ঠোঁট আমাদের অত্যন্ত প্রিয় একটি অঙ্গ।
ত্বকের যত্নের মতো ঠোঁটের যত্ন নেওয়াটাও অনেক জরুরি।
আমাদের চোখের নিচের ত্বক যেমন পাতলা হয়, তেমনি ঠোঁটও অনেক পাতলা হয়।
সাধারণত শীতকালে ঠোঁট ফাটা, কালো হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়৷
কিন্তু এই গরমেও অনেকের ঠোঁট ফাটছে, কালো হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ কী চলুন জেনে নেওয়া যাক।
গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ কী?
আমাদের ঠোঁটের স্কিন মুখের স্কিনের তুলনায় অনেক পাতলা।
ঠোঁট মাত্র ৩-৪ লেয়ার পুরু যেখানে মুখের স্কিন ১৬ লেয়ার পর্যন্ত পুরু হয়ে থাকে৷
এর ফলে সহজেই ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়।
আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবং একই সাথে ঋতুগুলোর বৈশিষ্ট্যেও পরিবর্তন আসার প্রভাব পড়ছে মানব শরীরেও৷
প্রচন্ড তাপদাহের কারণেই ঠোঁট কালো হয়ে যাচ্ছে,ঠোঁট ফাটার মতো নানা রকম সমস্যার দেখা দিচ্ছে।
গরমে ঠোঁট ফাটা থেকে প্রতিকার
মুখের মতো ঠোঁটেও মেলানসাইটাস থাকে, যার কাজ মেলানিন তৈরী করা।
মেলানসাইটাস খুব সহজেই ট্রিগার হয়, আর মেলানসাইটাস ট্রিগার হলে বেশি বেশি মেলানিন তৈরী হয়৷
ফলে জায়গাটা কালো হয়ে যায়৷ এই বিষয়ে প্রধান ভূমিকা রাখে সূর্য। সূর্যের UV RAY এর জন্য ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে।
তাই বাহিরে বের হওয়ার সময় এসপিএফ ৩০ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন।বাসায় এসপিএফ ১৫ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন।
২ – ৩ ঘন্টা পর পর লিপবাম রিএপ্লাই করুন৷ ছাতা ব্যবহার করুন।
আদ্রতা হারালে ঠোঁট বিবর্ণ হয়ে যায়।
ঠোঁট কালো হয়ে যায়, ঠোঁট ফেটে যায়।
তাই এর জন্য চেষ্টা করবেন ভালো মানের একটি লিপবাম ব্যবহার করতে যা আপনার ঠোঁটকে পর্যাপ্ত ময়েশ্চারাইজ করে রাখবে।
বাদাম, আমিষ জাতীয় খাবার, আ্যমিনো এসিড যুক্ত খাবার খাওয়ার চেস্টা করুন।
গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ কিন্তু এসব ভিটামিনের অভাবেও হতে পারে।
আপনার স্কিন কেয়ার রুটিনে যদি ভিটামিন সি,নায়াসিনামাইড কিংবা প্রপলিস যুক্ত প্রোডাক্ট থাকে তাহলে মুখে দেওয়ার পর হাতে থাকা অবশিষ্ট ঠোঁটে হালকা করে দিতে পারেন।
রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে মোটা করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। সকালে উঠে হালকা রাব করে ধুঁয়ে ফেলবেন৷
এতে করে আপনার ঠোঁটের ডেড স্কিন সেল উঠে যাবে এবং ঠোট সফট অনুভূত হবে।
ঠোঁট ফাটা এড়াতে আমরা প্রায় সবাই যে ভুল সবচেয়ে বেশি করে থাকি, তা হলো ঠোঁটে একসাথে অনেক কিছু লাগানো।
তাই রাসায়নিক মিশ্রিত কসমেটিক্স ঠোঁটে যতটা সম্ভব কম লাগানোর চেস্টা করুন।
কেননা, ঠোঁটে লাগানোর কসমেটিক্সে ল্যানোলিন, স্যালিসিলিক অ্যাসিডের মতো উপকরণ থাকে, এগুলি ঠোঁটের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
ইস্ট ইনফেকশনের কারণে গরমে ঠোঁট ফাটতে পারে।
যাদের ঠোঁট চাটার/কামড়ানোর অভ্যাস থাকে, তাদের এই ইস্ট ইনফেকশন বেশি হয়।
এর জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হয়। আর এই অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি করুন
অনেক সময় পানিশূন্যতার কারণে আমাদের দেহ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায় এবং এর কারণে ঠোঁটও ফেটে যায়। তাই প্রচুর পানি করা প্রয়োজন।
অনেকের শিয়া বাটার, মোম জাতীয় পদার্থ বা ক্যাস্ট অয়েল থেকে ঠোঁটে এলার্জি হতে পারে।
অনেক সময় বিভিন্ন খাবার থেকেও এলার্জি হয়। যার প্রভাব ঠোঁটেও দেখায় যায়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।