আয়ুর্বেদের অন্যতম হাকিম হলো নিম। চলুন আজ নিমের কবিরাজি ম্যাজিক দেখে নেওয়া যাক।
নিম একটি ঔষধি গাছ। নিমগাছ বা নিমগাছের পাতা নানা ভাবে ব্যবহার করা যায়। ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে নিম খুবই কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।
আমাদের আশেপাশে নিমগাছ খুব সহজেই পাওয়া যায়। যে গাছের ডাল, পাতা, রস সবই ব্যবহার যোগ্য।
শরীরের নানা সমস্যার থেকে সমাধানের পথ দেখাতে পারে নিমগাছ। নিম একটি চিরহরিৎ ও বহুবর্ষজীবী গাছ।
সারা দুনিয়াতে নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল।
বর্তমান বিশ্বে নিমের এত গুনাগুনের অন্যতম কারন হলো নিম একটি অ্যান্টিসেপটিক।
নিম মূলত ব্যবহার করা হয়- ছত্রাকনাশক, ব্যাকটেরিয়ারোধক, ভাইরাসরোধক হিসেবে।
চ্যাগাস রোগ নিয়ন্ত্রণে,দন্ত চিকিৎসায় ব্যথামুক্তি, জ্বর কমাতে,জন্ম নিয়ন্ত্রণে কীট-পতঙ্গ বিনাশে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।
নিমের ব্যবহার
আগেই বলেছি নিমের ব্যবহারের ক্ষেত্রে গোটা নিমগাছ ব্যবহার করা যায়।
নিমগাছের পাতা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। সুগারের রোগীদের জন্য নিমপাতা উপকারি।
সুগার থাকলে নিয়মিত নিমপাতা খেলে সুগার নিয়ন্ত্রনে থাকে। সুগার জনিত সমস্যা কমে যায় অনেক পরিমানে।
তবে নিমপাতা সুগার পরীক্ষা করে খাওয়া উচিত। সুগার কম থাকলে না খাওয়া ভালো।
কারন একেবারে কম সুগার, সুগারের রোগীদের নানা সমস্যায় ফেলে দেয়। নিমপাতা সুগারের মাত্রা অনুযায়ী খাওয়া সাস্থ্যের জন্য ভালো।
নিমপাতার রস পেটের জন্য খুবই উপকারি। কৃমি হলে নিমপাতা রস করে খেলে কৃমি কমে যায়। শিশুদের পেটে কৃমি বেশি হয়ে থাকে।
ফলে খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়। শিশুর পুষ্টির ক্ষেত্রে কৃমি বাধা হয়ে দাড়ায়।
সেই জন্য কৃমি হলে নিয়ম করে ৫০ মিলিগ্রাম পরিমানে নিম গাছের মূলের ছালের গুঁড়ো গরম জলে মিসিয়ে খাওয়াতে হবে।
দিনে ৩ বার করে খেলে তাড়াতাড়ি কৃমি মরে যাবে। শিশু ভালো থাকবে।
নিমগাছের পাতা চুলের পুষ্টিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে
চুল পরে যাওয়ার সমস্যা, চুলের পরিমান কমে গেলে নিমপাতার রস বা নিমতেল নিয়মিত চুলের গোড়ায় লাগালে চুলের সমস্যা অনায়াসে দূর হয়।
চুলে যদি উকুন হয় তাহলে ক্যামিকাল জাতীয় স্যাম্প ব্যবহার না করে নিমপাতার রস লাগান।
নিমপাতার রস মাথায় লাগিয়ে চুল ঘণ্টা খানেক পর ধুয়ে নিলে উকুন মরে যায়। তবে নিয়মিত চুলে লাগাতে হবে।
নিমতেল বানিয়ে নিয়ে রাতে চুলে লাগিয়ে শুয়ে পরা যায়। সকালে স্যাম্প করে নিলে চুলে উকুনের উপদ্রব কমে। চুল মজবুত হয়।
নিম ত্বকের জন্য উপকারি। নিমপাতা বেটে মুখে লাগালে ত্বক জনিত নানা সমস্যা দূর হয়।
যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাড়া প্রতিদিন নিমপাতা বাটা, দই, লেবুর রসের মিশ্রণ লাগাতে পারেন।
ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর হয়ে যাবে। সূর্যের আলোতে মুখে কাল ছোপ পরলে নিম ব্যবহার করে এই সান ট্যান অনায়াসে তলা যায়।
নিমপাতা বাটা, সসার রস মিসিয়ে, কাল ছোপ পরা জায়গায় নিয়ম করে দিনে দুবার লাগালে, এক মাসের মধ্যে কাল দাগ দূর হয়ে যাবে।
এছাড়া নিমপাতা বাটা হলুদ বাটার সাথে মিসিয়ে মুখে মাখলে ত্বকের উজ্জলতা বাড়ে।
ব্রন হলে নিমপাতা বাটা লাগালে ব্রন কমে যায়। নিমপাতার ডাল দিয়ে দাঁত দাতন করলে মুখের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
দাঁত ভালো থাকে। মুখে দুর্গন্ধ থাকলে নিমডাল দিয়ে দাতন করলে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়। দাঁত মজবুত হয়।
পোকামাকড় কামড়ালে সেই ক্ষততে নিমের ছালের গুঁড়ো লাগালে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।