আমরা অনেকেই জানি না আমাদের চুল কী চায়।
প্রত্যেকটি জিনিসের সঠিক নিয়ম রয়েছে।
আমরা তা ভালোভাবে জানিওনা।
ফলে চুলের ক্ষতি করে চলেছি।
আমাদের আশেপাশের পলিউশন বেশ।
দূষণের প্রভাব পড়ে চুলেও।
হয়ে ওঠে নিষ্প্রাণ ও নির্জীব।
এর সঠিক যত্ন নেয়া জরুরি।
কিন্তু আমরা ভুল করি।
শ্যাম্পু কিনে চুল ধুয়ে ফেলি।
কেউ কেউ কন্ডিশনার ও গুরুত্ব দেই না।
যার ফলে চুল আরো বেশি রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়।
আবার অনেকেই চুলের ময়লা দূর করতে রেগুলারই শ্যাম্পু করে থাকেন।
যেটা করা মোটেও উচিত নয়।
এমনই কিছু সঠিক নিয়ম ও চুল ধোয়ার আগে ও পরে কী করণীয় তা জানানোর চেষ্টা করবো।
প্রি-শ্যাম্পু ট্রিটমেন্ট
আর্গান অয়েল হেয়ার মাস্ক
শ্যাম্পু করার পূর্বে এই ট্রিটমেন্ট অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
তাহলে শ্যাম্পুর মাধ্যমে চুল ধুয়ে নিলে ব্রেকেজ বা ড্যামেজ হওয়ার চিন্তা থাকবে না।
- আর্গান অয়েল হেয়ার মাস্ক প্রথমে কয়েক ফোঁটা হাতে নিন।
- এটা ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন হাতের তালুতে।
- এবার সম্পূর্ণ মাথার ত্বকে ও চুলে ম্যাসাজ করুন।
মাথার সব জায়গায় ছড়িয়ে দিন হাতের সাহায্যে।
- একঘন্টা রেখে শ্যাম্পু ও পরে কন্ডিশনারের মাধ্যমে ধুয়ে ফেলুন।
গোসলের আগে অয়েল ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
এর ফলে চুলের গ্রোথ ত্বরান্বিত হয়। চুল পড়া বন্ধ হয় ও চুল ঘন হয়।
আর্গান অয়েল চুলের ফ্রিজিনেস দূর করে সিল্কি স্মুথ ও সাইনি করে তোলে।
রাইস ওয়াটার
রাইস ওয়াটার চুলের জন্য অত্যন্ত ভালো।
আর ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটার হলে তো কথাই নেই।
এটা চুলের গ্রোথ ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সবচেয়ে কার্যকরী।
চালে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলস আমাদের চুলের খাদ্য জোগায়।
এতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও লম্বা হতে সাহায্য করে।
- একটি কাচের বোতলে এককাপ চাল ও ৫/৬ কাপ পানি অ্যাড করুন।
- চাল অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
কারণ এর গায়ে ময়লা থাকে তাই ধুয়ে নিতে হবে।
- এবার যেকোনো এসেন্সিয়াল অয়েল ৩/৪ ফোটা অ্যাড করে দিন।
সারারাত এইভাবে দিন ফার্মেন্টেড হওয়ার জন্য।
- আর্গান অয়েল ম্যাসাজ করার পর এই চালের পানি ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন।
একটি বড় বোল নিন।
চুল আপসাইড ডাউন করে একটি কাপের মাধ্যমে চালের পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
- তারপর নরমাল পানি ব্যবহার করে ধুয়ে নিন।
এইভাবে সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করলে চুল অনেক লম্বা ও ঘন হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা সেটা হলো চুল স্বাস্থোজ্জ্বল হবে।
শ্যাম্পু ট্রিটমেন্ট
কম্বিং
শ্যাম্পু করার আগে খুব ভালোভাবে চুলের জট ছাড়িয়ে নিতে হবে।
এর জন্য মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।
চুল এক এক করে ভাগ করে ধীরে ধীরে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে।
তাহলে শ্যাম্পু করতে সুবিধে হবে আর চুলের ব্রেকেজ ও কম হবে।
চুলে ব্যবহার করার জন্য ভালো হয় যদি কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা যায় তবে।
এতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে ও মাথার ত্বক ভালো থাকবে।
শ্যাম্পু করার পূর্বে কন্ডিশনার
শ্যাম্পু করার পূর্বেও কন্ডিশন করুন মাঝে মাঝে।
যাদের চুল অনেক জটালো হয় এবং খুব বেশি মাত্রায় ফ্রিজি-
তারা শ্যাম্পু করার আগে একবার কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন।
এতে চুল খুবই সফট ও স্মুথ হবে।
আর শ্যাম্পু করার সময় ও খুব সহজ হবে শ্যাম্পু করতে।
আপসাইড ডাউন হেয়ার ওয়াশ
কন্ডিশনার ব্যবহার করার পর চুল শ্যাম্পু করার পালা।
পিছনের সব চুল সামনে নিয়ে আসুন আর এইভাবে চুল ধোয়ার চেষ্টা করুন।
শ্যাম্পু চুলে লাগানো যাবে না। তাতে চুল খুব রাফ হয়ে যায়।
আপসাইড ডাউন হয়ে শ্যাম্পু শুধু মাত্র স্ক্যাল্পে লাগিয়ে অল্প পানির সাহায্যে ম্যাসাজ করুন।
এর থেকে ফেনা নিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন।
এবার ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এতে করে চুলে অনেক বেশি ভলিউম বৃদ্ধি পাবে।
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার
এবার কন্ডিশন করার পালা আবার।
শ্যাম্পু করার পর আমাদের মাথার প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে যায়।
তাই শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
এটা চুল ময়েশ্চারাইজড রাখতে সাহায্য করে।
স্ক্যাল্প ম্যাসাজার
স্ক্যাল্প ম্যাসাজার শুধু মাত্র রিল্যাক্সং-ই নয়।
এটা গভীর থেকে ময়লা দূর করতে সাহায্য করে।
এইগুলো আমাদের মাথার ত্বকের ফলিকগুলোর কোষ স্ট্রেচ করে।
যার ফলে আমাদের চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।
যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
বেশি বা প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার না করা
বেশি করে বা ঘন ঘন শ্যাম্পু করার ফলে চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়।
তাতে চুল ময়েশ্চারাইজড থাকে না।
ফলে চুল ফ্রিজি ও ড্যামেজ হয়ে যায়। তাই সপ্তাহে ২/৩ বার শ্যাম্পু করা উচিৎ।
চুল ধোয়ার পর ক্লিপ দিয়ে বেধে নিতে হবে
চুল ধোয়ার পর চুলে কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করি আমরা।
সেটার পানি আমাদের পিঠে লেগে যায়।
যার ফলে পিঠে ছোট ছোট একনে দেখা যায়।
এই একনে প্রতিরোধে করতে চুল উপরে বেধে নিন।
তারপর পিঠ লোফার মাধ্যমে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ভেজা চুল আচঁড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে
ভেজা অবস্থায় আমাদের মাথার ত্বক দুর্বল থাকে।
তাই এই অবস্থায় একদম আচঁড়ানো উচিত নয়।
তাতে চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তাই চুল ভালোমতো শুকাতে দিতে হবে।
চুল ভালোমতো শুকানোর পর আচঁড়ে নিয়ে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে।
মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করুন
অতিরিক্ত ভারি ও মোটা তোয়ালে দিয়ে চুল শুকানো উচিত না।
তাতে চুলের ব্রেকেজ দেখা দিবে ও চুল পড়তে থাকবে।
তাই চুল মোছার ক্ষেত্রে এই ধরণের তোয়ালে এড়িয়ে চলুন।
চুল মোছার জন্য মাইক্রোফাইবারের তৈরি তোয়ালে ব্যবহার করুন।
তেমন কিছু না থাকলে টি-শার্ট দিয়ে জড়িয়ে চুল বেধে রাখুন।