Search
Close this search box.

স্ট্রেচ মার্ক দূর করবেন কিভাবে?

স্ট্রেচ মার্কস গুলো পুরুষ কিংবা মহিলা উভয়ের জন্যেই খুব সাধারণ একটা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।

স্ট্রেচ মার্ক এতটাই জেদি যে এটা দূর করা খুবই কষ্টসাধ্য আর এটা অনেকেরই কনফিডেন্স কমিয়ে দয়।

এটি গর্ভাবস্থার কারণে বা হঠাৎ ওজন বাড়ার কারণে, যে কারণেই হোক না কেন, এটি এমন এক সমস্যা বা খুত যা সাধারণত কোমর, উরু, নীচের পিঠ, পোঁদ, স্তন, বাহু এবং নিতম্বের উপরে দেখা যায়।

সাধারণত স্ট্রেচ মার্কস গুলো বাকানো লম্বা দাগের মত হয়ে উঠে আসে।

এই লাইন গুলো আপনার সাধারণ ত্বকের চেয়ে আলাদা ও ভিন্ন রঙের হয়ে থাকে।

এই রঙ গুলো সাধারণত গাঢ় বেগুনি,  হালকা গোলাপি এমন রঙ থেকে শুরু করে ধুসর নীল পর্যন্ত হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় যেমন ত্বকের চর্মর স্তর হঠাৎ প্রসারিত হয় তখন এগুলি ঘটে।

ডার্মিসে শক্তিশালী, আন্ত-সংযুক্ত ফাইবার রয়েছে যা আপনার দেহ বাড়ার সাথে সাথে আপনার ত্বককে প্রসারিত করতে দেয়।

আবার হঠাৎ করে ওজন বাড়ার ফলে ত্বক অত্যধিক প্রসারিত হয় এবং তন্তুগুলি ভেঙে যায় যা শেষ পর্যন্ত প্রসারিত চিহ্ন গুলোর কারণ হয়।

এমন অনেকগুলি প্রাকৃতিক প্রতিকার রয়েছে যা হালকা করতে এবং প্রসারিত চিহ্নগুলি থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।

কি কারণে স্ট্রেচ মার্কস দেখা দেয়?

১.গর্ভাবস্থা

গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মহিলার স্ট্রেচ মার্কস দেখা দেয়।

গর্ভাবস্থায় ত্বক খুব নরম এবং প্রসারিত হয়ে যায় এবং বাচ্চার জন্য জায়গা তৈরি করে।

বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে ক্রমাগত ট্যাগিং এবং স্ট্রেচিংয়ের কারণে পেট, উরু এবং পায়ের পেশির মধ্যে টান পরে স্ট্রেচ মার্কস বসে যায়।

২. বয়ঃসন্ধিকাল

বয়ঃসন্ধিকালে মেয়ে কিংবা ছেলে উভয়ের শরীরের বাহ্যিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

হঠাৎ করে ওজন হাড়ানো কিংবা হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া স্ট্রেচ মার্কস এর অন্যতম কারণ।

ত্বকের এমন হঠাৎ প্রসারিত এবং সংকোচিত হওয়ার ফলে উরুর সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্ট্রেচ মার্কস দেখা যেতে থাকে। 

৩. ওজন বৃদ্ধি

ত্বক হঠাৎ করে প্রসারিত হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে ওজন বাড়ার কারণে স্ট্রেচ মার্কস দেখা দিতে থাকে।

আবার আপনি যদি ডায়েটে থাকেন তবে ওজন উঠা নামার কারণে স্ট্রেচ মার্কস উপস্থিত হয়।

তাই ধীরে ধীরে ওজন হ্রাস করার পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে ত্বক যাতে চাপ না পড়ে।

৪. জিন বা জেনেটিক্স

স্ট্রেচ মার্কস বংশগত ভাবেও হতে পারে। আপনার মা-বাবার কারো যদি স্ট্রেচ মার্কস থাকে তবে আপনারও স্ট্রেচ মার্কস হওয়ার সম্ভবণা রয়েছে।

৫. স্বাস্থ্য 

কিছু রেয়ার অসুখ বা রোগ থাকে যেমন কুশিংসের, মারফানের, এহলারস-ড্যানলস এবং অন্যান্য অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিজনিত ব্যাধি বিভিন্ন কারণে স্ট্রেচ মার্কস সৃষ্টি করে।

কুশিংয়ের সিনড্রোমে, দেহটি হরমোন করটিসোলকে অতিরিক্ত উৎপাদন করতে সাহাযু করে, যা এই স্ট্রেচ মার্কস এর কারণ হয়।

এদিকে, মারফান সিনড্রোম একটি ত্রুটিযুক্ত জিনের ফল যা দেহের ত্বক এবং সংযোগকারী টিস্যু গুলোকে দুর্বল করে তোলে।

তাদের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস করে, ফলে এই চিহ্নগুলি দেখার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

৬. জিম বা বডি বিল্ডিং 

বডি বিল্ডাররা খুব সাধারণভাবে এই চিহ্নগুলির সমস্যার মুখোমুখি হয়।

জিম করার ফলে পেশী দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং কখনও কখনও অ্যানোবোলিক স্টেরয়েডগুলির অপব্যবহারের ফলে পেশীগুলির বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় যায় ফলে স্ট্রেচ মার্কস পরা শুরু হয়। 

কিছু ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচ মার্কস দূর বা কমানো উপায়

১. আর্গান ওয়েল

ভিটামিন ই সমৃদ্ধ আরগান ওয়েল ত্বকের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ায় এবং স্ট্রেচ মার্কস এর  চিহ্নগুলিতে বা দাগ গুলোতে ঘষলে শরীরের ভেঙে যাওয়া টিস্যুগুলি ধীরে ধীরে নিরাময় হতে থাকে আর চিহ্নগুলি ধীরে ধীরে মিশে যেতে থাকে। 

২. ডিমের সাদা অংশ বা এগ হোয়াইট

ডিম আমাদের ত্বক ও শরীরের জন্য একটি সুপারফুড।

এটিতে রয়েছে অনেক প্রোটিন আর এমাইনো এসিড যা আমাদের ত্বকের জন্য খুব উপকারী এবং এইগুলো বিভিন্ন ভানে সাহায্য করে থাকে।

কুসুম আলাদা করে নিয়ে সাদা অংশ একটি বাটিতে রেখে ব্রাশ দিয়ে সেটা স্ট্রেচ মার্কস এর জায়গায় আলতো করে ম্যাসাজ করতে হবে।

এটা ধিরে ধিরে হালকা করতে সাহায্য করবে তার পাশাপাশি স্কিন টাইট ও করবে। 

৩. আলুর রস

আলুতে রয়েছে স্টার্চ এবং দাগ হালকা করার উপাদান বা ব্রাইটেনিং প্রোপার্টিজ যা শরীরের দাগ কে হালকা করতে সাহায্য করে।

এটি ত্বককে ব্লিচ করে এবং নিয়মিত প্রয়োগ করলে এইগুলো স্ট্রেচ মার্কস এর দাগ গুলো হালকা করতে সাহায্য করবে। 

৪. ওলিভ ওয়েল

ওলিভ ওয়েল হচ্ছে স্ট্রেচ মার্কস দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী উপাদান।

ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ, ওলিভ ওয়েল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণে পূর্ণ যা ত্বকের ক্ষতি নিরাময়ের জন্য খুব ভালো।

স্ট্রেচ মার্কস এর উপর অলিভ অয়েল প্রয়োগ করলে তাদের সময়ের সাথে সাথে বিবর্ণ করতে সহায়তা করবে।

এটি রেগুলার হাতের তালুতে নিয়ে হাতে ম্যাসাজ করতে হবে।

এইভাবে অল্প তাপ উৎপন্ন হবে আর তারপর ই এটি মার্কস এর উপর ম্যাসাজ করতে হবে। 

৫. অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা অনেক গুণাবলীতে ভরপুর একটি উপাদান।

এটি রুপচর্চার থেকে শুরু করে শারিরীক ভাবেই অনেক বেশি কার্যকরী।

আর এটি স্ট্রেচ মার্কস এর উপর ও ভালো প্রভাব ফেলে। 

অ্যালোভেরা পাতার বাইরের স্তরটি সরিয়ে পাতার ভিতর থেকে জেলটি বের করতে হবে।

এই অ্যালোভেরা জেলটি ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে তারপর চিহ্নগুলিতে ব্যবহার করুন এবং ২/৩ ঘন্টা পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।