লম্বা চুলের স্বপ্ন প্রায় সবারই থাকে। চুলকে সুন্দর ঘন লম্বা করার জন্য আমরা অনেক পার্লার ট্রিটমেন্ট, ও প্রোডাক্ট ব্যবহার করি।
কিন্তু সবসময় ভালো ফল পাই না। কি সমস্যা এটাই তো? এইসব করার পরও কিন্তু আরও কিছু বাকি থেকে যায় সেটি আমরা তেমন করিনা।
সেটি হলো পার্লার ট্রিটমেন্ট নেওয়া হোক না কেন, বাড়ি ফিরে এসে কিন্তু চুলকে সঠিক ভাবে যত্ন করতে হবে। বাড়িতেও চুলের পরিচর্যা করা দরকার।
লম্বা চুলের জন্য কিছু কিছু জরুরি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। তাহলেই সুন্দর লম্বা চুল পাওয়া সম্ভব। কী সেই বিষয়? তাহলে জেনে নেয়া যাক।
চুল মূলত একটি প্রোটিন। যেটি ত্বকের ভেতরে ফলিকল থেকে বেরিয়ে আসে এবং কেরাটিন দিয়ে তৈরি।
এই ফলিকলের নীচে থাকে কিছু বিশেষ জায়গা যেখানে থাকে চুলের বিশেষ কিছু অংশ। যেখানে পুষ্টি জমা হয়। এর থেকেই নতুন চুল গজায়।
চুলের প্রধান উপাদান হলো কেরাটিন। এটি খুব সূক্ষ্ম হয়। তাই সঠিক ভাবে যত্ন করতে হয়। চুল লম্বা করার জন্য কিছু বিষয় রোজ মেনে চলা দরকার।
প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
চুলকে লম্বা বানানর প্রচেষ্টা আগে ভেতর থেকে করতে হবে।
কারণ আমরা যদি শুধু ওপরে ভালো প্রোডাক্ট ব্যবহার করি, আর ভেতরে সেই অনিয়মিত খাবার খাই তাহলে কোন লাভ নেই।
তাই প্রয়োজন হেলদি ডায়েট। খাবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিনস, মিনারেলস দরকার।
যেমন খাবারে, ভিটামিন- এ, বি, সি ও ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, কপার এগুলি দরকার।
এর জন্য দুধ, পনির, দই শাকসবজি বিশেষত পালংশাক, ক্যাপসিকাম, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, ওটস্,। এছাড়াও মাছ, অলিভ তেল, বিনস্ এগুলি বেশি করে খেলে ভালো।
কারণ এতে আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যেটি সুন্দর চুলের জন্য একটি বিশেষ উপাদান।
মাথার তালুতে তেল মালিশ করা
সুন্দর চুলের জন্য আরেকটি দরকারি টিপস হলো মাথার তালু বা স্ক্যাল্পে ভালো করে তেল মালিশ করা।
বিশেষত নারকেল তেল চুলের গ্রোথের জন্য উপকারি। কিন্তু তেলকে ভালো করে হালকা হাতে ম্যাসাজ করা দরকার।
গোসল করতে যাবার অন্তত একঘণ্টা আগে। বা আগের দিন রাতে হলে আরও ভালো।
স্কাল্পে তেলকে প্রবেশের সময় দিতে হবে। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। তার ফলে স্ক্যাল্প পুষ্টি লাভ করে।
চুল সঠিক ভাবে আঁচড়ানো
চুলকে সঠিক ভাবে আঁচড়ানো দরকার। সঠিক ভাবে মাথার সব দিক থেকে আঁচড়ানো দরকার।
এবং মাথা উল্টো করে ওপর থেকে নীচের দিকেও আঁচড়ানো খুবই ভালো। কাঠের চিরুনি ব্যবহার করলে বেশি ভালো।
কারণ এখন প্লাস্টিকের ক্ষতিকারক উপাদান থেকে খুব ক্ষতি হয়। তাই প্লাস্টিকের চিরুনির বদলে ব্যবহার করুন কাঠের চিরুনি।
স্ট্রেস ফ্রি রাখুন নিজেকে
বর্তমানের অকারন অতিরিক্ত টেনশন, মানসিক চাপ কিন্তু শরীরের সাথে সাথে চুলেরও ক্ষতি করে। এর ফলে মারাত্মক ভাবে চুল পরে।
স্ট্রেস চুলের বৃদ্ধির প্রক্রিয়া কে ব্যাহত করে। তার ফলে অকালে চুল ঝরে যায়।
তাই চুলকে ভালো রাখতে স্ট্রেস ফ্রি থাকাটা খুবই দরকার। এর জন্য প্রতিদিন মেডিটেশন খুব উপকারি।
প্রতিদিন শ্যাম্পু করবেন না
স্কাল্পকে পরিষ্কার রাখার জন্য শ্যাম্পু করা দরকার। কিন্তু অতিরিক্ত শ্যাম্পু আবার চুলের জন্য ভালো না।
কারণ শ্যাম্পু করার ফলে স্ক্যাল্প খুব শুকিয়ে যায়। সেই জন্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে বলা হয়।
তাই খুব বেশি শ্যাম্পু চুলের প্রাকৃতিক তেলকে শুষে নেয়। তাই সপ্তাহে দু থেকে তিন দিনই যথেষ্ট।
আর শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার লাগানো দরকার। শ্যাম্পুর পর শুষ্ক চুলকে কন্ডিশনিং করা খুবই জরুরি। নাহলে চুল খুব রুক্ষ হয়ে যায়।
হেয়ার প্যাক
সপ্তাহে একদিন হেয়ার প্যাক লাগালে চুল ভালো থাকে। বাড়িতেই বানানো যায় কিছু ঘরোয়া প্যাক। এছাড়াও সপ্তাহে দু দিন তেল মাখা দরকার।
চুল শুকোবার জন্য যতটা পারা যায় কম হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলে ভালো।
এছাড়াও বিভিন্ন রকম হেয়ার স্টাইলারের ব্যবহার কম করতে হবে।
কারণ এগুলির তাপ চুলের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এবং এর সঙ্গে রয়েছে হেয়ার ডাই এর ব্যবহার।
ক্যামিকাল যুক্ত হেয়ার ডাই চুলের ভীষণ ক্ষতি করে।
চুলকে লম্বা সুন্দর করার জন্য এই কয়েকটি টিপস মাথায় রাখা খুবই জরুরি।