মুখ ধোওয়ার আবার ঠিক-বেঠিক কী? ফেসওয়াশ নিয়ে মুখে লাগিয়ে ফেনা করে জলের ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে নেওয়া, ব্যস!
অথবা ক্লিনজার মিল্ক দিয়ে মুখ মুছে জলের ঝাপটায় ধুয়ে নেওয়া! তার আবার নিয়ম কী?
এ লেখার শিরোনাম পড়ে ঠিক উপরের কথাগুলোই যদি আপনার মনে আসে, তা হলে আপনাকেই বলছি। মুখ ধোওয়ার যথেষ্টই নিয়মকানুন আছে।
সে নিয়ম না মানলে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে আপনার ত্বকের! একটু ভেবে দেখলেই কারণটা বুঝতে পারবেন।
শুষ্ক ত্বক কিন্তু সাবান বা ডিটারজেন্টযুক্ত ফেসওয়াশের সংস্পর্শে এসে আরও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
আর ক্লিনজারে যদি থাকে অ্যালকোহল, তাহলে তৈলাক্ত ত্বকের সমূহ সর্বনাশ!
কাজেই বুঝতে পারছেন, মুখ ধোওয়ারও নিয়ম রয়েছে এবং নির্ভর করে আপনার ত্বকের ধরনের উপর।
তেলতেলে ত্বক হলে মুখ ধোওয়ার নিয়ম
আপনার ত্বক তৈলাক্ত হলে ফোম বেসড ফেসওয়াশ বা ক্লিনজিং জেল নিন।যাতে ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের আবরণ নষ্ট না করেও গভীর থেকে পরিষ্কার করে।
ব্রণ থাকলে ক্লিনজার ব্যবহার করুন, তবে খুব বেশি সময় মুখে ক্লিনজার লাগিয়ে রাখবেন না। প্রথমে অয়েল,পরে ওয়াটার বেসড ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
ক্লিনজারের পরিমাণ
কতটা ক্লিনজারের আপনার প্রয়োজন, সেটা নির্ভর করে প্রডাক্টের টেক্সচারের উপর। জেল বা ক্রিম-বেসড ক্লিনজার মটরদানার পরিমাণ যথেষ্ট।
ফোম বেসড প্রোডাক্ট হলে একটা পাম্প নিন। মিসেলার ওয়াটার দিয়ে সমস্ত মেকআপ আর আলগা ময়লাটা তুলুন। তারপর ক্লিনজার মেখে মুখ ধুয়ে নিন।
ভুল প্রডাক্ট দিয়ে মুখ ধুলে শুষ্ক ত্বক আরও শুকিয়ে যেতে পারে, তাই প্রথম থেকেই সাবধান হতে হবে। অ্যালকোহল মুক্ত হাইড্রেটিং ক্লিনজার আপনার জন্য ঠিক।
প্রোডাক্টটি প্যারাবেন আর সুগন্ধমুক্ত হওয়াও খুব দরকার। ল্যাকটিক অ্যাসিড, আমন্ড অয়েল, সেরামাইড থাকলে খুব ভালো।
মুখ খুব শুকনো হলে প্রথমে সামান্য ফেস অয়েল মুখে মেখে নিন, তারপর ওয়াইপ দিয়ে মুছে ক্লিনজার লাগান।
শুষ্ক ত্বক হলে মুখ ধোওয়ার নিয়ম
মুখে যদি আগে ফেস অয়েল লাগিয়ে থাকেন, তা হলে দুটো অথবা তিনটে মটরদানার পরিমাণ ক্লেনজ়ার নিন। তেল না লাগালে এক দানাই যথেষ্ট।
মুখে আর গলায় ক্লিনজার লাগিয়ে বৃত্তাকারে মাসাজ করুন, তবে বেশি ঘষাঘষি করবেন না। মুখ ধুয়ে পরিষ্কার তোয়ালে চেপে মুছে নিন।
তারপর ময়শ্চারাইজার লাগান।
কম্বিনেশন ত্বকে মুখ ধোওয়ার নিয়ম
বুঝতেই পারছেন, কম্বিনেশন বা মিশ্র ত্বক হলে মুখ ধোওয়ার জন্য এমন প্রডাক্ট দরকার যা ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে।
মিশ্র ত্বকে কপাল,নাক আর চিবুক সচরাচর তেলতেলে হয়, কিন্তু বাকি অংশ শুকনো থাকে।
তাই কোনও একধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী প্রডাক্ট দিয়ে মুখ ধুলে ঠিকমতো যত্ন নেওয়া হবে না। খুব কড়া ফেসওয়াশ এড়িয়ে চলুন।
তা ত্বকের অমূল্য প্রাকৃতিক তেলের আস্তরণ নষ্ট করে দিতে পারে। বদলে বেছে নিন কোমল জেল-বেসড ফেসওয়াশ।
টি ট্রি অয়েল, অ্যালো ভেরা, আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের মতো উপাদান ফেসওয়াশে থাকলে খুব ভালো হয়।
মিশ্র ত্বকে মিসেলার ওয়াটারও খুব ভালো কাজ করে। সপ্তাহে দু’ দিন ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোওয়ার পরে এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব ব্যবহার করুন, তারপর অ্যালকোহল-মুক্ত টোনার লাগিয়ে নিন।
ফেসওয়াশের পরিমাণ
বড়ো একটাকার কয়েনের সমান ফেসওয়াশ নিলেই যথেষ্ট। স্ক্রাব নিন একটা মটরদানা পরিমাণ। প্রথমে মুখটা জল দিয়ে ভিজিয়ে নিন।
তারপর ফেসওয়াশ লাগিয়ে হালকা হাতে গোটা মুখে মাসাজ করুন। তেলতেলে অংশটায় ভালো করে মাখবেন।
জল দিয়ে মুখ ধুয়ে স্ক্রাব লাগান। নাকের দু’পাশে, চিবুকে আর কপালে হালকা মাসাজ করে মৃত কোষ আর তেলময়লা তুলে দিন।
ধুয়ে ফেলার পর চেপে চেপে মুখ মুছে টোনার লাগান।