রসুনকে এমনিতেই ম্যাজিক ফিগার বলা হয়। সে তো শরীরের জন্য।
কিন্তু জানেন কি চুল ও স্কিনের জন্যও ম্যাজিকের মত কাজ করে রসুন।
হ্যাঁ, রসুন এমন কিছু সাহায্য করে, যা অন্য কিছু থেকে পাওয়া মুশকিল। দেখুন রসুন ম্যাজিক।
ব্রণ কমাতে সাহায্য করে
রসুনে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ব্রণ কমাতে বেশ সাহায্য করে। ব্রণর জন্য দায়ী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে নির্মূল করে।
এর জন্য কাঁচা রসুনের একটা কোয়া চিবিয়ে খেতে পারলে ভালো। রোজ না হলেও সপ্তাহে তিন চারদিন খান।
রসুন খাবার পর অবশ্যই পানি পান করুন। সেক্ষেত্রে পানি খান। ভেতর থেকে ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।
স্কিন এজিং
তারুণ্য ধরে রাখতে চান? তাহলে রসুন খান। কারণ রসুনে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা স্কিনকে সতেজ রাখে। ]
স্কিন এজিং-এর একটা বড় কারণ হল ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি। রসুন এই ধরণের ইউ ড্যামেজ থেকে স্কিনকে রক্ষা করে।
রিঙ্কেল, ফাইন লাইনস, এজ স্পট, ডার্ক স্পট থেকে স্কিনকে দূরে রাখে।
উপকরণ
কাঁচা রসুন ১ কোয়া, মধু ১ চামচ।
পদ্ধতি
কিছুই না, শুধু কাঁচা রসুন ১ কোয়া মধুর সাথে চিবিয়ে খেতে হবে। তাহলেই দেখতে পাবেন রসুনের কেরামতি।
স্ট্রেচ মার্কস
স্ট্রেচ মার্কস যাদের আছে, তাঁরাই বোঝেন এ থেকে মুক্তি পাওয়া কত কঠিন। তবে এবার সম্ভব। কাজে লাগান রসুনকে।
উপকরণ
অলিভ বা সরষের তেল ৩ চামচ, ২-৩ কোয়া রসুন।
পদ্ধতি
অলিভ তেল বা সরষের তেলে রসুন ফেলে তেল ফোটান। অল্প আঁচে ফোটাবেন। নাহলে তেল পুড়ে যাবে।
তেলে রসুনের গন্ধ বেরোলে, তেল রেডি। এবার এটা হালকা ঠাণ্ডা করে নিন। তারপর এই তেল মার্কসের জায়গায় সার্কুলার মোশনে লাগান।
স্কিন অ্যালার্জি
রসুনে যেহেতু আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, তাই স্কিনের যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী।
স্কিন অ্যালার্জি, চুলকানি এমনকি একজিমার ক্ষেত্রেও ভালো কাজ করে রসুন।
ব্ল্যাকহেডস
স্কিনে সাধারণত অতিরিক্ত তেল জমে থাকার ফলে ব্ল্যাকহেডস দেখা যায়। ব্ল্যাকহেডস কমাতেও রসুন বেশ সাহায্য করে।
রসুনের মধ্যে আছে স্কিনের জন্য উপকারী পলিফেনল যা এই ধরণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
উপকরণ
৩ কোয়া রসুন, ৪ টুকরো টম্যাটো।
পদ্ধতি
একটু রসুন ও টম্যাটো মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এটা ১৫ মিনিট মত রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু থেকে তিনদিন করুন।
এটা ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করবে এবং স্কিনকে করে তুলবে হেলদি।
স্কিনের অতিরিক্ত তিল ও আঁচিল
মুখে একটা বড় আঁচিল কিংবা অতিরিক্ত তিল ভালো লাগে না। এই সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে রসুন। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।
বিভিন্ন রিসার্চ থেকে দেখা যায়, রসুন স্কিনের এই ধরণের ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন রোধ করে। এবং স্কিনের অতিরিক্ত আঁচিল ও তিল কমাতে সাহায্য করে।
জাস্ট রসুনের একটা কোয়া একটু থেঁতো করে, ওই আঁচিলের ওপর লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটা রোজ করুন। দেখবেন উপকার পাবেন কিছুদিনেই।
হোয়াইটহেডস
নাকের ওপর হোয়াইটহেডস কি বাজেই না লাগে! এটাও কমাবে রসুন,যদি কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেতে পারেন। এবং রসুনের রসের সাথে টম্যাটোর রস মিশিয়ে লাগাতে পারেন। ভালো ফল পাবেন।
স্কিন ইনফেকশন
দু’দিন ছাড়াই স্কিন ইনফেকশন লেগেই আছে? তাহলে অবশ্যই কাঁচা রসুন চিবিয়ে খান।
রোজ খেতে হবে না, এতে আবার পেট গরম হতে পারে। সপ্তাহে তিন চারদিন খান। স্কিন ইনফেকশন থেকে মুক্ত থাকবেন।
চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
রসুন চুলের বৃদ্ধিতে বেশ সাহায্য করে। কারণ এতে থাকা ভিটামিন, মিনারেলস, পলিফেনল, এছাড়াও কপার থাকে।
কপার এমন একটি মিনারেল যেটা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এটা হেয়ার ফলিকলকে মজবুত করে এবং স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যেটা চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
চুল পড়া কমায়
রসুন যেমন চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তেমনই অতিরিক্ত চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণ করে। এটা স্ক্যাল্পকে নারিশ করে ও রক্তসঞ্চালন উন্নত করে।
কিচ্ছু না, জাস্ট কয়েকটা রসুনের কোয়া কেটে নিয়ে স্ক্যাল্পে ঘষুন। বা রস ও করে নিতে পারেন। এই রস সপ্তাহে দু’দিন লাগান।
এক মাসের মধ্যেই ফল পাবেন। তবে স্ক্যাল্পে কোনোরকম ক্ষত থাকলে এটা লাগাবেন না।
এছাড়াও এটা সাথে অলিভ তেলের মধ্যে রসুন ভালো করে ফুটিয়ে সেই তেলটা স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। চুল পড়া বন্ধ হতে বাধ্য।
খুশকি কমাবে রসুন
রসুন কাজ করে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল রূপে। তাই খুশকি কমতে বাধ্য। খুশকি কমাতে অনেক টাকা খরচ করে নানারকম শ্যাম্পু কেনেন।
কিন্তু বাড়ির এই সহজ উপাদানটি অনেক ভালো যেকোনো খুশকি স্পেশাল শ্যাম্পুর থেকে। জাস্ট রসুনের রস লাগান। এতে চুল পড়াও যেমন কমবে, তেমনই খুশকিও কমবে।
চুল কালো রাখতে
অল্প বয়সেই চুল পেকে যাচ্ছে? বাঁচার একমাত্র উপায় রসুন। কারণ রসুন এই অকালপক্কতা কমাতে দারুণ উপকারী।
এর কারণ এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যেটা অকালপক্কতা নিয়ন্ত্রণ করে। এর জন্য কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে তো ভালোই।
সঙ্গে আরেকটি পদ্ধতিও দেখতেও পারেন।
উপকরণ
৪ কোয়া কাঁচা রসুন, ৩ চামচ নারকেল তেল।
পদ্ধতি
নারকেল তেলের মধ্যে কয়েক কোয়া রসুন মিশিয়ে নিন। এবার এটা ফোটান কম আঁচে।
তেলে রসুনের গন্ধ বেরোলে তেল নামিয়ে নিন। তেল ঠাণ্ডা হলে এটা ভিজে চুলে লাগান। ২০ মিনিট পর চুল ধুয়ে নিন। চুল থাকবে কালো স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
চুলকে ময়েশ্চারাইজড রাখে
রসুনে থাকা বিভিন্ন মিনারেল চুলকে ময়েশ্চারাইজড রাখে। স্ক্যাল্পকে নারিশ করে। তার ফলে চুল ফাটার সমস্যাও নিয়ন্ত্রণ করে।
চুলের অতিরিক্ত রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করে। চুলে প্রাণ বজায় রাখটে সাহায্য করে রসুন।
তাহলে দেখলেন তো রসুনের জাদু? আর ভুরু না কুঁচকে, ব্যাস এবার নিয়মিত রসুন খাওয়া শুরু করে দিন।