স্বাস্থ্যের দীপ্তিতে ভরপুর, ঝলমলে, মসৃণ একমাথা চুলের আকাঙ্ক্ষা কার না থাকে! আর সেই আকাঙ্ক্ষাটুকু মেটানোর জন্য কত কাঠখড়ই না পোড়াতে হয়!
অথচ শুরু থেকে একটু নজর দিলে তেমন চুল পাওয়া মোটেই কষ্টসাধ্য নয়! শুধু কয়েকটা ছোটখাটো, খুঁটিনাটি বিষয়ে নজর দিতে হবে!
যেমন নিয়মিত স্ক্যাল্প আর চুল পরিষ্কার রাখা, পুষ্টিকর, সুষম খাবার খাওয়া, সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলে তেল মাখা আর অবশ্যই ঠিকমতো স্নান করা!
সত্যি বলতে শুধু চুল ঠিকমতো ধৌত করা আর শুকোনোর উপরেও চুলের স্বাস্থ্য ভীষণভাবে নির্ভর করে।
এবং এই দুটো কাজ ঠিকঠাক করতে পারলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চুলে চোখে পড়ার মতো বদল আসবে!
আসলে সুস্থ চুলের গোড়ার কথা হল আর যাই হোক না কেন, চুল পরিষ্কার থাকা চাই! আর তার জন্য চাই নিয়মিত শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং।
কাজেই শ্যাম্পু করার সময় ও তার আগে পরে যদি কিছু নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে শ্যাম্পুর পুরো ফায়দাটা পাবে আপনার চুল। অবাক হচ্ছেন? তাহলে নিজেই জেনে নিন!
শ্যাম্পু করার আগে স্টিম নিন
ঠিক যেভাবে মুখে স্টিম নিলে গভীর থেকে তেলময়লা বেরিয়ে আসে, একই কথা বলা যায় চুলের বেলাতেও!
চুলে স্টিম নিলে চুলের গোড়ায় জমে থাকা সেবাম, খুসকি ও নোংরা আলগা হয়ে উঠে আসে।
একটা তোয়ালে গরমজলে ডুবিয়ে নিংড়ে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। 20 মিনিট রেখে তারপর শ্যাম্পু করতে ঢুকুন।
স্টিম নেওয়া চুল মাসাজ করে নিন
শ্যাম্পু করতে শুরু করার আগে চুলের গোড়ায় গোড়ায় আঙুল চালিয়ে কয়েক মিনিট মাসাজ করে নিলে ময়লাগুলো আলগা হয়ে উঠে আসবে, দুর্বল চুলও উঠে যাবে।
ঠান্ডা জলে শ্যাম্পু করুন
চুলের পক্ষে গরমজল ভীষণ ক্ষতিকর। তাই সবসময় ঠান্ডা বা কুসুমগরম জলই মাথায় ঢালবেন।
গরমজল চুলের স্বাভাবিক তেল নষ্ট করে চুল রুক্ষ করে দেয়, অন্যদিকে ঠান্ডা জল চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ফলে শ্যাম্পু করার পর চুল অনেক বেশি জেল্লাদার আর চকচকে দেখায়।
শ্যাম্পুর গুণমানের কথা মাথায় রাখুন
প্রাকৃতিক বা হার্বাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। অন্য শ্যাম্পুও মাখতে পারেন, কিন্তু দেখে নেবেন তাতে যেন প্যারাবেন বা সালফেট না থাকে।
এই দুটি রাসায়নিকই স্ক্যাল্পে প্রদাহ বা অ্যালার্জির কারণ হয়ে উঠতে পারে, তা ছাড়া ক্যান্সারের কারণ হিসেবেও এই দুটি রাসায়নিককে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তাই প্যারাবেন বা সালফেটমুক্ত অর্গানিক শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন।
শ্যাম্পু লাগাবেন স্ক্যাল্প
আমরা অনেকেই প্রথমে চুলে শ্যাম্পু লাগাই, তারপর গোড়ায় বা স্ক্যাল্পে মাখি। চুল শুকনো নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ার বড়ো কারণ এটি।
চুলে শ্যাম্পু লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই চুলের স্বাভাবিক তেলের আস্তরণটি নষ্ট হয়ে যায়, চুল রুক্ষ বিবর্ণ হয়ে পড়ে।
তাই শ্যাম্পু শুধুমাত্র স্ক্যাল্পেই লাগাবেন, ভালো করে মাসাজ করে ফেনা করে নেবেন। সেই ফেনাই বাকি চুলে লেগে চুল পরিষ্কার রাখবে।
শ্যাম্পুর সময় হালকা মাসাজ করুন
শ্যাম্পুতে ফেনা তোলার জন্য আঙুলের ডগা দিয়ে চুলের গোড়ায়, মাথার তালুতে কোমলভাবে মাসাজ করুন।
স্ক্যাল্পে জমে যাওয়া ময়লা সব উঠে আসবে। তা ছাড়া মাসাজের ফলে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন হবে, ফলে চুলের গোছও ভালো থাকবে।
প্রতিদিন শ্যাম্পু নয়
বেশিরভাগ শ্যাম্পুতেই কিছু না কিছু কেমিক্যাল থাকে যা রোজ ব্যবহার করলে চুল রুক্ষ আর কর্কশ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
সপ্তাহে দু’বার, বড়োজোর তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করবেন না।
অনেকক্ষণ ধরে শ্যাম্পু করবেন না
ভেজা অবস্থায় চুল খুব স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকে, সামান্য এ দিক ও দিক হলেই তা ভেঙে ঝরে যেতে পারে।
তাই বেশিক্ষণ ধরে শ্যাম্পু করবেন না, তাতে চুল খুব দুর্বল হয়ে পড়বে। চুল ভেজানোর পর ১৫ মিনিটের মধ্যে শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং, দুটোই সেরে ফেলুন।