Search
Close this search box.

চুলের সমস্যায় ৬টি ঘরোয়া সমাধান

চুল থাকবে, আর চুলের সমস্যা থাকবে না—এ তো হতেই পারে না! চুলের সমস্যা এখন আমাদের প্রায় রোজকার একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাস্তাঘাটে বেরোলেই এত দূষণ, ধোঁয়া, ধুলো যে চুল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে।

অথচ রোজ রাস্তায় না বেরোলেই নয়! কাজে তো যেতেই হবে!

তাছাড়া আমাদের বর্তমান লাইফস্টাইল, স্ট্রেস, টেনশন, খাবারের ভুলভাল অভ্যেস—এসবও কিন্তু চুল পড়া বা চুল খারাপ হয়ে যাবার একটা প্রধান কারণ।

খুশকির কারণেও চুল পড়ে যায়। এমনিতে দিনে সাধারণত ৫০-১০০ টা চুল পড়া নর্মাল ব্যাপার।

এছাড়া বর্ষাকাল, শীতকাল এইসমস্ত বিশেষ ঋতু এলেই চুল পড়া যেন দ্বিগুণ হয়ে যায়।

সকালে উঠেই হয়ত অভ্যাসেই চোখ চলে যায় আপনার মাথার বালিশের দিকে।

গুনতে থাকেন কটা চুল পড়লো বা গোসল করার পর চুল আঁচড়াতে গেলেই হয়ত আপনার হৃৎকম্প শুরু হয়!

ভাবেন কোন শ্যাম্পুটা ইউজ করলে রেহাই মিলবে চুল পড়ার হাত থেকে!

এই যদি আপনার হাল হয়, তাহলে এই টিপসগুলো রইলো আপনার জন্য। তাই চটপট জেনে নিন চুলের সমস্যার মুশকিল আসান টিপস।

মেথি

মেথি কিন্তু আপনাকে চুল পড়ার সমস্যার হাত থেকে সহজে মুক্তি দিতে পারে।

মেথিতে প্রচুর পরিমাণে হরমোন অ্যান্টেসিডেন্টস থাকে যা চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় ও চুলের গ্রন্থিকে পুনর্নির্মাণ করে।

এছাড়া মেথির প্রোটিন ও নাইকোটিনিক অ্যাসিড চুলের বৃদ্ধি ঘটায় ও চুলকে মজবুত করে। মেথিকে জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন।

তারপর পরদিন মিক্সারে মসৃণ একটা পেস্ট বানিয়ে চুলে ভালো করে লাগান। ৩০-৪০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

একমাস ধরে এটা যদি সপ্তাহে ২-৩ দিন করেন দেখবেন আপনার নতুন চুল গজাচ্ছে আবার চুল পড়াও অনেকটা বন্ধ হয়েছে।

পেঁয়াজের রস

পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে যা কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে।

এছাড়া সালফার চুলের গ্রন্থিতে রক্ত সঞ্চালনকে বাড়ায় ও প্রদাহকে কমায়।

পেঁয়াজের রসে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি থাকে যা খুশকি ও ব্যাকটেরিয়াকে দূর করে চুলকে সুস্থ রাখে।

পেঁয়াজ বেটে তার রস মাথায় ভালো করে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

সপ্তাহে ২ দিন এটা করুন দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাচ্ছেন।

আর রসুনের রসেও প্রচুর পরিমাণ সালফার থাকে। তাই রসুনের রসও মাথায় লাগাতে পারেন।

মেহেদী বাটা

মেহেদী সাধারণত চুলকে রঙ করার কাজে ব্যবহৃত হলেও কিন্তু চুলকে গোড়া থেকে শক্ত করে।

সর্ষের তেলের সাথে মেহেদী বাটা মিশিয়ে মাথার চুলে ভালো করে লাগান।

শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার এটা করে দেখুন। ফল পাবেনই।

অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা কিছু এনজাইম চুলের বাড়ে সাহায্য করে। খুশকি, ইচিঙের সমস্যাতেও অ্যালোভেরা উপকার দেয়।

অ্যালোভেরার অ্যালকালাইন প্রপার্টি চুলের স্বাভাবিক পি.এইচ. লেভেলকে বজায় রাখে। অ্যালোভেরা পাতার থেকে রস বের করে তা মাথায় ও চুলে ভালো করে লাগান।

৪০-৪৫ মিনিট রাখার পর ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩-৪ বার নিয়ম করে করে যান।

দেখবেন খুব তাড়াতাড়িই আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

জবাফুল

শুনে অবাক হচ্ছেন তো? কিন্তু জানেন কি, জবাফুল চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায়।

কম বয়সে যদি মাথার চুল সাদা হতে শুরু করে তাহলে জবাফুল আপনার কাজে লাগবে।

তাছাড়া খুশকি, চুল পড়া ইত্যাদি সমস্যার সমাধানেও জবাফুল অব্যর্থ।

কয়েকটা জবাফুল নিয়ে থেঁতো করে সর্ষের তেলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে চুল ও চুলের গোড়ায় স্কাল্পে ভালো করে মাখান।

এক বা দেড়ঘণ্টা মতো রেখে হালকা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

সপ্তাহে অন্তত ২ দিন করুন এটা। চুলের সমস্যা থেকে চটজলদি রেহাই মিলবে।

অয়েল ম্যাসাজ  

এছাড়া অয়েল ম্যাসাজ তো আপনাকে করতেই হবে। চুলে পুষ্টির অভাব কিন্তু চুলকে ভেতর থেকে রুক্ষ করে দেয়।

তার ফলে খুশকি বাড়ে। চুল পড়াও বেড়ে যায়। আপনাদের যাদের রোজই বাড়ির বাইরে বেরোতে হয়, তাদের পক্ষে চুলে রোজ তেল মাখাটা মুশকিলের।

কিন্তু তাও সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন চুলে তেল মাখুন।

নারকেল তেল বা বাদাম তেল—ইত্যাদিতে ভিটামিন ই থাকে যা চুলে ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে নরম করে তোলে।

তাই যেকোনো ভিটামিন ই যুক্ত তেল হালকা গরম করে নিয়ে চুলে ও স্কাল্পে ভালো করে ৫-১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন।

ম্যাসাজ মাথায় রক্ত সঞ্চালনকে বাড়ায় ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। তেল কিন্তু খুশকিকেও কমায় আর চুল পড়া বন্ধ তো করেই।

তাই চুলে যাই করুন না কেন, চুলের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মাথায় তেল মালিশ খুবই জরুরি।

নিয়ম করে এটা করে যান। সারারাত তেল মাথায় লাগিয়ে পরদিন শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

দেখবেন উপকার পাচ্ছেন। আর প্রচুর জল ও শাক-সবজি খান।

ট্রাই করে দেখতে পারুন এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো। আশা করি, নিরাশ হবেন না।