Search
Close this search box.

মেথির উপকারিতা

মেথির বীজ বহু বছর ধরে আমাদের রান্নাঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।

স্বাদ বাড়ানো ছাড়াও মেথির বীজ স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণ মশলা থেকেও যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পাওয়া যায় সে সম্পর্কে মানুষ তেমন সচেতন নন।

মেথির বীজে অ্যান্টি অক্সিডেন্টস এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

মেথি বীজ চুল এবং ত্বকের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।

আপনি যদি তরকারিতে মেথি খেতে না চান, তবে এটি প্রতিদিন ব্যবহারেরও সহজ উপায় রয়েছে।

এর সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো মেথির জল খাওয়া।

মেথির জলের উপকারিতা

মেথির জল পান করলে সারাদিন শরীর ঠান্ডা থাকে।

এতে ফাইবার থাকে।

এই পানীয় ওজনের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।

আপনি অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খেয়ে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি করেন, তার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবেন।

মেথির বীজে পুষ্টিকর উপাদান থাকে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক।

মাথার খুশকি দূর করে।

মেথির জল শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন অপসারণে সহায়তা করে।

যা অন্ত্রের চলাচল নিরাময়ে সহায়তা করবে।

এভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজমের মত সমস্যা দূর করতে মেথি ব্যবহার করা যেতে পারে।

মেথির বীজ ডায়াবেটিস নিরাময়ের উপযোগী।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

মেথির বীজে পাওয়া অ্যামিনো অ্যাসিড অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ায়।

যা শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। মেথির ব্যবহার কিডনি ভাল রাখে।

যেভাবে মেথির জল বানাবেন

মেথির জল ঘরে বসে সহজেই তৈরি করা যায়।

একটি কড়াই বা প্যানে মেথি বীজ ভাল করে ভেজে নিন।

ভাজার পরে বীজের গুঁড়া তৈরি করুন।

এক গ্লাস গরম জলে এক চা চামচ মেথি বীজের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন।

আপনার মেথির জল প্রস্তুত।

স্বাস্থ্যের ভাল রাখতে মেথি বীজের জল সেবন জরুরি।

এছাড়াও মেথির বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে

ওজন কমাতে

প্রাকৃতিক ফাইবার থেকে জন্ম নেয় মেথি।

এগুলো চিবিয়ে গিলে খাওয়া যায় এবং পাকস্থলীর ফাঁকা স্থান এরা পূর্ণ করে।

এতে ওজন কমানোর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।

খুব বেশি নয়, সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সামান্য মেথি চিবিয়ে খান।

এতেই স্পষ্ট বুঝবেন উপকার পাচ্ছেন।

স্থূলতা কমাতে প্রতিদিন সকালে মেথি ভেজানো পানি পান করতে পারেন।

দুটি আলাদা গ্লাসে পানি নিয়ে প্রতিটিতে এক টেবিল চামচ মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন।

এই পানি পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করে।

জ্বর ও খুসখুসে গলার জন্য

লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে এক টেবিল চামচ মেথি চিবিয়ে খেলে জ্বর থেকে মুক্তি মেলে।

আবার এতে রয়েছে মুসিলেজ নামের এক ধরনের যৌগ, যা গলার খুসখুসে ভাব দূর করে।

নারীদের স্বাস্থ্যগত বিষয়েও এর উপকারিতা রয়েছে।

মেথিতে রয়েছে সাইটো-ইস্ট্রোজেন, যা নারীদেহে প্রোলাকটিন নামের হরমোনের মাত্রার বৃদ্ধি ঘটায়।

এই হরমোন নারীদেহকে সুগঠিত করে।

এছাড়া ঋতুকালীন বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয় মেথি।

চুল পড়া রোধে

স্বাস্থ্যহীন চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেয় মেথি।

চুল পড়া রোধে বহুকাল ধরে মেথির কদর চলে আসছে।

এটি খেতেও পারেন, বা বেটে মাথায় দিতে পারেন। বিস্ময়কর উপকারিতা মিলবে।

মেথি বাটা সারা রাত নারিকেল তেলের মধ্যে চুবিয়ে রেখে সকালে চুলে মাখুন।

ঘণ্টাখানেক পর গোসল করে ফেলুন।

হজমে সহায়ক

বুকে বা পেটের ওপরের দিকে এসিডের প্রদাহ থেকে মুক্তি দেয় মেথি।

সেই সঙ্গে বদহজমের সমস্যায় ওষুধের মতো কাজ করে।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

এ সবই দেহের বিষাক্ত উপাদানগুলোকে বের করে দেয়।

উপকার পেতে স্রেফ পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে খেলেই হবে। পানিটাও খেতে ভুলবেন না।

রক্তে গ্লুকোজ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

দেহে গ্লুকোজের মাত্রা দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মেথি।

এর অ্যামাইনো এসিড অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন ক্ষরণে সহায়তা করে।

এতে দেহে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস পায়।

ফলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য

রূপচর্চায়ও মেথিকে শীর্ষে রাখা যায়।

সারা দেহে বয়ে বেড়ানো নানা ক্ষতিকর উপাদান চেহারায় বলিরেখা ফেলে দেয়।

এছাড়া চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল সৃষ্টিতেও ওস্তাদ এগুলো।

মেথি দেহের সব অপ্রয়োজনীয় উপাদান ঝেঁটিয়ে বিদায় করে।

খুশকি দূর করতে

বিশেষ ধরনের চুলে প্রচুর খুশকির উত্পাত ঘটে।

মাথার শুষ্ক ও মৃত ত্বক থেকে খুশকি হয়।

গোটা রাত পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে তা বেটে পেস্ট তৈরি করুন।

এতে ইচ্ছে হলে দই মেশাতে পারেন।

এরপর এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগান।

মিনিট তিরিশেক রেখে ধুয়ে ফেলুন। খুশকি চলে যাবে।

সন্তান জন্মদানকে কিছুটা সহজ করতে

জরায়ুর সংকোচন ও প্রসারণের যন্ত্রণা কমাতে মেথির অবদানের কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে অতিরিক্ত খাওয়া হলে গর্ভপাত বা অপরিণত শিশুর জন্মদানের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।