অফিস হোক বা কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে গোসল সেরে নেওয়ার পর মেয়েরা যে সমস্যার মুখোমুখি হন, তা হল চুল শুকানো।
এই চুল শুকিনে নেওয়াটা এমন একটা কাজ যা করতে অনীহা বোধ করেন অনেকেই।
অনেকে আবার এও মনে করেন, এর থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, যেমন মেকআপ- ব্যাগ গোছানো ইত্যাদি।
কিন্তু গোসলের পর বা বৃষ্টিতে ভেজার পর চুল শুকিয়ে নেওয়াটা খুবই প্রয়োজনীয়।
ভেজা চুল ঠিকমত না শুকালে হেয়ার ড্যামেজ হয়ে যায়।
চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে অনেক বেশি।
তাই আপনাদের জানাবো সহজে এবং সঠিক পদ্ধতি মেনে চুল শুকিয়ে নেওয়ার কিছু সহজ উপায়।
১) আপনার প্রিয় তোয়ালেকে বিদায় জানান
গোসলের পরই মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে চুল শুকিয়ে নেওয়ার পদ্ধতিই অ্যাপ্লাই করেন।
কিন্তু বিশ্বাস করুন তোয়ালের চেয়েও অনেক বেশি পানি শোষন করতে পারে পেপার তোয়ালে।
তোয়ালে দিয়ে চুল ঘষলে চুলে ব্রেকেজ-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার ফলে চুল অকালে ঝড়ে যেতে পারে।
তাই ঘষে ঘষে চুল শুকানোর পরিবর্তে, তোয়ালে পেঁচিয়ে চুল শুকানোর অভ্যাস করুন।
২) সিরাম অ্যাপ্লাই
চুলের পুষ্টির জন্য অনেকেই সিরাম অ্যাপ্লাই করেন।
কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে, চুল তাড়াতাড়ি এবং ভালো করে শুকিয়ে নেওয়ার জন্য চুলে হেয়ার সিরাম অ্যাপ্লাই করাটা বিশেষভাবে জরুরী।
এর ফলে চুলের জট খুব সহজেই ছেড়ে যায় এবং চুলের ভেতরে ভালো করে বাতাস চলাচল করতে পারে। ফলে চুল শুকোবেও তাড়াতাড়ি।
৩) বাথরুমে চুল শুকোনো নয়
অনেকে গোসলের পর বাথরুমেই চুল শুকনো করার চেষ্টা করেন।
কিন্তু তাতে আখেরে সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই হবে না।
কারণ বাথরুমের আর্দ্রতার জন্য গোসলের পরেও সেখানে থাকলে চুল শুকোতে দেরি হতে পারে।
এর জন্য বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে বা পাখার হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন।
৪) গোড়া থেকে শুরু করুন
চুল শুকোনোর জন্য সবার আগে চুলের গোড়া শুকিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
কারণ চুলের গোড়ায় বসে থাকা জল শুকোতে অনেকটা সময় লাগে।
এর জন্য চুলের গোড়ার জল ভাল করে শুকিয়ে নিন।
অর জন্য পাখার তলায় বসুন এবং বাড়িতে টেবিল ফ্যান থাকলে টেবিল ফ্যানের সামনে বসুন।
এবার আঙুল দিয়ে চুলের গোড়াগুলো ফাঁক করে দিতে থাকুন।
এর ফলে চুলের গোড়ায় সরাসরি হাওয়া ঢুকবে। আর গোড়া তাড়াতাড়ি শুকোলে বাকি চুল শুকোতে বেশি সময় লাগবে না।
৫) রাফ ড্রাই
আপনি যদি সেলিব্রিটি হেয়ার স্টাইলিস্টদের লেখা পড়েন, তাহলে একটা টার্ম আপনারা অনেকেই শুনে থাকবেন তা হল ‘রাফ ড্রাই’।
বড় বড় সব রেড কার্পেট লুকের জন্য সেলিব্রিটি হেয়ার স্টাইলিস্টরা এই রাফ ড্রাই পদ্ধতি অবলম্বন করে।
রাফ ড্রাই-এর সহজ অর্থ হল হাতের আঙুলের সাহায্যে চুলের গোড়া ফাঁকা ফাঁকা করে দিয়ে চুলে ব্লো-ড্রাই করা।
যখন আপনার চুল ৪০ শতাংশ শুকনো হয়ে যাবে, তখন আবার ট্রাডিশনাল ‘ব্লোআউট’ পদ্ধতিতে চুল ব্রাশ করে নিন।
৬) সঠিক সরঞ্জামের ব্যবহার করুন
ড্রায়ারে চুলের ক্ষতি হয়, কিন্তু একান্তই যদি হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করতে হয়, তাহলে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ড্রায়ারটি কমপক্ষে ১৮০০ ওয়াটের হয়।
এর চেয়ে কম হলে প্রোডাক্টের মান মোটেও ভালো নয়। আর এতে দ্রুত চুল শুকনো করাও সম্ভব নয়।
৭) চুল শুকোনোর সময় যে ভুলগুলি কখনোই করবেন না
- হেয়ার কেয়ার এক্সপার্টরা বলেন পুরোপুরি ভেজা চুলে কখনো ড্রায়ার দেবেন না। চুল পাখার হাওয়ার ৮০ শতাংশ শুকিয়ে যাওয়ার পরই ব্লো-ড্রাই করুন।
- একবারেই সমস্ত চুলে ব্লো-ড্রাই করার প্রবণতা অনেকেরই থাকে। কিন্তু সেটা করলে চুল কখনওই তাড়াতাড়ি শুকোনো সম্ভব নয়। চুল সর্বদা একাধিক ভাগে ভাগ করে নিয়ে পার্ট বাই পার্ট শুকিয়ে নিন। তাড়াতাড়ি হবে।
- চুল শুকোনোর জন্য তোয়ালে বা গামছা দিয়ে চুল ঝাড়েন অনেকে। কিন্তু বিশ্বাস করুন এতে চুলের জল ঝড়লেও চুলের অনেক ক্ষতি হয়, চুল রাফ হয়ে যেতে পারে। তাই এমনটা কখনোই করবেন না।
- ভেজা চুলে ঘুমালে চুল পড়ে। চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। এতে সহজেই চুল পড়ার হার বৃদ্ধি পায়।
- ভেজা চুল কখনোই আঁচড়াবেন না। ভেজা চুল আঁচড়ালে জটের কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত দ্বিগুণ বেশি চুল পড়ে।