কনুইয়ের দাগ দূর করার উপায়

আপনি যতই হাতে ওয়াক্সিং করুন আর স্লিভলেস টপ পরুন, হাতের কনুই যদি কালো আর খসখসে থাকে তাহলে মোটেই তা ভালো লাগে না দেখতে।

শুধু আপনার কেন, আমাদের বেশির ভাগ মেয়েদের এই এক বিষম সমস্যা।

ঘরে বসেই যাতে আপনি কনুইয়ের কালো দাগকে চিরকালের মত টাটা বলতে পারেন সেরকম কয়েকটি দারুন টিপস নিয়ে আমরা হাজির।

আমাদের হাতের কনুইয়ের চামড়া বেশির ভাগ সময়ই ভাঁজ হয়ে থাকে আর এই অংশের চামড়া অন্যান্য অংশের চামড়ার তুলনায় একটু মোটা হয়।

আমাদের হাতের এই অংশ দুটিতে কোনো তৈল গ্রন্থী থাকে না। তাই এই অংশে নোংরা বেশি জমে এবং এই অংশটি খুব তাড়াতাড়ি শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়।

আর এই কারণেই এই অংশ দুটির কিন্তু একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন।

আজ আপনাদের যে ঘরোয়া উপায়গুলি জানাব সেগুলো কনুইয়ের কালো দাগ তো দূর করবেই, সেই সঙ্গে নিয়মিত ব্যবহারে আপনার কনুই’এর অংশটি নরম এবং স্বাভাবিক স্কিন কালার ধরে রাখবে।

নারিকেল তেল

নারিকেল তেল নিশ্চয়ই ব্যবহার করেন। এখন থেকে চুলের সাথে সাথে ত্বকের যত্ন নিতেও তা ব্যবহার করুন। 

কারণ এই তেল আপনার কনুইয়ের ডার্ক স্কিন কালার বা কালো দাগ কে হালকা করে স্কিনকে নমনীয় করে এবং জমে থাকা ময়লা, মৃত কোষ খুব সহজেই পরিষ্কার করে।

ব্যবহার পদ্ধতি

প্রতিদিন গোসলে পরে হাতে কিছুটা নারিকেল তেল নিয়ে কনুইে ভালো করে ২-৩ মিনিট ম্যাসাজ করুন।

আপনার কনুই যদি খুব কালো ও খসখসে হয় তাহলে দিনে ২-৩ বার ম্যাসাজ করুন। এতে তাড়াতাড়ি কালো দাগ দূর হবে।

তবে আবার যাতে আপনার কনুইয়ে কালো দাগ বা কনুই খসখসে না হয় তার জন্য প্রতিদিন ম্যাসাজ করুন।

চিনি

চিনির নাম  শুনে অবাক হচ্ছেন কি? চিনি কিন্তু খুব ভালো স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

তাই আপনার কনুইয়ের কালো দাগ দূর করার জন্য চিনি কার্যকরী।

ব্যবহার পদ্ধতি

২ চামচ চিনি, ২ চামচ নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল এবং ১/২ চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে নিন।

এবার আপনার হাতের তালুর সাহায্যে এই মিশ্রণটি সার্কুলার মোশনে কনুইয়ে ম্যাসাজ  করুন।

৫ মিনিট ম্যাসাজ করার পর হালকা গরম জলে শ্যাম্পু বা বডি সোপ মিশিয়ে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিন ও ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

আপনার কনুইয়ের ত্বক পরিষ্কার করার জন্য সপ্তাহে ২ দিন চিনির মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।

দই

দই আমদের শরীরের ভেতরের দূষণগুলি দূর করার সাথে সাথে আমাদে ত্বকের অশুদ্ধি গুলিকেও দূর করে।

তাই শরীরের জেদী ময়লা বা দাগ দূর করতে দই কিন্তু আপনাকে কখনই হতাশ করবে না।

ব্যবহার পদ্ধতি

১ চামচ দইয়ের সাথে ১ চামচ ভিনিগার খুব ভালো করে মেশান। থিক পেস্ট মতো হয়ে গেলে আপনার কনুইয়ের অংশে ভালো করে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন।

২০ মিনিট পর পানিতে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণ প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

আপনার দাগ তো দূর হবেই, পরবর্তী কালেও কনুই নরম এবং পরিষ্কার থাকবে।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডা মৃত চামড়া বা মৃত কোষ পরিষ্কারের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।

তাই আপনার কনুই পরিষ্কার করতে বা কনুইয়ের দাগ পরিষ্কার করতে বেকিং সোডা ব্যবহার করুন।

ব্যবহার পদ্ধতি

২ চামচ বেকিং সোডা এমন ভাবে দুধের সাথে মেশান যাতে মিশ্রণটি থিক পেস্টে পরিণত হয়।

এবার মিশ্রণটি সার্কুলার মোশনে ২-৩ মিনিট ম্যাসাজ করলেই দেখবেন ময়লা পরিষ্কার  হচ্ছে বা আপনার ওই অংশের ত্বক কিছুটা হালকা হয়ে এসেছে।

এবার পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন ও ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

সপ্তাহে নিয়মিত ৩ দিন করে বেকিং সোডার মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

এছাড়া আপনার কনুইয়ের যত্ন নিতে প্রতিদিন ২ বার করে ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ম্যাসাজ করুন। বাইরে বেরোবার সময় সান স্ক্রিন  লাগান।  

প্রতিদিন অন্তত একবার করে কোনো স্ক্রাবার বা পিউমিক স্টোন দিয়ে হাতের কনুই হালকা করে ঘষে নিন।

অনেক সময় ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বক কালো ও খসখসে হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বেশি করে সবজি ও ফল খান।

টিপসগুলো নিয়মিত মানলে কিন্তু আপনার কনুইও আপনার হাতের মত সুন্দর, দাগহীন ও মোলায়েম হবে।

আপনি আগে বেছে নিন কোনটি আপনার প্রয়োগ করতে সুবিধে হবে, তারপর সেটি ব্যবহার করুন।

আর দেরী কেন! মিশন কনুইয়ের দাগ দূর শুরু করে দিন।