আপনি কোন ধরণের শ্যাম্পু পছন্দ করবেন সেটা নিয়ে খুব কনফিউজড হয়ে যাচ্ছেন কি?
হ্যা, কনফিউজড হওয়ারই কথা। কারণ বাজারে এত এত শ্যাম্পু রয়েছে!
কোনটা ছেড়ে কোনটা পছন্দ করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
আমরা সবাই মোটামুটি আমাদের মাথার ত্বকের অবস্থা ও ধরণ না বুঝেই শ্যাম্পু কিনে ফেলি।
মাথার ত্বক অনুযায়ী শ্যাম্পু পছন্দ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ সবার মাথার ত্বক এক রকম হয় না।
এক এক ধরণের ত্বকে এক এক ধরণের উপাদান জাতীয় শ্যাম্পু প্রয়োজন।

কীভাবে নিজের মাথার ত্বক চিনবেন?
আপনি যদি মনে করে থাকেন শ্যাম্পুর কাজ শুধু মাথার ত্বক পরিষ্কার করা।
তবে আপনি ঠিক ভাবছেন।
কিন্তু আপনাকে বুঝে নিতে হবে শ্যাম্পুর কোন উপাদান আপনার মাথার ত্বকের জন্য বেশি ভালো।
বিভিন্ন শ্যাম্পুর বিভিন্ন ধরণের ক্লিঞ্জিং প্রোপার্টি থাকে।
তাই মাথার ত্বক অনুযায়ী শ্যাম্পু পছন্দ করে নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন আপনার মাথার ত্বক যদি খুব বেশি তৈলাক্ত হয় তবে তাতে ময়েশ্চারাইজারের দরকার নেই।
ময়েশ্চারাইজার যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে আরো বেশি তৈলাক্ত হয়ে যাবে।
এর জন্যেই বাছাই করে নেয়া খুবই জরুরি।
আপনার মাথার ত্বক যদি শ্যাম্পু করার পর টানটান করে বা একটু চুলকানোর প্রবণতা থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার ড্রাই স্ক্যাল্প।
অন্যদিকে তুলনামূলক বেশি শাইনি থাকে বা তেলতেলে হয় তবে বুঝতে হবে আপনার অয়েলি স্ক্যাল্প।
তৈলাক্ত ত্বকে খুশকি দলাবেধে যায়।
আরেক ধরণের স্ক্যাল্প হতে পারে মাথার ত্বকে। যেটা না অয়েলি না ড্রাই।
তাকে কম্বিনেশন স্ক্যাল্প বলে।
যেমন আপনার ত্বক যদি মোটামোটি শুষ্ক থাকে এবং দুই বা তিন দিন পর শ্যাম্পু না করার কারণে তৈলাক্ত হয়ে উঠে তাহলে সেটা কম্বিনেশন স্ক্যাল্প।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য যে ধরণের শ্যাম্পু পছন্দ করবেন
যদি আপনার মাথার ত্বক তৈলাক্ত বা চিটচিটে হয় তবে তবে আপনি সম্ভবত কয়েকশত শ্যাম্পু ব্যবহার করে ফেলেছেন।
তেল দূর করতে হয়তো দুইবার ও শ্যাম্পু করে ফেলেছেন।
কিন্তু সঠিক শ্যাম্পু না ব্যবহার করার কারণে হিতের বিপরীতও হয়েছে।
মাথার ত্বক তৈলাক্ত হওয়া মানে আপনার ত্বক ময়েশ্চারাইজড ও অয়েলি।
সেবাম বেশি নিঃসরণ হওয়ার ফলে আপনার মাথার ত্বক অয়েলি।
তাই এমন শ্যাম্পু পছন্দ করবেন যা আপনার মাথার ত্বক অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজ করবে না।
- সেই সব শ্যাম্পু এড়িয়ে যাবেন যে শ্যাম্পু গুলো হাইড্রেট, ময়েশ্চারাইজ, স্মুথ করে তোলে।
- কোঁকড়া চুলের জন্য যে শ্যাম্পুগুলো ভালো, সেইসব শ্যাম্পু অবশ্যই ব্যবহার করা যাবে না।
কারণ কোঁকড়া চুলের জন্য আদর্শ শ্যাম্পুগুলোতে ময়েশ্চারাইজারের পরিমাণ বেশি থাকে।
- শ্যাম্পু কেনার সময় লেবেল চেক করে নিতে হবে।
যেসব লেবেলে ভলিউম দিবে, স্ট্রেইটেনিং করবে বা ব্যালেন্স করবে উল্লেখ থাকবে, সেই জাতীয় শ্যাম্পু পছন্দ করে কিনতে হবে।
- তৈলাক্ত মাথার ত্বকের জন্য প্লেন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
যে শ্যাম্পু দেখতে স্বচ্ছ সেটাকে প্লেন শ্যাম্পু বলা হয়।
ঘন ক্রিমের মতো শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না।
- ঘন ঘন শ্যাম্পু করা উচিত নয়।
এতে সেবাম নিঃসরণ বেড়ে স্ক্যাল্প আরও বেশি তৈলাক্ত হয়ে যাবে।

শুষ্ক ত্বকের জন্য শ্যাম্পু
যখন আপনার মাথার ত্বক খুব রুক্ষ ও শুষ্ক হবে তখন বুঝতে হবে আপনার ড্রাই স্ক্যাল্প।
এই ধরণের চুলের জন্য ও মাথার ত্বকের জন্য সঠিক শ্যাম্পু পছন্দ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
আপনার ত্বক ড্রাই হলে তাতে ময়েশ্চারাইজার বিহীন শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না মোটেও।
যদি তেমন কোনো শ্যাম্পু ব্যবহার করা হয় তাহলে তা চুল ড্যামেজ করে আরো ড্রাই করে দিবে।
তাই অবশ্যই ভেবে সঠিক শ্যাম্পু বাছাই করতে হবে।
- এমন ধরণের শ্যাম্পু এড়িয়ে যাবেন যেইগুলো চুলে ভলিউম দিবে, স্ট্রেইটেনিং করবে বা ব্যালেন্স করবে উল্লেখ থাকবে।
এসব উপাদান যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা মানে ড্রাই স্ক্যাল্প আরো ড্রাই করে দেয়া।
- আপনার ত্বক ড্রাই হয়ে যায় ময়েশ্চারাইজারের অভাবে।
তাই যেসব শ্যাম্পুর গায়ে ময়েশ্চারাইজড করবে, হাইড্রেট করবে আর কোঁকড়ানো চুলের জন্য ভালো উল্লেখ থাকে সেইসব শ্যাম্পু পছন্দ করে নিতে হবে।
এই ধরণের শ্যাম্পু আপনার শুষ্ক মাথার ত্বক ময়েশ্চারাইজড করে রুক্ষতা দূর করবে।
- যেসব শ্যাম্পুর উপাদানে সালফেট যুক্ত থাকে সেসব জাতীয় শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না।
সালফেট যুক্ত শ্যাম্পু চুল ও মাথার ত্বক ড্রাই করে তোলে।

চুলের ধরণ অনুযায়ী কেমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন?
কোঁকড়া চুলের জন্য যে ধরণের শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন
কোঁকড়া চুল ম্যানেজ করা খুব কষ্টসাধ্য। কার্ল চুলের জন্য করতে হবে এক্সট্রা কেয়ার।
এমন চুলের জন্য ময়েশ্চারাইজার যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
এজন্য অ্যালকোহল বা এসএলএস যে শ্যাম্পুতে নেই সেই শ্যাম্পুগুলো বেছে নেওয়া উচিত।
এতে চুলের কোঁকড়া ভাব বজায় থাকে।
আর শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
তাহলে চুলে ময়েশ্চারাইজার লক হয়ে থাকবে সিল্কি স্মুথ।

সাধারণ চুলের জন্য
সাধারণ চুল বা স্ট্রেইটেনিং করা চুল সাধারণত নেতিয়ে থাকে।
শ্যাম্পু করার পর চুল চুপসে থাকে ও ভলিউমও চলে যায়।
তাই এমন শ্যাম্পু পছন্দ করে হবে যা চুলে ভলিউম এনে দেয়।

ড্যামেজড বা কালার চুলের জন্য
যাদের চুল খুব ড্যামেজড বা রঙিন সেইসব চুলের জন্য অয়েল ম্যাসাজ সহ সঠিক শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে।
স্ট্রেইটেনিং ও ফোর্টিফায়িং লেবেল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
এতে চুলে প্রোটিন সরবরাহ করে চুলের যত্ন নিবে।