ঘর সাজাতে কার না ভালো লাগে?
সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে বাসায় এসে খানিকটা প্রশান্তি পাওয়ার যায় এমনভাবে সাজানোর চেষ্টা করা উচিৎ।
ঘর সাজানো নিয়ে সবারই কম বেশি নানা চিন্তা মাথায় থাকে।
নিজের বাড়ি বা ভাড়া বাড়ি, আপনি থাকছেন সেটাকে রুচিসম্মত করতে আপনি কিছু পদক্ষেপ নিয়ে গড়ে তুলতে পারেন সহজ ও সুন্দর।
কি রং করবে? কিভাবে সোফা সেট করবে? ডিজাইন সহ নানা বিষয়।
কিছু ছোট ছোট চিন্তা মাথায় রেখে খুব সুন্দরভাবে ঘর সাজিয়ে ফেলা সম্ভব। সেগুলো জানাতে আজকের ব্লগ।
যে কৌশল অবলম্বন করে ঘর সাজাতে পারেন
১. দেয়ালের জন্য হালকা রং পছন্দ করুন
একটি ঘর সাজানোর প্রথম কাজ হলো তার ঘরের দেয়ালের নিউট্রাল বা হালকা রং করা।
হালকা বেইজ বা ধূসর রঙের দেয়ালের সাথে ঘরের ফার্নিচার আপনি খুব সহজেই বাছাই করতে পারবেন কারণ হালকা রঙের দেয়ালের সাথে যেকোনো ধরণের ফার্নিচার মানানসই।
তাছাড়াও হালকা রং যেকোনো ঘরকে বড় দেখায় আর গাঢ় রং ঘরকে ছোট দেখায়।
হালকা রং ঘরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে তাতে ঘর আলোকিত ও সুন্দর লাগে।
নিজের ঘর কে এলিগ্যান্ট আর হেলদি লুক দিতে হালকা রং যেমন ধূসর, হালকা বাদামী, অফ হোয়াইট এই ধরনের রং গুলোই বাছাই করা শ্রেয়।
২. ওয়াল স্টিকার
এখনকার যুগের নতুন ট্রেন্ড হচ্ছে ওয়াল স্টিকার।
বাজারে বিভিন্ন মানের ও বিভিন্ন ধাচের ওয়াল স্টিকার পাওয়া যায়।
সিঙ্গেল রং থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ডিজাইনের ওয়াল স্টিকার গুলো সবার ই মোটামুটি পছন্দ আর খুবই বাজেট ফ্রেন্ডলি।
ওয়াল স্টিকার গুলো ঘরের চার দেয়ালের জন্য পছন্দ না করে ঘরের এক কোণকে পছন্দ করুন।
ঘরের একটা কোণা কে হাইলাইট করুন। একটি সাইডে তুলনামূলক কম ফার্ণিচার বসিয়ে ওয়াল স্টিকার কে হাইলাইট করুন।
আপনার ঘরের সাথে মানানসই এমন ওয়াল স্টিকার বা কন্ট্রাস্ট হিসেবেও পছন্দ করে নিয়ে মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন।
৩. প্রাকৃতিক বা আর্টিফিশিয়াল প্লান্টস
ঘর সাজাতে ফুল ও গাছের জুরি নেই। সেটা প্রাকৃতিক হোক বা আর্টিফিশিয়াল। সবটাই ঘরের সৌন্দর্য অত্যাধিক বাড়িয়ে তোলে।
গাছপালা অন্যান্য সাজানোর জিনিসের তুলনায় কিছু কম দাম কিন্তু এর মনকাড়া সৌন্দর্য একটুও কম নয়।
এর বিভিন্ন রঙের ফুল পাতা মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়।
আর্টিফিশিয়াল গাছপাতা টেকসই হলেও ইনডোর প্লান্টস ঘরের জন্য খুব বেশি ভালো হবে।
এটি ঘরের সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি ঘরে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করে।
তাছারা কিছু কিছু ইনডোর প্লান্টস আছে যেগুলো ঘর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৪. সোফা সেট
ঘরের সোফা এমন ভাবে এরেঞ্জ করতে হবে যাতে এটি যেকোনো ধরণের কথোপকথন করতে খুব সহজ ও সুবিধে হয়।
যখন আপনি আসবাবটি আপনার বসার ঘরে রাখেন, তখন ভারসাম্য এবং ঘনিষ্ঠতা হয় এমন দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সোফাগুলো এমন ভাবে সাজাতে হবে যেনো একজনের মুখোমুখি অপরজন থাকে আর মাঝে একয়ি ছোয় টেবিল থাকে।
বা একটি টেবিলকে ঘিরে চার দিকে চেয়ার বা সোফা থাকে এমনভাবে। কিছু টা ইংরেজি অক্ষর ‘U’- শেইপ এর মত।
আরেকটা ভুল সবাই করে তা হলো সোফা দেয়ালের সাথে লাগিয়ে বসানো।
সবাই মনে করে এভাবে করলে ঘর বড় লাগবে।
কিন্তু দেয়াল থেকে একটু সরিয়ে সামনের দিকে বসালে মানে ফ্লোটিং বা ভাস্যমান সিস্টেমে রাখলে ঘর বড় দেখাবে।
৫. ছাদ বড় বা উপরের দিকে আছে এমন দেখানোর ট্রিকি উপায়
আপনার ঘরের ছাদ নীচের দিকে থাকলে, ঘরটি কম ক্লাস্ট্রোফোবিক করার জন্য এগুলোকে সাদা রং করুন।
জানালার চেয়ে কিছুটা উপরে পর্দা টানিয়ে রাখুন। এক্ষেত্রে লম্বা পর্দা ব্যবহার করবেন।
তাহলে পর্দাগুলো উপর দিক থেকে ঝুলে থাকবে আর ঘরকে মনে হবে খুব লম্বা ও প্রশস্ত।
৬. প্রতিটি ঘরে আয়না রাখুন
আয়না একটি ঘরকে উজ্জ্বল আর বড় দেখানোর ক্ষমতা রাখে।
আয়নাতে আলো প্রতিফলিত হয়ে সেটা সম্পূর্ণ ঘরে পরে আলোকিত করে তোলে।
এতে ঘর উজ্জ্বল ও আলোকিত হয়। কিন্তু সঠিক জায়গায় রাখাটাই হচ্ছে সবচেয়ে ট্রিকি পার্ট।
সঠিক জায়গায় আয়না না বসালে সেটা রাখা বা না রাখা, দুটোই সমার পর্যায়ে চলে যায়।
দেয়ালগুলিতে আয়নাগুলো এমন ভানে রাখতে হবে যেনো সেগুলো জানালার একদম উল্টোদিকে না বরং লম্বালম্বি জুড়ে বসে।
সরাসরি একটি জানালার উলটো দিকে একটি আয়না ঝুলানো হলে সেখানে জানালার আলো প্রতিফলিত হয়ে জানালার দিকেই দিরে যাবে।
৭. সোফার সামনের পায়ে গালিচা বা রাগ দিয়ে সাজান
রাগ বা গালিচা গুলো এমন মাপের নিতে হবে যেন মাঝে টেবিল রেখে চারদিকে সোফা খুব সুন্দরভাবে এর মাপে বসে যায়।
সোফার চার পা যদি সম্পুর্ণ গালিচায় না আসে তাহলে চেষ্টা করতে হবে যেনো কমপক্ষে সোফার সামনের পায়া গুলো রাগের বা গালিচার উপর থাকে আর মাঝে টেবিল তার বরাবর আগের সোফার দিকে মুখ করা সোফার সামনের পা এই গালিচায় থাকে।
৮. ঘরের জানালা যথাসম্ভব বড় রাখা
একটি ঘরে কমপক্ষে দুটো জানালা থাকলে সেটা দেখতেও সুন্দর দেখায় আর ঘরেও আলো প্রবেশ করতে পারে খুব সহজেই।
জানালা বড় রেখে সুন্দর পর্দা দিয়ে সাজিয়ে দিয়ে দেখতে খুব ইলিগ্যান্ট লাগে।
আর জানালার সামনে সিট হলে কথাই নেই। সিটের নিচে কার্ভাড করে উপরে গালিচা বিছিয়ে খুব সুন্দর পরিবেশ বানানো সম্ভব।
৯. ল্যাম্প
বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্প ঘরের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বাড়িতে তোলা।
লম্বা স্ট্যান্ড যুক্ত ল্যাম্প থেকে শুরু করে ছোট আকারের টেবিল ল্যাম্প গুলো সাজিয়ে রাখলে খুব সুন্দর লাগে।
১০. ছবির ফ্রেম
স্মৃতি মাখা ছবিগুলো আপনার ওয়্যারড্রভ বা আলমারিতেই তালাবদ্ধ থাকে দিনের পর দিন।
কিছু সুন্দর মুহুর্তের এই ছবিগুলো অল্প খরচে বাঁধাই করে নিন।
কাঠের ফ্রেমে বাধাই করা ছবি গুলো খুব সুন্দর লুক দিবে।
এবার এইগুলো আপনার মনের মতো করে খোলা দেয়ালে সাজান।
ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার স্মৃতিময় হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্তগুলো আপনার ঘরকে রাঙ্গিয়ে রাখবে।
বিভিন্ন এঙ্গেলে বা বিভিন্ন পজিশনে ছবি গুলো সাজিয়ে নিন।
ব্যাস সৃতিচারণ ও হয়ে গেলো আর ঘরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেলো।