Search
Close this search box.

ত্বকের ফ্রেশনেস

হুট করেই খেয়াল করলেন যে স্কিনটা কেমন যেন মলিন লাগছে, কোনো গ্লো নেই, দেখে মনে হচ্ছে খুবই টায়ার্ড! বাইরে থেকে এসে ক্লান্তিভাব যেন স্কিনেও ভিসিবল হয়, তাই না? আবার দেখা যায়, দাওয়াত বা স্পেশাল কোনো দিনে ফেইসটা যেন কেমন নিষ্প্রাণ হয়ে আছে।

মেকআপ ছাড়াই কীভাবে ফ্রেশ লুক আনা যায়, সেটা নিয়ে অনেকেই কনফিউশনে থাকেন। ক্লান্ত ত্বককে সতেজ করতে কোনো শর্টকাট উপায় আছে কি? এই ব্যস্ত জীবনে আমাদের চাই ঝটপট সমাধান! টায়ার্ড লুকিং ফেইসে চটজলদি কীভাবে ফ্রেশনেস আনবেন, সেটাই আজ শেয়ার করবো। তাহলে জেনে নিন মাত্র কয়েক মিনিটেই কীভাবে টায়ার্ড ফেইসকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তোলা যায়।

ত্বক কেন মলিন ও ক্লান্ত দেখায়?

আচ্ছা, কখনো কি ভেবে দেখেছেন স্কিন কেন ডাল ও টায়ার্ড দেখাচ্ছে? এর পেছনে কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো দায়ী, সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন? জানি, অধিকাংশ উত্তরই হবে ‘না’! রেগুলার লাইফে আমরা এমন অনেক ভুল করছি, যার ফলে স্কিনে তাড়াতাড়ি এজিং সাইন চলে আসছে। সেই সাথে ফেইসের লাবণ্য হারিয়ে যায়, ত্বক নিষ্প্রাণ ও ক্লান্ত দেখায়। চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক এর পেছনে কারণগুলো কী কী।

ডিহাইড্রেশন

ডিহাইড্রেশনের ফলে ত্বকের কোষে রক্ত প্রবাহের ভলিউম কমে যায়, এতে আপনার ত্বক মলিন ও ক্লান্ত দেখায়। ত্বকের সতেজতা হারিয়ে যায় খুব সহজেই।

এক্সফোলিয়েশন না করা

প্রাকৃতিকভাবে আমাদের স্কিনে নতুন সেলস তৈরি হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর সেটা মৃত কোষে পরিণত হয়। ত্বকে ডেড সেলস বা মৃত কোষের স্তুপ জমে গেলে ত্বক অনেকটা রাফ ও খসখসে হয়ে যায়।

স্ট্রেস ও ঘুমের অভাব

ঠিকমতো বিশ্রাম না নিলে বা পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে স্কিনে ক্লান্তিভাব ও মলিনতা দেখা যায়। স্ট্রেসের ফলে আমাদের শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হতে পারে, যার কারণে ত্বকেও এর প্রভাব পড়তে পারে।

পুষ্টির ঘাটতি

আপনার রেগুলার ডায়েটে পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান না থাকলে আর অস্বাস্থ্যকর খাবার-দাবারে অভ্যস্থ হলে ত্বকেও কিন্তু সেই ইফেক্টটা পড়ে! সতেজ ও প্রাণবন্ত ত্বক পেতে হেলদি ডায়েট চার্ট ফলো করা কিন্তু মাস্ট।

যত্নের অভাবে

অনেক সময় দেখা যায় যে অবহেলা করে আমরা হয়তো ত্বকে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করছি না, রোদে বের হওয়ার আগে প্রোপারলি সান প্রোটেকশন নিচ্ছি না। এতে খুব সহজেই আপনার ত্বকে মলিনতা আর রুক্ষতা চলে আসতে পারে। লো হিউমিডিটি লেভেল, পল্যুশন, সূর্যের কড়া তাপ এগুলো স্কিনে বেশ খারাপভাবে ইমপ্যাক্ট ফেলে।

ত্বকের ক্লান্তিভাব দূর করার সহজ উপায়

সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে একটু সময় পেয়ে যখন আয়নাতে ফেইসটা দেখি, কেমন যেন নিষ্প্রাণ লাগে। খুব বেশি সময় ধরে রূপচর্চা করার মতো এনার্জি থাকে না! টায়ার্ড ফেইসকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তোলার সহজ উপায় কী তাহলে? আমাদের এই বিজি লাইফে সবারই চাই চটজলদি সমাধান। চলুন এখন তাহলে জেনে নেই ত্বকের ক্লান্তিভাব দূর করার সহজ উপায় সম্পর্কে।

টায়ার্ড ফেইসকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করবেন কীভাবে?

১) সবার আগে খুব ভালোভাবে ফেইস ক্লিন করে নিন আপনার পছন্দের ফেইস ওয়াশ দিয়ে। সার্কুলার মোশনে নিচের থেকে উপর দিকে ফেইস ম্যাসাজ করুন। এতে স্কিন প্রোপারলি ক্লিন হয় এবং ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে। এবার ডেড স্কিন সেলস রিমুভ করতে স্ক্রাব ব্যবহার করুন। ২/৩ মিনিট আলতো হাতে ম্যাসাজ করে ফেইস ধুয়ে নিন। টাওয়াল দিয়ে চেপে চেপে ত্বক মুছে নিয়ে রোজ ওয়াটার স্প্রে করে নিন। ব্যস, ত্বকের ক্লান্তিভাব গায়েব! রোজ ওয়াটার স্কিনের হাইড্রেশন লেভেল বুস্ট করে এবং রিফ্রেশিং ফিল দেয়।

২) ত্বককে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তুলতে ঝটপট সল্যুশন হিসাবে আইস ম্যাসাজ খুবই ভালো কাজ করবে। কয়েক ফোঁটা লেবুর রস, পানি ও শসার স্লাইস একসাথে মিক্স করে আইসট্রে তে রেখে বরফ করে নিন। বাইরে থেকে এসে পরিষ্কার সুতি কাপড়ে বরফ পেঁচিয়ে স্কিনে ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকে সুদিং ফিল দেয় এবং ওপেন পোরসের ভিজিবিলিটি কমাতেও হেল্প করে।

৩) ত্বককে রিফ্রেশিং করে তুলতে সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে অ্যালোভেরা জেল। ফেইস ভালোভাবে পরিষ্কার করে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিটের জন্য। এরপর মুখ ধুয়ে নিন। অ্যালোভেরা জেল ত্বকের কোমলতা ফিরিয়ে আনে। স্কিন ফ্রেশ ও হাইড্রেটেড থাকে দীর্ঘসময় ধরে। গরমের দিনে ফ্রিজে রেখে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে আরাম পাবেন।

৪) স্কিন যখন ডিহাইড্রেটেড মনে হয়, তখন শিট মাস্কের ব্যবহার হতে পারে সবচেয়ে ইজি সল্যুশন। ধরুন সারাদিন পর বাসায় আসলেন, খুবই টায়ার্ড, স্কিন অনেক বেশি রুক্ষ-শুষ্ক দেখাচ্ছে! একটু পরেই হয়তো আপনাকে রেডি হতে হবে কোনো দাওয়াতের জন্য। ঝটপট শিট মাস্ক লাগিয়ে নিন, ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে তুলে ফেলুন। এক্সেস সিরামটুকু ফেইসে ড্যাব ড্যাব করে লাগিয়ে নিন। পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার প্রয়োজন নেই। তবে স্টিকি ফিল হলে ফেইস ধুয়ে নিতে পারেন।

এর পাশাপাশি প্রয়োজন প্রোপার ডায়েট ও ঘুম

হেলদি ডায়েট আর পরিমিত ঘুম এই দুটো বিষয়কে স্কিপ করা যাবে না। বাইরে থেকে আপনি ত্বকের যতই টেক কেয়ার করুন না কেন, ভেতর থেকেও ত্বক যাতে সঠিক পুষ্টি পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। উজ্জ্বল ও কোমল ত্বক পেতে চাইলে রেগুলার বেসিসে স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করতে হবে। দিনের বেলা বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পান করবেন, ফলমূল আর সবজি বেশি করে খাবেন, সময়মতো ঘুমাবেন।

ব্যস, টায়ার্ড ফেইসকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তোলার ৪টি সহজ উপায় আমরা জেনে নিলাম। খুবই সিম্পল ট্রিকস কিন্তু ভীষণ কাজের, বাসায় ট্রাই করে দেখুন! সময় কম লাগবে আর সেই সাথে ত্বকের সতেজতাও ফিরে পাবেন খুব সহজেই।