ময়েশ্চারাইজার হলো এমন এক ধরণের লোশন বা ক্রিম বিশেষ যা ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক পরিচর্যার ধাপগুলোকে যদি আলাদা আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়, তাহলে একদম শুরুর দিকেই থাকবে ময়শ্চারাইজার।
ক্লিনজিং-টোনিং নিয়ে যারা তেমন মাথা ঘামান না, তারাও ময়েশ্চারাইজারটা অন্তত ঠিকঠাক নিয়ম করে মাখেন।
কিন্তু অনেক সময়ই ময়েশ্চারাইজার মাখলেও তা থেকে তেমন ফল পাওয়া যায় না, মুখ সেই নির্জীব অনুজ্জ্বলই দেখায়। তার মূল কারণ ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ময়েশ্চারাইজার না মাখা।
বিশেষ করে আপনার ত্বক যদি শুষ্ক প্রকৃতির হয়, তাহলে তো ময়েশ্চারাইজার বেছে নেয়ার ব্যাপারে আপনাকে আলাদা করে নজর দিতেই হবে।
ময়েশ্চারাইজারের কাজ কী আসলে?
- শুষ্ক ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করা ময়েশ্চারাইজারের প্রধান কাজ বলা যেতে পারে।
- সব রকমের স্কিনের সাথে সাথে ড্রাই স্কিনের বিশেষ খেয়াল নিয়ে থাকে ময়েশ্চারাইজার।
- স্কিনকে ভেতর থেকে হেলদি রাখে, যাতে বাইরের দূষণ স্কিনের ক্ষতি করতে না পারে সহজে।
- গাছ যেমন জল ছাড়া তার সতেজতা হারায়, ঠিক তেমনই ময়েশ্চারাইজার ছাড়া আমাদের স্কিন তার সতেজতা বজায় রাখতে পারে না।
- ব্রণ, ব্ল্যাক হেডস, মুখে কালো দাগ হওয়া, ছোপ থেকে আমাদের দূরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার দারুণ কাজ করে।
ময়েশ্চারাইজেশনের কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
ময়েশ্চারাইজেশনের কারণে আপনার ত্বক যেভাবে উপকৃত হয়।
- শুষ্কতা রোধ করা
- বয়েসের ছাপ কমানো
- ব্রণের সাথে লড়াইয়ে সহায়ক
- সূর্যের থেকে সুরক্ষা
- স্কিনকে স্মুদ বা প্রশমিত রাখা
ত্বকের উপযোগী ময়েশ্চারাইজার মাখলে তবেই ত্বক থাকবে নরম, মোলায়েম আর হাসিখুশি শুকনো ত্বকের সেরা ময়েশ্চারাইজার বেছে নেবেন কীভাবে? রইলো কিছু বিশেষ পরামর্শ।
নিজের ত্বককে চিনুন
শুকনো ত্বকের জন্য সঠিক ময়েশ্চারাইজারটি বেছে নিতে হলে সবার আগে নিজের ত্বককে ভালোভাবে চিনে জেনে নিতে হবে। শুকনোর পাশাপাশি আপনার ত্বক স্পর্শকাতর কিনা, তাও বুঝে নেওয়া দরকার।
এর সঙ্গেই মাথায় রাখুন আপনার ত্বকের সমস্যাগুলো। ভারী ময়েশ্চারাইজার মাখার পর যদি মুখ ঘামতে শুরু করে, বুঝবেন আপনার আরও হালকা ওয়াটার-বেসড ময়েশ্চারাইজার দরকার।
শুষ্ক ত্বকের জন্য সেরা ময়েেশ্চারাইজার সেটিই যা সহজে ত্বকে শুষে গিয়ে ভিতর থেকে আর্দ্রতার জোগান দেয়।
ত্বকের সমস্যাগুলোর কথা মাথায় রাখুন
শুকনো ত্বক সাধারণত চুলকোয় বেশি, ত্বকের উপরের স্তর ফেটে আঁশ আঁশ হয়ে থাকে। ময়েশ্চারাইজার কেনার সময় এ সব তো মাথায় রাখতেই হবে।
তাছাড়া যদি ত্বকে লালচেভাব থাকে বা ত্বক জ্বালা করে, তাহলে এমন ময়েশ্চারাইজার কিনুন যাতে প্রাকৃতিক উপাদান বিদ্যমান।
আবার তবকে দাগছোপ থাকলে বা ত্বকের রং অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলে এমন ময়েশ্চারাইজার কিনুন যা মুখ উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
উপাদানগুলোর দিকে নজর রাখুন
ত্বকের ধরন আর সমস্যাগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়ার পরে আপনার কাজ হলো ময়শ্চারাইজার উপাদানগুলো খতিয়ে দেখা।
প্যাকের লেবেল পড়ে দেখে নিন ময়েশ্চারাইজার অয়েল-বেসড, না ওয়াটার-বেসড। ত্বক অতিরিক্ত শুকনো না হলে সাধারণত ওয়াটার-বেসড ময়েশ্চারাইজার দিয়েই কাজ চলে যায়।
ডাবল ডিউটি ময়েেশ্চারাইজার কিনুন
ধুলো, দূষণ, রোদ থেকে ত্বকের ক্ষতি হয় প্রতি মুহূর্তে। তাই ময়েশ্চারাইজারের মধ্যে সানস্ক্রিন বা দূষণ প্রতিরোধক ক্ষমতা থাকলে খুব ভালো।
কেনার সময় দেখে নিন ময়েশ্চারাইজারে বিল্ট-ইন এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) রয়েছে কিনা। তাতে ত্বক আর্দ্রও থাকবে, সুরক্ষিতও থাকবে।
আগে পরখ করতে ভুলবেন না
নতুন কোনও ময়েশ্চারাইজার পাকাপাকি ব্যবহার করতে শুরু করার আগে কয়েকদিন মেখে দেখে নিন ত্বকে কোনও প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা।
ময়েশ্চারাইজার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে গেলে এক সপ্তাহের মধ্যে পরিবর্তন দেখতে পাবেন। আপনার ত্বক আর্দ্র আর ঝলমলে দেখাবে, কোনও শুকনো টান থাকবে না।
ত্বকের বাকি সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যদি দেখেন ত্বক সুস্থ রয়েছে, তা হলে এটাই আপনার আদর্শ ময়েশ্চারাইজার! নিশ্চিন্তে ব্যবহার করুন!