Search
Close this search box.

থাইরয়েড এর লক্ষণ ও প্রতিকার

আমাদের শরীরের মধ্যে গোপনে কোন রোগ ক্রমশ বেড়ে উঠছে, তা আমরা সময়মতো বুঝতে পারি না। তার একটা কারণ, আমরা সমস্ত অসুখের লক্ষণগুলো জানি না। তাই শারীরিক লক্ষণগুলো জানা থাকলে রোগের সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।  

থাইরয়েড কী?

আমাদের ঘাড়ের সামনের দিকে স্বরযন্ত্রের দুই পাশে থাকা যে প্রজাপতি আকৃতির গ্ল্যান্ড দেখতে পাওয়া যায়, সেটিই থাইরয়েড গ্ল্যান্ড।

থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ হলো আমাদের শরীরের কিছু অত্যাবশ্যকীয় থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন করা। 

শরীরের জন্য এই থাইরয়েড হরমোনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে।

নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলেই শরীরের উপর বিভিন্ন রকমের বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে।

থাইরয়েড হরমোন কম উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিসম এবং বেশি উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিসম। 

থাইরয়েডের সমস্যায় অনেকের মধ্যেই বর্তমানে লক্ষ্য করা যায়। নির্দিষ্টি পরিমানের তুলনায় কম বা বেশি পরিমানে হরমোন নিঃসৃত হলেই শুরু হয় থাইরয়েডের সমস্যা। 

এ হরমোন আমাদের দেহের মধ্যে সজীব উত্‌পাদনের রাসায়নিক পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড হরমোন যেমন একদিকে আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে।

তেমনই থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের মাধ্যমে আমাদের শরীরের ক্ষতিও হয় অনেক ক্ষেত্রে। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের কর্মহীনতার জন্য আমাদের শরীর অনেক ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

সতর্ক থাকুন নিজের প্রয়োজনেই

থাইরয়েড হরমোনের অভাবে বা হাইপোথাইরয়েডিসমের ফলে গলা ফুলে উঠার সম্ভাবনা থাকে। গলায় হাত দিয়ে অস্বাভাবিক ফোলা কিছু পেলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন। 

এছাড়াও থাইরয়েড হরমোনের অভাবে গলার স্বরের পরিবর্তন হয়ে থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়।

থাইরয়েডের অভাবে ঘাম কম হয় এবং ত্বক তার প্রয়োজনীয় আদ্রর্তা পায় না। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। 

এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে রোগীদের মধ্যে নখ ভাঙ্গার বা নখে ফাটল ধরার প্রবণতাও বেশি।

থাইরয়েডে আক্রান্তদের হঠাৎ করেই কোনও কারণ ছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। 

তাই হঠাৎ করে ওজন পরিবর্তিত হয়ে থাকলে থাইরয়েড হরমোনের পরীক্ষা করানো উচিত।

একইভাবে হঠাৎ করেই বেশ খানিকটা ওজন কমে গেলেও হাইপারথাইরয়েডিসম থাকার সম্ভাবনা থাকে। 

হাইপো থাইরয়েডিসম হলো শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় কম থাইরয়েড হরমোন তৈরি হওয়া।

তাই নিয়মিত শরীর অবসন্ন লাগার অন্যতম কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়েডিসম।

রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরেও যদি সকালে অবসন্ন লাগে অথবা সারাদিন ধরে ঝিমুনি আসে তাহলে থাইরয়েড হরমোন ঠিক মতো কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।

একইভাবে হাইপোথাইরয়েডিসম হলে অতিরিক্ত চুল পড়া, চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

সারাক্ষণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা হাইপারথাইরয়েডিসম-এর লক্ষণ হতে পারে। 

সারাক্ষণ শরীরে অস্থির ভাব এবং বিশ্রামহীন বোধ হলে হাইপারথাইরয়েডিসমের সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা করানো দরকার।

থাইরয়েড হরমোনের স্বল্পতা বা আধিক্য, দুই ক্ষতিকর। তবে সময় মতো সনাক্ত করতে পারলে নির্দিষ্ট মাত্রার অসুধ খেয়ে পুরোপুরি সুস্থ থাকা সম্ভব। 

হঠাৎ ওজন পরিবর্তন 

হঠাৎ করেই কোনও কারণ ছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়াটা হাইপোথাইরয়েডিসমের ফলে হতে পারে।

খাওয়ার পরিমাণ না বাড়ানো সত্ত্বেও হঠাৎ করে ওজন পরিবর্তিত হলে থাইরয়েড হরমোনের পরীক্ষা করানো উচিত।

একইভাবে যাঁদের হঠাৎ করেই বেশ খানিকটা ওজন কমে যায়, তাঁদেরও হাইপারথাইরয়েডিসম থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা

সারাক্ষণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হাইপারথাইরয়েডিসম-এর লক্ষণ হতে পারে।

হাইপারথাইরয়েডিসম হল শরীরে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থাইরয়েড হরমোন তৈরি হওয়া।

সারাক্ষণ শরীরে অস্থির ভাব এবং বিশ্রামহীন বোধ করলে হাইপারথাইরয়েডিসমের সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।

চুলের সমস্যা 

হাইপোথাইরয়েডিসম হলে অতিরিক্ত চুল পড়া, চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দেয়।

থাইরয়েড হরমোনের স্বল্পতা বা আধিক্য, দুটিই শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

তবে সময় মতো সনাক্ত করতে পারলে নির্দিষ্ট মাত্রার অসুধ খেয়ে পুরোপুরি সুস্থ থাকা সম্ভব।

তাই থাইরয়েড হরমোন সমস্যার কোনও লক্ষণ দেখা গেলে তা অবহেলা করে ফেলে না রেখে দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অবসন্নতা 

নিয়মিত শরীর অবসন্ন লাগার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়েডিসম।

হাইপো থাইরয়েডিসম হল শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় কম থাইরয়েড হরমোন তৈরি হওয়া।

সারা রাত পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরেও যদি সকালে অবসন্ন লাগে অথবা সারা দিন ধরে ঝিমুনি আসে তাহলে থাইরয়েড হরমোন ঠিক মতো কাজ করতে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।

ত্বকের উপর প্রভাব 

হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।

হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে ঘাম কম হয় এবং ত্বক তার প্রয়োজনীয় আদ্রর্তা পায় না।

ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। হাইপোথাইরয়েডিসমের রোগীদের মধ্যে নখ ভাঙ্গার বা নখে ফাটল ধরার প্রবণতাও বেশি।

গলার স্ফীতি 

থাইরয়েড হরমোনের অভাবে অর্থাৎ হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে গলা ফুলে উঠতে পারে।

গলায় হাত দিয়ে কোনও অস্বাভাবিক ফোলা কিছু পেলে দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এ ছাড়াও থাইরয়েড হরমোনের অভাবে গলার স্বর কিছুটা কর্কশ বা গম্ভির হয়ে যেতে পারে।

নারীর রজঃজীবন

কৈশোরপ্রাপ্তি ও রজঃস্বলা হওয়া থেকে মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি পর্যন্ত যেকোনো সময়ই থাইরয়েড হরমোনের নানা ভারসাম্যহীনতা নারীর এই রজঃজীবনকে বিপর্যস্ত করতে পারে।

অনিয়মিত মাসিক, মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, কখনো মাসিক মাসের পর মাস বন্ধ থাকা হতে পারে থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণ।

কিশোরীর মাসিক শুরু হতে অনেক দেরি হওয়া বা খুব অল্প বয়সে সময়ের আগেই শুরু হয়ে যাওয়া, আবার মধ্যবয়সী নারীর সময়ের আগেই মেনোপজ হয়ে যাওয়া বা বেশি বয়স পর্যন্ত অতিরিক্ত মাসিক হতে থাকা—যেকোনো রকমের গোলমালই হতে দেখা যায় থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে।

তাই রজঃজীবনের যেকোনো পর্যায়ে যেকোনো রকমের অনিয়ম হলে থাইরয়েড পরীক্ষা করা জরুরি।

নারীর সন্তানধারণ

থাইরয়েড হরমোনের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব নারীর জীবনে ফার্টিলিটি বা সন্তান ধারণ বিষয়ে।

বন্ধ্যাত্ব, বারবার গর্ভপাত, গর্ভে সন্তানের মৃত্যু, গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে সমস্যা, সময়ের আগেই সন্তান প্রসব, গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ, প্রি একলাম্পসিয়া, একলাম্পসিয়া ইত্যাদি নানা জটিলতা নারীর জীবনকে জটিল করে তোলে এই থাইরয়েড সমস্যা।

হাইপো ও হাইপার থাইরয়েড দুই সমস্যার কারণেই সন্তানধারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, নারীর রিপ্রোডাকটিভ বা প্রজননসত্তা জীবনে এত ব্যাপক প্রভাব ফেলে বলে প্রত্যেক নারীর উচিত সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করলে একবার থাইরয়েড পরীক্ষা করে নেওয়া।

সন্তান ধারণে সমস্যা বা বারবার গর্ভপাত হলে তো তা অবশ্যকরণীয়।

স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে সামান্য একটু বেশি বা বর্ডারলাইনে (সাবক্লিনিক্যাল) থাকলেও তাঁকে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে।

থাইরয়েডের সমস্যা থেকে থাকলে গর্ভকালীন প্রতি ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পরপর পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা বারবার ঠিক করে নিতে হবে।

শুধু রোগ নয়, থাইরয়েডের নানা চিকিৎসাও (যেমন-অ্যান্টিথাইরয়েড ওষুধ, রেডিওআয়োডিন থেরাপি) গর্ভস্থ শিশু, এমনকি কোলের শিশু বা স্তন্যপানকারী শিশুর ক্ষতি করতে পারে।

তাই থাইরয়েডজনিত যেকোনো সমস্যা বা চিকিৎসার সময় সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

নারীর সন্তান পালন

সন্তান ধারণ ও প্রসবের সময় থাইরয়েডের সমস্যা যেমন পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে, তেমনি সন্তান হওয়ার পরও দেখা দিতে পারে নানা নতুন সমস্যা।

পোস্ট পারটাম থাইরয়েডাইটিস সন্তান জন্মের পরবর্তী ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে।

গর্ভকালীন বাড়তে থাকা থাইরক্সিনের মাত্রা আবারও ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার প্রয়োজন হয় সন্তান জন্মের পরবর্তী সময়ে।

ছোট্ট শিশুর সংসর্গ থাকাকালীন রেডিওআয়োডিন অ্যাবলেশন জাতীয় থেরাপি একেবারেই নিষেধ।

মায়ের থাইরয়েড সমস্যা থাকলে ভূমিষ্ঠ শিশুরও থাইরয়েড পরীক্ষা করা দরকার পড়ে।

আপাতদৃষ্টে সুস্থ সন্তান জন্ম দিলেও গর্ভকালীন মায়ের সামান্য থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা পরবর্তী সময়ে সন্তানের নানা বিকাশজনিত ঝামেলার সৃষ্টি করতে পারে।

বাচ্চার কথা বলতে বা দাঁড়াতে দেরি হওয়া, কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট, মেধা ও বৃদ্ধির সঠিক বিকাশ না হওয়া, স্কুলে ফলাফল খারাপ হওয়া বা মনোদৈহিক বৃদ্ধিতে পিছিয়ে পড়ার মতো বিষয়গুলো ধরা পড়তে পারে অনেক দেরিতে।

নারীর শারীরিক–মানসিক সুস্থতা

অকারণ খিটখিটে মেজাজ, বিষণ্নতা, আবেগপ্রবণ আচরণ—জীবনে কোনো না কোনো সময় এই ব্যাপারগুলো নারীর ব্যক্তিগত জীবনকে জটিল করে তোলে।

অনেকেই জানে না যে এর পেছনে থাইরয়েড হরমোনের হাত থাকতে পারে।

মুটিয়ে যাওয়া, ত্বক খসখসে বা শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়া, হাত–পা ফাটার মতো বিরক্তিকর সমস্যা থেকে ধরা পড়তে পারে থাইরয়েডের সমস্যা।

কখনো স্রেফ ক্লান্তি, ভালো না লাগা, অবসাদ, ঘুম ঘুম ভাব, স্ট্যামিনা কমে যাওয়ার মতো বিষয়গুলোকে পাত্তা না দিলেও এই সামান্য জিনিসই হতে পারে থাইরয়েডের সমস্যার লক্ষণ।

রক্তশূন্যতা, রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, হৃৎস্পন্দনের বাড়া–কমা, এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়াও হতে পারে এর সঙ্গে জড়িত।

নারীর যৌনজীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে এই থাইরয়েড হরমোন।

কিছু জরুরি কথা

নারীর শারীরিক, মানসিক, প্রজনন ও যৌনজীবনের নানা ক্ষেত্রে নানা পর্যায়ে নানা বিচিত্র উপসর্গ নিয়ে দেখা দেয় থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা।

নারীর জীবনে এই গ্রন্থির প্রভাব ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী। খুব সামান্য বা ক্ষুদ্র, প্রায় অনুল্লেখ্য উপসর্গকেও তাই আমলে আনা উচিত।

দিন দিন বাড়ছে নারীদের থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগ ও জটিলতা।

তাহলে কোন কোন লক্ষণ দেখে খুব সহজে বুঝবেন আপনার থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে সমস্যা হয়েছে?

১) সবসময় ক্লান্তি অনুভূত হওয়া।

২) কোষ্ঠকাঠিন্য।

৩) সহ্য শক্তি কমে যাওয়া।

৪) বিষণ্ণতায় ভোগা।

৫) খাওয়ার ইচ্ছে কমে যাওয়া।

৬) অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া।

৭) অনিয়মিত মেনস্ট্রুয়াল পিরিয়ড।

৮) যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া।

৯) চোখের সমস্যা।

শরীরে এই সমস্ত লক্ষণগুলো যদি আপনি দেখেন, তাহলে তত্‌ক্ষণাত্‌ চিকিত্‌সকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। থাইরয়েডের সমস্যা একেবারেই ফেলে রাখবেন না।

থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

যেহেতু থাইরয়েড রোগীদের অভাবজনিত কারণে হয়ে থাকে সেই জন্য আয়োডিনযুক্ত খাবারগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে আপনাকে খেতে হবে।

যেমন গাজর দুধ সামুদ্রিক মাছ শাকসবজি এবং মৌসুমি ফল গুলিতেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।

থাইরয়েডকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রোটিনের মাত্রা খুব বেশি থাকা দরকার সেই জন্য আপনার পাতে নিয়মিত মুরগির মাংস ডিম পনির ইত্যাদি খেলে থাইরয়েড সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

উচ্চ মানের টাইরোসিন আমিষযুক্ত খাবার খান। টাইরোসিন দরকার হয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে।

এটি পেতে খেতে হবে লাল মাংস, মাছ, মুরগির ডিম ও মাংস, কলা ও মিষ্টি কুমড়ার বিচি।

গয়ট্রোজেনাস খাবার যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, চিনাবাদাম, সয়াসস, ইত্যাদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া যাবে না। রান্না করে খাবেন, কাঁচা খাবেন না। থাইরয়েডে সমস্যা থাকলে এসব খাবার খাওয়া উচিত নয়।

গ্লুটেন প্রোটিনযুক্ত খাবার খাবেন, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ঠিক রাখে। এইজন্য গম, শস্যদানা, যব, বার্লি খেতে হবে।

থাইরয়েড ঠিক রাখার জন্য লিভারের সুস্থতা দরকার। লিভারের সুস্থতার জন্য ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খেতে হবে। বিভিন্ন তেলযুক্ত মাছ, কাঁচা বাদাম, অলিভ অয়েল-এ এটা পাওয়া যাবে। আয়োডিনযুক্ত লবণ খাবেন।

কীটনাশক ও হেভিমেটাল যেমন মারকারি, ক্যাডমিয়াম, দস্তা ব্যবহারে সতর্ক হবেন।

থাইরয়েড সমস্যার মোকাবিলা করতে হলে আপনার ঘুমের খুবই প্রয়োজন সেই জন্য রাত জেগে যারা থাকে তাদের এই সমস্যা বেড়ে যাওয়ার বেশি আশঙ্কা দেখা যায়।

তবে যাদের রাতে কাজ থাকে তারা দিনের বেলায় ঘুমিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমের ঘাটতি মেটাতে পারে।

থাইরয়েডের সমস্যা হলে আমরা বিভিন্নভাবে চিন্তায় পড়ি কিন্তু এই সময় নিজেকে শরীরচর্চা থেকে বিরত রাখলে হবে না।

নিয়মিত সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার কাটা উচিত।

থাইরয়েডের চিকিৎসা

উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা গেলে সম্ভবত এই রোগে আক্রান্ত।

চিকিৎসা করানোর জন্য প্রথমেই আপনাকে থাইরয়েডের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্লাড টেস্ট করাতে হবে।

চিকিৎসকের পরামর্শমতো আপনাকে সেই সকল ওষুধ সেবন করতে হবে, বাইরে থেকে কোনরকম ওষুধ সেবন করা চলবে না।

সুস্থ থাকতে বছরে অন্তত একবার রক্ত পরীক্ষা করে থাইরয়েড গ্রন্থির অবস্থা চেক করতে পারেন।