দাগবিহীন গ্লোয়িং ফেইস আর শরীর কে না চায়?
ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সবাই-ই হন্যে হয়ে উঠে এই দাগ কমাতে।
আমাদের চারপাশের আবহাওয়া, প্রচন্ড গরম, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং জীবন যাপন, এসব কিছু প্রভাব ফেলে শরীরের নানা অংশে।
তার মধ্যে ত্বকের উপর ইফেক্টটা সবারই নজরে পড়ে, যা থেকে বের হতে আকাশচুম্বী দামের প্রসাধনী, ক্রিম , ব্লিচ থেকে শুরু করে, নানা পন্থার আশ্রয় নেয় মানুষ।
শুধু ক্রিম ব্যবহার করেই নয়,পার্লার এবং নানা মেক ওভার স্যালনে গিয়ে নানা রকম রূপচর্চা করে শুধুমাত্র এই দাগ উঠাতে।
আবার নানা ধরনের কেমিক্যাল সমৃদ্ধ ক্রিমও মারাত্বকভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলে স্কিনের উপর।
গ্ল্যামোজেন তার পাঠকদের, এসকল সমস্যার সমাধানে নিয়ে এসেছে, ঘরে থাকা খুব এভেইলেবল জিনিসের সমন্বয়ে খুব সহজেই বানানো যায়, এমন গ্লোইয়িং সেরাম।
নিয়মিত ব্যবহারে সহজেই দূর হবে দাগ।
উপকরণ:
১. লেবুর রস ৩ টেবিল-চামচ
২. এলোভেরা জেল ৩ টেবিল চামচ
৩. গ্লিসারিন ২ চা চামচ
৪. গোলাপজল ২ টেবিল চামচ
প্রস্তুত-প্রণালী:
১. প্রথমে একটি পাত্রে লেবুর রস ৩ টেবিল চামচ নিতে ছেঁকে, যেন কোন পাল্প, বিচি, আঁশ না থাকে।
২. এরপর রসের সাথে ৩ চামচ এলোভেরা জেল যোগ করতে হবে।
৩. খুব ভালো করে মিশ্রণটি মিক্সড করতে হবে, যেন কোন দানা না থাকে জেলের।
৪. এরপর গ্লিসারিন যোগ করতে হবে ২ চা চামচ এবং আবার ফেটে নিতে হবে।
৫. এবং শেষে গোলাপ জল ২ চামচ যোগ করে আবারও ভালো করে মিক্সড করতে হবে।
এরপর একটা ঢাকনা-লাগানো পাত্রে মিশ্রণটি নিয়ে, নরমাল ফ্রিজে রেখে দিতে হবে।
এভাবে মিশ্রণটি ২ সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।
ব্যবহারবিধি:
শরীরের যে যে অংশে দাগ, জায়গাটা প্রথমে ভালো করে ধুয়ে , এরপর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
পরিমাণ মতো সেরামটি হাতে নিয়ে মাসাজ করতে হবে ঐ জায়গায়।
সারা রাত লাগিয়ে, সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে। এবং এটা নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে।
সতর্কতাঃ
১. সূর্যের আলোয় এক্সপোজড হয়, এরকম সময়ে- অর্থাৎ দিনের বেলায় ব্যবহার না করাই উত্তম।
২. সেরামটি বানাতে সিরিয়াল অনুযায়ী উপকরণগুলো যোগ করতে হবে।
উলটা পালটা হলে, কিছুটা মানে পরিবর্তন আসতে পারে।
৩. এলোভেরা জেলটি সরাসরি গাছেরটা ব্যবহার করলে ২-৩ দিনের বেশি মেয়াদ থাকবে না।
অপরদিকে, দোকান থেকে কেনা , পিউরিফাইড এলোভেরা জেল ব্যবহারে, সেরামটি ২ সপ্তাহের মতো ভালো থাকবে।
পৌষ্টিক-গুণাগুন:
এলোভেরা জেলে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যা সাহায্য করতে মরা কোষ, আবর্জনা অপসারণ করতে।
ক্ষতিকর কোষগুলোকে রিকোভার করতে।
লেবুর রসে রয়েছে ভিটামিন সি।
এই ভিটামিন ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে বাধা দেয়।
কোন দাগের অঞ্চলে ন্যাচারালি গ্লো করায়।
গোলাপ জল এবং গ্লিয়ারিন শুষ্ক ত্বকের মোয়েশ্চার ঠিক রাখে।
এবং বিবিধ:
যে কোন কেমিক্যাল সেরাম, নানা রাসায়নিক পদার্থে তৈরী।
এসবের মধ্যে ব্লিচ, লেড কিংবা পারদের মতো উপকরণ থাকে।
এ সকল উপকরণ তাৎক্ষণিকভাবে ত্বককে ফর্সা করে বলে, অনেকেই অনেক অনেক বেশি টাকা দিয়ে নানা কোম্পানির থেকে এসব সেরাম কিনেন।
কিন্তু, প্রতিটা কেমিক্যাল বা আর্টিফিসিয়াল সেরামেরই কিছু সাইড ইফেক্ট আছে।
লেড, মার্কারী সমৃদ্ধ এসব সেরাম অনেকদিন ব্যবহার করলে, স্কিন ক্যান্সার কিংবা কিডনির নানা রকম রোগ তৈরীতে সহায়তা করে প্রত্যক্ষভাবে।
অন্যদিকে, কিছুদিন এসব ব্যবহার করে,পরে ছেড়ে দিলে , হিতে বিপরীত হয়।
স্কিনে নানা ধরণের গোটা ওঠে।
কিংবা আগের চাইতেও কালো দাগ বেশি দেখা দেয় সেই ত্বকে।
বয়সের থেকেও বেশি রিংকেলস বা বলিরেখা দেখা দেয় উইড্রল ইফেক্টে।
সে তুলনায়, এসকল ঘরোয়া হারবাল সেরাম, ধৈর্য্য ধরে নিয়মিত ব্যবহারে কোন সাইড ইফেক্ট থাকে না।
তবে যেহেতু এসব একদম হারবাল, এবং লেড বা মার্কারী থাকে না, তাই সাথে সাথে ত্বকের পরিবর্তন দেখা দেয় না।
তবে মাস দুয়েক বা আজীবণ ব্যবহারে আপনি নিজেই অন্যদের চাইতে দেখবেন চেহারার পরিবর্তন।
বুড়োটে ভাব, চামড়া কুঁচকে যাওয়া কিংবা দাগ এসব অন্যদের তুলনায় থাকবে একদম কম।
তার সাথে সাথে সুস্থ থাকবেন, নিরাপদ থাকবেন মারাত্মক সব সাইড ইফেক্ট রোগ থেকে।
যার ফলে, সুস্থ দেহের জন্য ভেতরের সৌন্দর্য বিকশিত হবে গ্লোয়িং ত্বকেও!