সিরাম কী?
ফেসিয়াল সিরামগুলো সাধারণত তেল ও পানি ভিত্তিক হয় যা এক বা একাধিক ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ত্বকে পুষ্টি সরবরাহ করে।
আপনি যেকোনো ধরণের বা দুই ধরণের উপাদান মিক্স করে মুখের নির্দিষ্ট অংশগুলিতে ব্যবহার করতে পারেন।
পরিষ্কার করার পরে কিন্তু ময়েশ্চারাইজ করার আগে সিরাম ব্যবহার করা উচিত।
আর যদি আপনার তৈলাক্ত ত্বক থাকে তবে আপনি শুধু সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।
কীভাবে সিরাম ব্যবহার করবেন?
ভাল সিরামগুলি দামি হতে পারে তবে আপনি যেহেতু একবারে কেবল ১-২ টি ফোটা ব্যবহার করেন তাই এইগুলো অনেকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
ত্বক পরিষ্কার এবং টোনিংয়ের পরে দিনে দুবার সিরাম প্রয়োগ করতে ত্বক ভালো থাকলে ও গ্লোয়িং হবে।
আপনার হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা নিন এবং সিরাম শুষে না হওয়া পর্যন্ত আপনার মুখের উপর আলতো চাপ দিন (এটিকে কিছুটা ঘষলে কুঁচকিয়ে যাবে না) যাকে বলে ড্যাব পজিশন।
একবার সিরাম সম্পূর্ণ শুকনো এবং শোষিত হয়ে গেলে, এই উপাদানগুলিকে সিল করতে আপনার প্রিয় ময়েশ্চারাইজার এপ্লাই করুন।
ব্যাস এখন দেখুন এর কার্যকারিতা।
কীভাবে আপনার নিজের জন্য প্রাকৃতিক ভাবে মুখের সিরাম তৈরি করবেন?
মোটা দামের ট্যাগগুলি যদি আপনাকে ভয় দেখায় তবে এই ঘরোয়া উপায়ে বানানোর টিপস গুলো আপনাকে সাহায্য করবে।
এটি কম ব্যয়বহুল, আপনার নিজের ত্বকের জন্য সম্পূর্ণ কাস্টমাইজ যোগ্য এবং কয়েকটি তেল একসাথে মেশানোর মতো সহজ।
ব্রণ থেকে সূক্ষ্ম রেখাগুলি এবং এর মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করে এমন একটি ঘরোয়া রেসিপি দিয়ে ফেস সিরাম তৈরি করতে শিখুন।
বাড়ির তৈরি সিরামগুলি সাধারণত অ্যালোভেরা, গ্লিসারিন বা গোলাপজলের মতো অন্যান্য সাধারণ স্কিনকেয়ার উপাদানের সাথে একটি মুখের তেল একত্রিত করে কাজ করে।
প্রথমে আপনার ত্বক অনুযায়ী সঠিক মুখের তেলটি বেছে নিন
আপনার মুখের ধরণ সম্পর্কে চিন্তা করুন। আপনার ত্বক কি তৈলাক্ত বা শুকনো?
আপনি ব্রণ বা রেডন্যাস এর সাথে লড়াই করছেন?
এই গাইড আপনাকে আপনার ত্বকের ধরণের জন্য সঠিক মুখের তেল বেছে নিতে সহায়তা করতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে
- আঙুরের তেল
- তামানু তেল
- এপ্রিকট কার্নেল অয়েল
সাথে ব্রণেত সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার এমন সিরামের দরকার যা ত্বকের ছিদ্রগুলিতে প্রবেশ করতে পারে এবং প্রদাহযুক্ত বা জ্বালা করা ত্বককে ঠান্ডা ও প্রশান্ত করতে পারে।
ব্রণগুলির জন্য এই মুখের সিরামটিতে জোজোবা, শণ বীজ বা আঙ্গুরের তেল, তিনটি তেল নিতে পারেন যা ব্রণজনিত ত্বকের জন্য আদর্শ, এমনকি আপনার ব্রেকআউট হওয়ার পরেও ব্যবহার করা যাবে।
শুষ্ক কিংবা বয়স্ক ত্বকের ক্ষেত্রে
- রোজশিপ বীজ তেল
- সুইট আমান্ড তেল
- অ্যাভোকাডো তেল
যদি আপনার ত্বক শুষ্ক থাকে তবে রোজশিপ, অ্যাভোকাডো বা সুইট আমান্ড তেল বেছে নিন।
এই অ্যান্টি-এজিং ফেস সিরামটি ব্যবহার করে যা প্রদাহ প্রশমিত করতে পারে, বয়সের দাগগুলিতে লড়াই করতে পারে এবং কোলাজেন উৎপাদন উদ্দীপ্ত করতে পারে।
আপনি রোজশিপ তেলের সাথে আরও একটি সমৃদ্ধ তেল যেমন কুমড়োর বীজেরর সাথেও মিশ্রিত করতে পারেন যদি আপনি কোনও স্কার্শ হাইড্রেট করতে বা বিবর্ণতা সমাধানের জন্য কোন সেরাম সেরামের সন্ধান করছেন।
নরমাল ও কম্বিনেশন ত্বকের ক্ষেত্রে
- জোজোবা তেল
- সূর্যমুখী বীজ তেল
জোজোবা এবং সূর্যমুখী বীজের তেল বেশিরভাগ ত্বকের ধরনের জন্য খুব ভাল কাজ করে।
তারা ত্বককে ভারী বোধ না করিয়ে হাইড্রেট করবে।
বেসিক হোমমেড ন্যাচারাল ফেস সিরাম রেসিপি
ফেসিয়াল স্কিনকেয়ার সিরাম গুলোতে সাধারণত ১% এসেন্সিয়াল ওয়েল থাকবে, যা ৩/৪ চামচ ক্যারিয়ার অয়েলের এর সাথে এসেন্সিয়াল ওয়েল ১/২ ফোঁটা এড করে ব্যবহার করা হয়।
- ক্যারিয়ার তেল ১ টেবিল চামচ
- অন্য ক্যারিয়ার তেল বা অন্য কোনও তরল উপাদান ১ টেবিল চামচ
- এসেন্সিয়াল ওয়েল ৬-৯ ফোঁটা
নির্দেশনা
ফানেল দিয়ে এই তেলের মিশ্রণ টি একটি স্প্রে বোতল বা যেকোনো ছোট বোতলে উপাদানগুলি ঢেলে নিন।
প্রতিটি ব্যবহারের আগে ভালভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে মিক্স করে নিন এবং পরিষ্কার ত্বক এ এপ্লাই করুন।
ফেসিয়াল সিরাম বানানোর উপাদান ও নিয়ম
১. দাগযুক্ত ও বিবর্ণ ত্বকের ক্ষেত্রে
- ১ টেবিল চামচ রোজশিপ তেল
- কুমড়োর বীজ তেল ১ টেবিল চামচ
- ৬/৭ ফোটা ফ্র্যাংকেন্সিস এসেন্সিয়াল ওয়েল
২. সংবেদনশীল ত্বক বা সেন্সিটিভ ত্বক এর ক্ষেত্রে
- ১ টেবিল চামচ জোজোবা তেল
- ৪/৫ ফোটা ক্যামোমিলি এসেন্সিয়াল ওয়েল
৩. শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে
- ১ টেবিল চামচ আর্গান ওয়েল
- সুইট আমান্ড ওয়েল ১ টেবিল চামচ
- ৬/৯ ফোটা জেরানিয়াম এসেন্সিয়াল ওয়েল
৪. ব্রণ যুক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে
- ১ টেবিল চামচ তামানু তেল
- শণের বীজ তেল ১ টেবিল চামচ
- ৬/৯ ফোটা টি-ট্রি এসেন্সিয়াল ওয়েল
৫. তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে
- ১ টেবিল চামচ জোজোবা তেল
- গ্রেইপ সিড তেল ১ টেবিল চামচ
- ৬/৮ ফোটা রোজমেরি এসেন্সিয়াল ওয়েল
বিভিন্ন তেলগুলো নিজের ত্বক অনুযায়ী বিভিন্ন সুপার শপ থেকে কিনে এনে বানিয়ে ফেলতে পারবেন খুব সহজেই। আর অবশ্যই একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এসেন্সিয়াল ওয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে। এসেন্সিয়াল ওয়েল অন্য ডিরেক্ট ত্বকের মধ্যে ব্যবহার করা যায় না। যে কোন কেরিয়ার ওয়েলের সাথে মিক্স করে সেটি এপ্লাই করত্র হবে। আর অবশ্যই এলার্জি টেস্ট করে এপ্লাই করতে হবে।