কুইস করে তেল বার করে অ্যালোভেরা জেলের সাথে মিক্স করুন।
- মুখে লাগান ।যদি আপনার স্কিন এলার্জি প্রবন হলে প্যাচ টেস্ট করে নেবেন।
- সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করুন।