সুন্দর চুল পেতে এখন আর পারলারে সময় কাটানোর প্রয়োজন নেই।
বাড়িতে অল্প সময়ের একটু পরিচর্যাতেই আপনি পেতে পারেন সুন্দর উজ্জ্বল আর ঘন শাইনি চুল।
কীভাবে অল্প সময়ে আপনি এই পরিচর্যা করবেন–আসুন জেনে নিই আজকের আয়োজনে–
হট অয়েল থেরাপি
এটা ওটা মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগানোর ইচ্ছে বা সময় নেই? ভরসা রাখুন তেলে।
অলিভ বা নারকেল তেল নিন, তাতে কয়েক ফোঁটা পছন্দসই এসেনশিয়াল অয়েল মেশান। তেলটা হালকা গরম করে নিন।
এবার চুলটা কয়েকভাগে ভাগ করে নিন আর ওই গরম তেল আগা থেকে গোড়া খুব ভালোভাবে লাগিয়ে মাসাজ করুন।
পুরো চুলে তেল মাখা হয়ে গেলে গরমজলে তোয়ালে ভিজিয়ে ভালো করে নিংড়ে জড়িয়ে রাখুন মাথায়।
আধ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে বারদুয়েক অনায়াসে করতে পারেন। চুল খুব রুক্ষ হলে তিনবারও করা যায়।
মেয়োনিজ আর ডিম
ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। সত্যি বলতে চুলের অন্যতম সেরা খাদ্য হল ডিম।
আর মেয়োনিজের ফ্যাটি অয়েল চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে দারুণ উপযোগী।
বাটিতে আধ কাপ পরিমাণ মেয়োনিজ নিয়ে তাতে একটা ডিম আর এক চাচামচ অলিভ অয়েল দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এবার চুলে শ্যাম্পু করে নিন, কন্ডিশনার লাগাবেন না। চুলের বাড়তি জল তোয়ালে দিয়ে শুষে নিয়ে আধভেজা চুলে খুব ভালো করে ডিম-মেয়োনিজের মিশ্রণটা মাখুন।
শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে বা কাঁটা দিয়ে চুলটা আটকে আধ ঘণ্টা রাখুন, তারপর ফের হালকা গরমজলে ধুয়ে আর একবার শ্যাম্পু করে নিন।
এরপর কন্ডিশনার লাগাতে পারেন, কিন্তু তেলতেলে চুল হলে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো! সপ্তাহে একবার করতে হবে।
মধু আর নারকেল তেল
প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এই দুটি উপাদান মজুত থাকে। আর এই দুটি উপাদানই চুলের খসখসে রুক্ষ ভাব কমিয়ে মখমলি কোমল করে তোলার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত!
এমনিতেই মধু চুলের আর্দ্রতা রক্ষা করতে সেরা, তার উপর নারকেল তেল চুলের গোড়ায় গভীরে পুষ্টি জোগায়।
তাই এই দুটি উপাদান যোগ হলে তা চুলের পক্ষে খুবই উপকারী!
দু’ টেবিলচামচ নারকেল তেলে এক টেবিলচামচ মধু মিশিয়ে নিন।
এবার এই মিশ্রণটি চুলে খুব ভালো করে মেখে নিন।
হয়ে গেলে চুলটা রাবার ব্যান্ড বা শাওয়ার ক্যাপে আটকে আধ ঘণ্টা রাখুন।
তারপর ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। এ ক্ষেত্রে কিন্তু শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগাতে হবে!
অ্যালো ভেরা
এখন অনেকেই টবে অ্যালো ভেরা রাখেন। চুলে কোমল, মসৃণভাব আনতে অ্যালো ভেরা জেল খুবই কাজের।
কারণ এই জেলের বেশিরভাগটাই জলীয় উপাদান যা চুলে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
স্ক্যাল্পে অ্যালো ভেরা জেল ঘষে ঘষে মাখলে তা চুল ওঠাও বন্ধ করতে সক্ষম।
অ্যালো ভেরা পাতা কেটে আধকাপ বা তার একটু বেশি পরিমাণ (চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী) জেল বের করে নিন।
বাটিতে জেল নিয়ে কাঁটা চামচ দিয়ে ঘেঁটে একটু মসৃণ আর পাতলা করে নিতে হবে।
এবার চুলে শ্যাম্পু করুন আগের মতো, কন্ডিশনার দরকার নেই।
চুল থেকে শ্যাম্পু ধুয়ে বাড়তি ভেজাভাবটা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। এবার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত অ্যালো ভেরা জেলটা মেখে নিন।
আধঘণ্টা রেখে কুসুম গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার লাগালে দারুণ ভালো ফল পাবেন।
টক দই
হাতের কাছে সহজে পাওয়া যায় এমন তালিকার উপরদিকেই রয়েছে টক দই।
দইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড আপনার স্ক্যাল্প এক্সফোলিয়েট করে জমে থাকা সমস্ত তেলময়লা সরিয়ে দেয় আর সেই সঙ্গেই প্রতিটি চুল কোমল আর মসৃণ করে তোলে।
যাঁদের চুল তেলতেলে ধরনের, তাঁরা চুলে ডিপ কন্ডিশনিং করতে চাইলে চোখ বন্ধ করে টক দই বেছে নিতে পারেন।
চুলে বাড়তি জেল্লা আসবে, খুসকির সমস্যাও থাকবে না।
প্রথমে চুলে শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনার লাগানোর দরকার নেই।
চুলটা মুছে শুকিয়ে নিন। মোটামুটি শুকিয়ে গেলে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত দই মেখে নিন, এভাবে আধ ঘণ্টা থাকুন।
হয়ে গেলে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলবেন।