সারাদিনে কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে নিজের জন্য যতটুকু পরিচর্যা করার সময় হয়, তার বেশিরভাগটাই বরাদ্দ থাকে মুখের জন্য। স্বাভাবিক!
যেদিকে দৃষ্টি যত বেশি আকৃষ্ট হয়, সেদিকটাই সাজিয়ে গুছিয়ে সুন্দর তো রাখতেই হবে!
কিন্তু মুখের দিকে বেশি নজর রাখতে গিয়ে যদি হাত-পাকে অতিরিক্ত অবহেলা করেন, সেটাও কিন্তু কাজের কথা নয়!
কারণ ফাটা গোড়ালি, পায়ের ভাঙা নখ কিন্তু আপনার সামগ্রিক ইমপ্রেশনটাই নষ্ট করে দিতে পারে! তাই পায়ের জন্য বরাদ্দ রাখুন আরও একটু বেশি সময়!
মুখের মতো আপনার পায়ের পাতাও ঝকঝকে, মসৃণ, ভাঁজহীন থাকুক, এটাই নিশ্চয়ই চান আপনি?
জেনে নিন মাত্র ছয়টি ধাপ অনুসরণ করেই কীভাবে পেতে পারেন কোমল, মসৃণ পা!
পা নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন
স্নানের সময় ভেজা পায়ে কিছুক্ষণ পিউমিস স্টোন ঘষুন।
পিউমিস স্টোন না থাকলে ফুট স্ক্রাবারও ব্যবহার করতে পারেন। ভিজে অবস্থায় স্ক্রাব করলে পা থেকে মৃত কোষ তুলে ফেলা সহজ হবে।
পা ঘষার সময় ঘরোয়া ফুট স্ক্রাবও ব্যবহার করতে পারেন।
বেকিং সোডা, ব্রাউন সুগার, নুন, নারকেল তেল দিয়ে নিজেই বানিয়ে নিন ফুট স্ক্রাব। স্ক্রাবিংয়ের পর পায়ে ভালো করে ক্রিম মেখে নিলেই হলো।
পা ফাটার সমস্যা
আপনার পায়ের গোড়ালি কি খুব শুকনো আর ফাটা?
রাতে বাড়ি ফিরে হালকা গরম জলে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখুন। ইচ্ছে করলে স্ক্রাবিংও করে নিতে পারেন।
তারপর তোয়ালে দিয়ে পা মুছে ভালো করে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে নিন।
তারপর পাতলা সুতির মোজা পরে এক ঘণ্টা থাকুন যাতে পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলিটা পুরোপুরি শুষে যেতে পারে।
প্রতিদিন নিয়মিত করলে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
ছত্রাকের সংক্রমণ ঠেকান
বর্ষাকালে পায়ে জলকাদা লেগে ছত্রাকের সংক্রমণ হতেই পারে।
পা কখনও বেশিক্ষণ ভেজা থাকতে দেবেন না। পা চুলকোলে বা র্যাশ বেরোলে বাজারচলতি ছত্রাক সংক্রমণ নিরোধী ক্রিম কিনে লাগাতে পারেন।
আপনার পা অতিরিক্ত ঘামে? মেডিকেটেড পাউডার লাগিয়ে রাখুন পায়ে।
পা ধোয়ার সময় নখের ফাঁক, আঙুলের খাঁজের মতো জায়গাগুলো ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন।
মোজা পরার অভ্যেস থাকলে প্রতিদিন পরিষ্কার করে কাচা মোজা পরুন।
সানস্ক্রিন মাখতেই হবে
চড়া রোদ যেমন আমাদের মুখের ক্ষতি করে, তেমনি পা-ও কিন্তু বাদ যায় না!
তাই অন্তত 30 এসপিএফ যুক্ত ব্রড স্পেক্ট্রাম সানস্ক্রিন মাখুন পায়েও।
বিশেষ করে যদি পা খোলা জুতো পরেন, তা হলে সানস্ক্রিন বাদ দেওয়া চলবে না একেবারেই।
খেয়াল রাখুন জুতোর দিকে
প্রতিদিন একই জুতো না পরাই ভালো।
একই জুতো পরে রোজ বেরোলে জুতোও যেমন শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পায় না, তেমনি পায়ের একই জায়গায় চাপ লেগে কড়া বা ফোসকা পড়ার আশঙ্কাও থাকে।
তাছাড়া একই জুতো প্রতিদিন পরলে পায়ের একই জায়গায় একইভাবে রোদ লেগে চামড়া ট্যান হয়ে যায়, ফলে বিশ্রী দেখায়।
তাই জুতো পালটে পালটে পরলে একদিকে যেমন আপনার স্টাইল কোশেন্ট বাড়বে, তেমনি রক্ষা পাবে ত্বকও!
একটানা দাঁড়িয়ে থাকবেন না
দীর্ঘক্ষণ একইভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের উপর জোর পড়ে গোড়ালি ও কাফ মাসলে ব্যথা হতে পারে। তাই মাঝে মাঝে ব্রেক নিন।
কাজের সূত্রে যদি আপনাকে একটানা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তা হলে জুতোর মধ্যে ইনসোল দিয়ে পরুন।
এমন ইনসোল কিনুন যার নিচে একটা প্লাস্টিকের শক্ত আবরণ রয়েছে, তাতে আপনার শরীর বাড়তি সাপোর্ট পাবে।
মেডিকেটেড ইনসোল কিনলে পায়ের দুর্গন্ধ থেকে দূরে থাকতে পারবেন, মিলবে বাড়তি আরামও!