ত্বকের যত্নে খাদ্যাভ্যাস কেন জরুরি?

ত্বক সতেজ ও লাবণ্যময় রাখতে কে না চায়? এককথায় সবাই কারণ ত্বকের সতেজতা ও সুস্থতার উপরই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য অনেকখানি নির্ভর করে।

ত্বকের যত্নে আমরা কত কিছুই না করি। প্রসাধন, ফেইসপ্যাক, পার্লার – কোনোটাই বাদ পড়ে না।

কিন্তু জানেন কি, আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে, আপনি কি খাচ্ছেন তার ওপর। তাই সুস্থ সুন্দর ত্বকের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়ারও কোনো বিকল্প নেই।

পুষ্টিকর খাবারই দিতে পারে লাবণ্যময় ত্বকের নিশ্চয়তা। আর তাই জেনে রাখা দরকার কোন খাবারগুলো খেলে ত্বক থাকবে সুস্থ ও সতেজ।

আমরা যে যে খাবারগুলো প্রতিদিনের তালিকায় রাখছি সে খাবারগুলোই আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো যেমন আপনার স্বাস্থ্য নষ্ট করতে পারে তেমনই আমাদের ত্বকের জন্য খাদ্য খুব ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

পানি

হ্যাঁ, পানি, এটি আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। সারাদিন পরিশ্রমের ফলে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ঘামের সাথে বেড়িয়ে যায়।

যারা পরিমাণে কম পানি পান করেন তাদের মাথা ব্যথা ও অনিদ্রার মতো শারীরিক সমস্যা হতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে স্বাভাবিকভাবেই চামড়া উজ্জ্বল হয়।

পানি চামারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য রক্ষা করে। এর পর থেকে যখনই আপনার প্রিয় কোমলপানীয় খেতে ইচ্ছে করবে তখনি তার পরিবর্তে পান করুন এক বোতল পানি।

গাজর

ত্বক বান্ধব খাদ্য তালিকায় প্রথম যে উপাদানের নাম আসে টা হল গাজর। এটি বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য।

গাজরের টক্সিন আমাদের ত্বক ভিতর থেকে সুস্থ করে। সূর্য জনিত ক্ষতি থেকে আমাদের ত্বক রক্ষা করে।

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু  খুবই পরিচিত সবজি এবং সহজলভ্য। আলুতে আছে বিটা ক্যারোটিন যা প্রো ভিটামিন এ হিসেবে কাজ করে।

এরা দেহের মধ্যে ভিটামিন এ তৈরি করতে পারে। ক্যরোটিনয়েডস প্রাকৃতিক সানব্লক হিসেবে কাজ করে যা মিষ্টি আলুতে পেয়ে থাকি।  

টম্যাটো

টমেটোকে সুপার ফুড বলা ‍যায়, এটি এমন একটা সবজি যা স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য সমান উপকারি। এতে আছে ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন।

টমেটোতে আরো রয়েছে লুটেইন এবং লাইকোপেন যা ত্বকের কুচকে যাওয়া ভাব দূর করে।

গ্রিন টি 

গ্রিন টি বা সবুজ চা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। যা ফ্রি রেডিকেলস থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তাছাড়া সবুজ চা, ত্বকের আদ্রতা, রুক্ষতা, ইলাস্টিসিটি দূর করতে সহায়তা করে।  

বুঝে শুনে খাদ্য তালিকা তৈরি করুন

আপনার রোজকার খাবারে যোগ করুন হোল গ্রেইন রুটি বা সিরিয়াল, শাক সবজি আর সালাদ, নানারকম ফল, দুধ আর দুগ্ধজাত খাবার।

যাতে আপনার দেহ প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদান পায় এবং হজম ঠিকমতো হয়। খাবারে থাকতে হবে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

খাবারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে বিভিন্ন ফ্রি র‍্যাডিকেলসের বাজে প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

ফ্রি র‍্যাডিকেলস হলো সেসব ক্ষতিকর উপাদান যা ধূমপান, মদ্যপান, অত্যধিক সূর্যের তাপ, বায়ু দূষণের কারণে শরীরে জমা হয়।

এগুলো শরীরের সুস্থ কোষকে আক্রমণ করে ত্বককে অকাল বার্ধক্যের দিকে নিয়ে যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় রঙিন ফলমূল, বাদাম, মাছ এর মতো খাবারে।

এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার খাবারের তালিকায় কম জিআইযুক্ত খাবার থাকতে হবে।

কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) যুক্ত খাবার হজম হয় খুব ধীরে এবং শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায় না।

যেমন – হোল গ্রেইন খাবার, ফলমূল, toro mecanicoদুধ আর বিভিন্ন ডাল। খেতে হবে চর্বিহীন মাংস, চামড়া ছাড়া মুরগীর মাংস, প্রচুর মাছ, ডিম, আর ডাল।

প্রোটিন আমাদের পেশীর ক্ষয়রোধ করে, তাই প্রতি বেলার খাবারে অন্তত ৪০ গ্রাম প্রোটিন থাকা জরুরি।

খাবার তেল বলতে আমরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বুঝি সয়াবিন তেল।

এই অভ্যাস বদলে রাইস ব্র্যান, জলপাই, সূর্যমুখী বা তিলের তেল খাবার অভ্যাস করা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

এ কারণে বুঝে শুনে খাদ্য তালিকা তৈরি করুন। সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।