মা হওয়ার অভিজ্ঞতা যে কোনও মেয়ের কাছেই খুব সুখের হলেও গর্ভাবস্থায় পেটে স্ট্রেচমার্ক অনেকের কাছেই বিশেষ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মুশকিল হলো, স্ট্রেচমার্ক পুরোপুরি আটকানো সম্ভব নয়, তবে কিছু সাবধানতা নিলে তার গভীরতা নিশ্চিতভাবেই কমানো সম্ভব।
কেন স্ট্রেচমার্ক তৈরি হয়?
গর্ভাবস্থার ছ’মাস বা সাত মাসের মাথায় পেটে ধীরে ধীরে সরু সরু রেখা দেখা দিতে শুরু করে। এটা ঠিক, ত্বকের কিছুটা ইলাস্টিক প্রবণতা রয়েছে।
কিন্তু গর্ভাবস্থায় শিশু যত বড় হতে থাকে, পেটের ত্বকেও ততই টান পড়ে। শিশুর জন্মের পর এই বাড়তি চামড়াটা আলগা হয়ে যায় আর স্ট্রেচমার্ক খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
যে সব মহিলার ওজন বেশি, তারাও স্ট্রেচমার্কের শিকার হন। শুধু পেটে নয়, উরু, হাতের ভিতরদিক, স্তনেও স্ট্রেচমার্ক হতে পারে।
কীভাবে কমাবেন স্ট্রেচমার্ক?
খুব নিয়ম মেনে ত্বকের যত্ন নিলে স্ট্রেচমার্কের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। দেখে নিন তারই কিছু সহজ উপায়।
নিয়মিত ময়শ্চারাইজার মাখুন
গর্ভাবস্থায় ত্বক এমনিতেই বেশি শুকনো হয়ে যায়, তাই নিয়মিত বডি অয়েল আর ক্রিম মাখতেই হবে। তাতে ত্বক আর্দ্র থাকবে, শুকনো ফাটা ভাব কমবে।
স্নানের পর অলিভ, আমন্ড, ক্যাস্টর বা অ্যাভোকাডো অয়েল শরীরে মাসাজ করুন।
সন্তানের জন্মের পর পেটের ত্বকে রেটিনয়েড যুক্ত ক্রিম মাখুন।
এই ক্রিম ত্বকে কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে, ফলে স্ট্রেচমার্ক গভীর হতে পারে না।
প্রচুর পানি পান করুন
স্ট্রেচমার্ক প্রতিরোধে বাইরে থেকে যেমন ক্রিম মাখতে হবে, তেমনি ভিতর থেকেও শরীর আর্দ্র রাখতে হবে।
তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন, তাতে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় থাকবে।
ওজনের দিকে খেয়াল রাখুন
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার খাবেন না। হুট করে যাতে ওজন বেড়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করুন যাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নজর দিন খাদ্যতালিকায়
একগাদা খাবার নয়, বরং পরিমাণমতো পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য আপনাকে গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। ত্বক ভালো রাখে এমন খাবার খান।
অ্যান্টি অক্সিডান্ট যুক্ত শাকসবজি, যেমন পালং শাক, গাজর, মিষ্টি আলু বেশি করে খান। সঙ্গে থাক ভিটামিন ই যুক্ত খাবার, যেমন বাদাম, ব্রকোলি, অ্যাভোকাডো, বিন।
খাবারে পরিমাণমতো প্রোটিন থাকাও দরকার। নিরামিষাশীরা টক দই, মুসুর ডালের মতো খাবার বেশি করে খাবেন।
সানস্ক্রিন জরুরি
প্রয়োজন না হলে রোদে বেশি না বেরোনোই ভালো। একান্ত বেরোতে হলে অবশ্যই ভালোভাবে সানস্ক্রিন মেখে নেবেন।
এসব ঘরোয়া উপায় ছাড়াও লেজার ট্রিটমেন্ট বা কসমেটিক সার্জারি দিয়ে পেট সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের স্ট্রেচমার্ক দূর করা সম্ভব।
তবে তার জন্য অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।