Search
Close this search box.

চুল ঘন ও কালো করতে ৩টি হারবাল অয়েল

চুল নিয়ে চিন্তার কম থাকে না যখন চুল পড়া শুরু হয়। আমাদের যত্নের অভাবেই চুলের এই বেহাল দশা হয়ে যায়।

চুল ঠিক মতো খাদ্য না পেলে এবং যত্নের অভাবে চুল পড়া শুরু হয়, গ্রোথ কমে যায়, রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ হয়ে উঠে। 

চুলের বৃদ্ধি ও সৌন্দর্যের জন্য প্রয়োজন যথাযথ পুষ্টিকর খাদ্য।

সেইসাথে নিয়মিত সঠিক পরিচর্চা।

আমাদের আশেপাশে এমনিই অনেক পলিউশন।

তাছাড়া খাদ্যে ভেজাল তো রয়েছেই।

আর এই অবস্থায় চুল পড়া ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। 

চুলের যত্ন নিতে হলে আপনার নিজের খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি চুলে নিয়মিত তেল দিতে হবে। 

চুলের জন্য তেলের গুরুত্ব 

আমাদের শরীর যেমন পানি না পেলে ডিহাইড্রেট হয়ে যায়, তেমনিভাবে চুল হাইড্রেট রাখার জন্য প্রয়োজন তেল। 

তেল আমাদের চুলকে ময়েশ্চারাইজড রাখতে সাহায্য করে।

আমাদের মাথার ত্বক ড্রাই হয়ে গেলে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে খুশকির সমস্যা লক্ষণীয়। 

তেল আমাদের মাথার ত্বক ড্রাই হওয়া থেকে রক্ষা করে। ফলে খুশকির সমস্যাও দেখা দেয় না।

তাছাড়াও রেগুলার গরম তেলের ম্যাসাজ মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

যার ফলে চুল পড়া বন্ধ হয় ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। 

হারবাল তেলের উপকারিতা

আজকাল কেমিক্যাল যুক্ত সব প্রোডাক্ট আমরা ব্যবহার করি সময় বাঁচাতে।

কিন্তু তা আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।

কেমিক্যাল যুক্ত তৈরি প্রোডাক্ট আমাদের চুলের জন্যও ক্ষতিকর।

তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যেও মারাত্মক।

যা পরবর্তীতে ক্যান্সারের মতো সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।

তাই নিজের তৈরি করা সম্পূর্ণ হারবাল তেল আপনার চুলে পুষ্টি জুগিয়ে চুল রাখবে শাইনি ও হেলদি। 

আসুন এবার জেনে নেই হারবাল তেল তৈরির উপায়।

অ্যালোভেরা অয়েল

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

  • অ্যালোভেরা
  • মেহেদী পাতা
  • কালোজিরা
  • নারকেল তেল
  • অলিভ অয়েল 

যেভাবে ব্যবহার করবেন 

  • কয়েকটি অ্যালোভেরা পাতা নিন। পাতাগুলোকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। 
  • তারপর একটি প্যান নিয়ে নিন।
    কেটে রাখা অ্যালোভেরা পাতা, কিছু মেহেদী পাতা ও কালোজিরা অ্যাড করুন। 
  • এর মধ্যে এককাপ নারকেল তেল আর আধাকাপ অলিভ অয়েল মিক্স করুন। 
  • একটু নাড়া দিয়ে মিশিয়ে নিন।
    এবার চুলার আঁচ মিডিয়াম টু লো তাপমাত্রায় অন করে দিন। 
  • ২০ মিনিট পর দেখে যাবে তেলের মধ্যে সব উপকরণগুলো ফুটতে শুরু করেছে।
    এই অবস্থায় সবচেয়ে কম তাপমাত্রায় রাখুন। 
  • আরো আধা ঘন্টা পর দেখা যাবে সব গুলো উপাদান থেকে রঙ বেরিয়ে এসেছে।
    তেল কিছুটা সবুজাভ রঙ ধারণ করেছে। তাহলে বুঝতে হবে আপনার তেল তৈরি।  
  • চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন। এবার প্যান থেকে নামিয়ে কাঁচের পাত্রে সংরক্ষণ করুন। 

একদিন পরপর এই তেল আপনার পুরো মাথায় আলতো করে ম্যাসাজ করুন।

প্রত্যেকটি উপকরণ পুষ্টিগুণে ভরপুর। যার কারণে মাথার ত্বক হেলদি হবে।

ম্যাসাজ করার কারণে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। 

ফলে নতুন চুল গজাতে আরম্ভ করবে। চুল লম্বা, ঘন ও কালো হবে। 

পরের দিন সকালে অবশ্যই শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে।  

অনিয়ন অয়েল

পেঁয়াজের তেলের গুণাগুণ অনেক। এটি চুলকে গভীরভাবে কন্ডিশনিং করতে সাহায্য করে।

বিশেষ করে যাদের মাথার ত্বক খুব শুষ্ক তাদের জন্য খুবই উপকারী। 

পেঁয়াজের তেল অ্যাপ্লাই করলে চুলের রুক্ষতা দূর হয় এবং চুলের গোড়াও মজবুত হয়। 

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

  • নারকেল তেল 
  • পেঁয়াজ 

যেভাবে ব্যবহার করবেন

  • কয়েকটি আস্ত পেঁয়াজ কয়েক টুকরো করে কেটে নিন।
  • সবগুলো টুকরো একটি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন ভালো মতো। অল্প পানিও মিক্স করা যেতে পারে।
  • একটি সুতি কাপড়ে পেঁয়াজের পেস্ট বা ব্লেন্ড করা পেস্ট নিন। 
  • এবার চিপে চিপে রস বের করুন। একটি বাটিতে সংরক্ষণ করুন। 
  • এরপর একটি প্যানে নিন। কয়েক টেবিলচামচ নারকেল তেল ঢেলে গলিয়ে নিন। 
  • ভালোভাবে লিকুইড ফর্মে চলে আসলে এর মধ্যে পেঁয়াজের রস দিয়ে দিন। 
  • ভালোভাবে জ্বাল দিতে থাকুন।
    কিছুক্ষণ পর ফুটে উঠলে চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা করে নিন। 
  • এই তেল সম্পূর্ণ মাথার ত্বকে অ্যাপ্লাই করুন। 

মেথির বীজের তেল

মেথি অয়েল চুল ঝলমলে করতে ভীষণ কার্যকর। এর সুঘ্রাণ রিল্যাক্স করে তুলতে পারে মূহুর্তেই।

দাদী, নানিরা তাদের চুলের যত্নে মেথির উপরই নির্ভরশীল ছিলেন।

আর আজ আপনি নিজেই  তৈরি করে ফেলতে পারেন মেথির তেল।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

  • ক্যাস্টর অয়েল 
  • আমান্ড অয়েল
  • নারকেল তেল
  • ভিটামিন-ই ক্যাপ
  • মেথি বীজ

যেভাবে ব্যবহার করবেন

  • একটি প্যান এ এককাপ আমন্ড অয়েল, এককাপ নারকেল তেল ও ২ টি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল নিন।
  • ক্যাস্টর অয়েল স্বভাবতই ভারী ও ঘন হয়।
    তাই আধাকাপের কম পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল অ্যাড করবেন।
    চুলা জ্বালিয়ে দিন। এই সবগুলো উপাদান একসাথে মিক্স করুন নেড়ে চেড়ে। 
  • ২/৩ মিনিট পর অ্যাড করুন মেথি বীজের গুড়া।
    এবার চুলার তাপমাত্রা একদম লো হিটে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। 
  • ২০ মিনিট পর এই তেল নামিয়ে আনুন। প্যানে রেখেই ঠান্ডা হতে সুযোগ দিন। 

এই তেল সপ্তাহে অন্তত ৩/৪ দিন ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

তাহলে চুল ঘন ও কালো হবে। চুল পড়া রোধ করবে ও চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।