আপনার চুল কী খুব তৈলাক্ত? সব সময়ে মাথা চুলকায় আর হাতে লেগে আসে মাটি মাটির মতো উপাদান?
খুবই খারাপ লাগে তখন জানি। আর আপনি তো অনেক কিছুই ব্যবহার করে এসেছেন এতো দিন ধরে।
কিন্তু ফল পাননি তার কারণ হয়ত সেই সব প্রোডাক্ট খুব বেশি ভালো নয়। আজ তাই এমন টিপসের কথা বলব যা এক্কেবারে মোক্ষম।
রইলো বেশ কিছু টিপস, যা আপনার তৈলাক্ত তুলের যত্নের জন্য অব্যর্থ।
আসুন তাহলে দেখে নিন আপনার তৈলাক্ত চুল ভালো রাখার জন্য কীভাবে কি কি করবেন আর করবেন না।
কী কী করবেন
আমরা খুব সহজেই বাড়িতে থেকে ব্যবহার করতে পারি।
১. লেবুর রসে চুল ধোয়া
লেবু খুব সুন্দর করে আপনার চুল পরিষ্কার করতে পারে।
আর এটি একটি ন্যাচারাল ব্লিচ। তাই নিশ্চিন্তে চুলে লেবুর রস ব্যবহার করুন।
উপকরণ
- ১ মগ জল
- ২ চামচ লেবুর রস
পদ্ধতি
এক মগ জলে লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে রাখুন। প্রথমে চুল শ্যাম্পু করে নিন।
এরপর ভালো করে ধুয়ে নিন। এই বার স্নানের একদম শেষে ওই লেবুর রস গোলা জল চুলে ভালো করে দিয়ে কিছু ক্ষণ রেখে দিন।
এতে চুল ভালো করে কন্ডিশনড হবে। এটি সপ্তাহে তিন দিন করতে পারেন।
২. ডিমের প্যাকের ব্যবহার
আমাদের চুলের প্রধান উপাদান হল প্রোটিন।
আর আমরা কে না জানি যে প্রোটিনের প্রধান উৎস হল ডিম।
তাই ডিম ব্যবহার করুন আপনার চুলের যত্নে।
উপকরণ
- ২টি ডিম
- ৪ টেবিল চামচ রাম বা ব্র্যান্ডি
পদ্ধতি
একটি পাত্রে ডিম আর রাম বা ব্র্যান্ডি ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এবার এই মিশ্রণ খুব ভালো করে মাথায় লাগিয়ে নিন আর একটি তোয়ালে গরম জলে চুবিয়ে ভালো করে চিপে মাথায় জড়িয়ে নিন।
যখন তোয়ালে ঠাণ্ডা হয়ে যাবে তখন চুল ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। মাসে দু বার এটা করতে পারেন।
৩. মুলতানি মাটির প্যাক
মুলতানি মাটি মুখের জন্য তো খুব ভালো। সেটা তো আমরা সবাই জানি।
কিন্তু চুলের জন্যও যে মুলতানি মাটি সমান কার্যকরী তা কী আপনি জানতেন? নিশ্চয়ই নয়।
তাই আজ দেখে নিন কীভাবে মুলতানি মাটি আপনি তৈলাক্ত চুলের জন্য ভালো কাজ দেয়।
উপকরণ
- ২ চামচ মুলতানি মাটি
- গরম জল
- ২ চামচ লেবুর রস
পদ্ধতি
সবকটি উপকরণ একটি পাত্রে ভালো করে মেশান।
তারপর এটি চুলে লাগিয়ে নিন আর ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এবার শ্যাম্পু করে ফেলুন।
এই প্যাক খুব সুন্দর করে সব নোংরা মাথা থেকে তুলে দেবে।
৪. হেনা
তৈলাক্ত চুল অনেক সময়ে ভালো দেখায় না।
আর চুল তেলতেলে হয়ে থাকলে বাউন্স আসে না চুলে। হেনা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
উপকরণ
- হেনা
- ২টি ডিম
- ২ চামচ দই
পদ্ধতি
আগের দিন রাতে হেনা ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সেই হেনার সঙ্গে ডিম আর দই ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এবার চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন হেনা। ১ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন। মাসে দু বার এটা করতেই পারেন।
৫. থাইম ব্যবহার করুন
আপনার চুলের জন্য থাইম খুবই ভালো। তাই তৈলাক্ত চুলের জন্য থাইম ব্যবহার করেই দেখুন। আর থাইমকে অ্যান্টিসেপটিকও বলা হয়।
উপকরণ
- ৪ টেবিল চামচ থাইম
- ২ কাপ জল
পদ্ধতি
প্রথমে ১০ মিনিট ধরে জলে থাইম ফুটিয়ে নিন। এবার জল ঠাণ্ডা করে নিন।
চুলে শ্যাম্পু করার পর ওই জল চুলে দিন আর হাল্কা করে ঘষুন। চুল ধোবার দরকার নেই।
এর সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল অবশ্যই খাবেন।
কী কী করবেন না
তৈলাক্ত চুল হলে ঠিক কি কি করা যাবে না। আসুন দেখি সেগুল কি কি।
১. সব সময়ে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। না হলে স্ক্যাল্পের ন্যাচারাল তেল থাকে না।
২. ক্রিমি বা তেলতেলে কন্ডিশনার, সিরাম বা জেল মাথায় ব্যবহার করা যাবে না।
৩. খুব বেশি মাত্রায় ব্রাশ করা যাবে না, কারণ এতে সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড বেশি সক্রিয় হয়। তাই তেল নিঃসরণ বেশি হয়।
৪. খুব বেশি তেলতেলে খাবার বা বেশি চা-কফি না খাওয়াই ভালো।
ব্যাস, এই কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখলেই আর কিন্তু চিন্তা নেই আপনার চুল নিয়ে।
ফুরফুরে চুল নিয়ে আপনিও থাকুন ফুরফুরে।