চুলে নিয়মিত যত্ন নিয়েও কাজ হচ্ছে না? নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহে হেয়ার প্যাক লাগান। কিন্তু তাও সমস্যা হচ্ছে চুলে?
এর কারন হলো, চুলের যত্ন ঠিক ভাবে নিচ্ছেন না! চুল ভালো রাখার কিছু বেসিক টিপস আছে।
আজ শেয়ার করলাম, চুল ভালো রাখার বেসিক কিছু টিপস।
খেয়াল করে পড়ে দেখুন, এবং মেনে চলার চেষ্টা করুন।
চুলের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন কিছুদিনের মধ্যেই।
গরম ভাব দিয়ে দিন শ্যাম্পু করার আগে
সারা সপ্তাহের ধুলো ময়লা, তেল চুলের গোঁড়ায় জমা হয়। আর অয়েলি স্কাল্প হলে তো কথাই নেই।
অনেক বেশি তেল জমা হয় চুলে।
তাই স্কাল্পকে পুরোপুরি পরিষ্কার করতে, শ্যাম্পু করার আগে একটু গরম পানির ভাব দিয়ে নিন।
শুধু পানি গরম করে একটা তোয়ালে ভেজান।
এবার তোয়ালে থেকে এক্সট্রা পানি বের করে নিয়ে, গরম তোয়ালেটা মাথায় জড়িয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।
এতে চুলের গোঁড়ায় জমে থাকা ধুলো, তেল পরিষ্কার হয়ে যায়।
হালকা ম্যাসেজ করুন
স্টিম করে নেওয়ার পর। স্কাল্পে হালকা হাতে মাসাজ করুণ।
আঙুল দিয়ে একদম হালকা ভাবে। তেল মাখার মত করে মাসাজ করুণ।
চুল ধোয়ার সময় ব্যবহার করুন ঠান্ডা পানি
চুল ধোবেন সবসময় ঠান্ডা পানিতে। গরম পানি চুলের জন্য একদমই ভালো না।
এটা চুলের ময়েশ্চার ছিনিয়ে নেয়। চুল করে দেয় শুষ্ক রুক্ষ।
ঠান্ডা পানি ময়েশ্চার ধরে রাখে। তার ফলে চুল থাকে হেলদি।
ব্যবহার করুণ সালফেট ও পারাবিন ফ্রী শ্যাম্পু
বেশীরভাগ শ্যাম্পুতেই পারাবিন ও সালফেট ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু এই দুটো ক্যামিকাল চুলের জন্য একদমই ভালনা। এগুলো থেকে শুধু যে স্কাল্পের অ্যালার্জি হয়, তা না।
চোখে পড়লে চোখেরও সমস্যা হতে পারে।
তাই, হারবাল পারাবিন ও সালফেট ফ্রী শ্যাম্পু ব্যবহার করাই ভালো।
শ্যাম্পু করুন স্কাল্পে
শ্যাম্পু করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্ক্যাল্পে পরিষ্কার করা। তাই শ্যাম্পু শুধু স্ক্যাল্পে।
চুলে শ্যাম্পু বেশি ঘষলে চুল শুকিয়ে যায়। তাই শ্যাম্পু স্ক্যাল্পে ঘষুন।
চুলের লেন্থে বেশি শ্যাম্পু দেওয়ার দরকারই পড়ে না।
ধীরে ধীরে শ্যাম্পু ঘষুন
স্কুয়াল্পে অনেকেই বেশ জোরে জোরে শ্যাম্পু ঘসেন।
জোরে ঘসার মানে বেশি পরিষ্কার হচ্ছে, এটা একদমই ভুল ধারনা।
বরং চুলের গোঁড়ায় জোরে ঘষলে, চুল উঠে যাবার সম্ভবনাই বেশি।
তাই ধীরে ধীরে, সার্কুলার মোশনে শ্যাম্পু করুণ।
রোজ শ্যাম্পু নয়
সপ্তাহে দু থেকে তিনদিনের বেশি শ্যাম্পু একদম নয়।
রোজ শ্যাম্পু করলে, চুল শুকিয়ে রুক্ষ হয়ে যাবে। এছাড়াও শ্যাম্পুর ক্যামিকাল চুলের ক্ষতি করে।
তাই রোজ শ্যাম্পু না করাই ভালো।
চুলকে কন্ডিশনিং করুণ তেল দিয়ে
হেলদি চুলের প্রথম শর্ত চুলকে কন্ডিশনিং করা।
আর চুলকে কন্ডিশনিং করার একটা ভীষণ ভালো উপায় হলো, তেল মাসাজ করা।
গোসল করার অন্তত দুঘণ্টা আগে, স্ক্যাল্পে ভালো করে তেল মাসাজ করুণ।
এটা চুলকে ময়েশ্চারাইজড রাখে। চুলকে সফট ও জটমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
কন্ডিশনিং এর আগে চুল মুছে নিন
এটা শুনতে একটু অন্যরকম লাগলেও, শুকনো চুলে কন্ডিশনার তাড়াতাড়ি কাজ করে।
মানে, শ্যাম্পু করে চুল মুছে নিয়ে কন্ডিশনার লাগালে, কন্ডিশনার চুলে আরও বেশি ভালো ভাবে কাজ করতে পারে।
খুব বেশি কন্ডিশনার নয়
শ্যাম্পুর পর খুব বেশি কন্ডিশনার লাগানোর দরকার নেই।
যতটা দরকার ঠিক ততটাই লাগ।
খুব বেশি কন্ডিশনার চুলকে অয়েলি করে তোলে। এবং তেলতেলে দেখতে লাগে।
স্ক্যাল্পে কন্ডিশনার নয়
কন্ডিশনার শুধু চুলে লাগাবার জন্য। স্ক্যাল্পে কিন্তু কখনোই অ্যাপ্লাই করা উচিত নয়।
এতে চুলের গোঁড়া বন্ধ করে দেয়। স্কাল্প আরও বেশি অয়েলি হয়ে যায়।
খুব বেশি সময় কন্ডিশনার রাখবেন না
কী ভাবছেন কন্ডিশনার অনেকক্ষণ লাগিয়ে রাখলে, চুল অনেক বেশি ময়েশ্চারাইজড থাকবে?
এটা একদমই ভুল ধারনা। বরং কন্ডিশনার অনেকক্ষণ লাগিয়ে রাখলে, চুল চ্যাটচ্যাটে ও তেলতেলে হয়ে যায়।
ডিপ কন্ডিশনিং
কন্ডিশনার অনেকক্ষণ লাগিয়ে রাখবেন না ঠিকই। কিন্তু প্রতি দু সপ্তাহ অন্তর চুলকে ডিপ কন্ডিশনিং করা দরকার।
সুতির তোয়ালে
এটা অনেকেই জানেন না, কিন্তু গোসল করে যেকোনো কাপড় দিয়ে মাথা মোছা উচিত নয়।
মাথা মুছুন সবসময় সুতির নরম তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে।
যেকোনো সিনথেটিক কাপড়, চুল তো শুকনো করে কিন্তু তার সাথে চুলের স্বাভাবিক ময়েশ্চারকেও টেনে নেয়।
ঘষে মুছবেন না
জোরে ঘষে ঘষে চুল মোছা কিন্তু খুব খারাপ। এতে খুব বেশি চুল পড়ে।
তাই চুলকে ভালো রাখার জন্য আসতে চুল মুছবেন।
প্রাকৃতিকভাবে চুল শুকান
তাড়াতাড়ি চুল শুকোতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করছেন? এটাই কিন্তু চুল ওঠার একটা অন্যতম কারন।
ড্রায়ার এর অতিরিক্ত তাপ চুলের মারাত্মক ক্ষতি করে। তাই প্রাকৃতিক ভাবে পাখার হাওয়ায় চুল শুকান।
ভেজা চুলে একদমই জট ছাড়াবেন না
অনেকেই গোসল করে, চুল না শুকিয়েই চুল আঁচড়ান।
তার ফলে আরও জট পড়ে চুলে। তাই অন্তত চুল অনেকটা শুকিয়ে গেলে তারপরই আঁচড়ান।
কন্ডিশনার লাগানোর সময়ও জট ছাড়াতে পারেন
শ্যাম্পুর পর যখন কন্ডিশনার লাগান, তখনও জট চুলের জট ছাড়াতে পারেন।
চুলের অতিরিক্ত জট ছাড়াতে এটা খুব ভালো একটা উপায়। কারন এই সময় খুব সহজেই জট ছেড়ে যাবে চুলের।
শুকনো চুলে লাগান লিভ ইন কন্ডিশনার
গোসলের পর জটমুক্ত বা ফ্রিজ ফ্রী চুল পাবার উপায় হচ্ছে লিভ ইন কন্ডিশনার।
গোসলের পর চুল শুকিয়ে নিয়ে, ব্যবহার করুণ লিভ ইন কন্ডিশনার।
যেটা গোসলের পর চুলকে রাখবে ফ্রিজ ফ্রি। তবে অ্যালকোহল ফ্রী কন্ডিশনারই বেস্ট।
কারন অ্যালকোহল চুলকে ড্রাই করে তোলে।
খুব বেশি হেয়ার স্টাইলিং বা প্রোডাক্ট একদম নয়
চুলে খুব বেশি হেয়ার জেল, স্প্রে ব্যবহার না করাই ভালো।
বাজারের এইসব হেয়ার স্টাইলিং প্রোডাক্ট ক্যামিকালের ব্যবহার হয় সেটাতো জানেনই।
আর এইসব ক্যামিকাল আপনার কোমল চুলের জন্য নিশ্চয়ই ভালো নয়।