Search
Close this search box.

স্কিন কেয়ারে ভিটামিন সি

ভিটামিন সি আমাদের স্কিনে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে থাকা একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।

যার অপর নাম অ্যাসকরবিক অ্যাসিড৷

এই ভিটামিন আমাদের শরীরে স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধি এবং পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে।

এছাড়াও আমাদের বডি বা টিস্যু রিপেয়ার করতে সাহায্য করে।

একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দিনে ৭৫ গ্রাম ভিটামিন সি এর প্রয়োজন রয়েছে।

যা আমরা বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি, ফল প্রভৃতিতে পেয়ে থাকি৷ 

স্কিন কেয়ারে ভিটামিন সি এর উপকারিতা 

আমাদের ত্বকের ৬৪ শতাংশ হলো পানি।

ত্বক ভালো রাখতে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে, ত্বক-এর আর্দ্রতা ধরে রাখা খুব জরুরি।

ভিটামিন সি ত্বকের এই আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।  

সানস্ক্রিন এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, সানস্ক্রিন ব্যবহার করার আগে ভিটামিন সি-যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন। 

ত্বকে কোলাজেনের বৃদ্ধি ঘটিয়ে ত্বককে টানটান এবং সতেজ রাখতেও জুড়ি নেই ভিটামিন সি-এর। 

স্কিনে মেলানিন প্রোডাকশন বেড়ে গেলে অনেক সময় সানস্পট, এজিং, মেছতা এসব সমস্যা দেখা যায়।

ভিটামিন সি স্কিনের এই মেলানিন প্রোডাকশন বন্ধ করে এসব সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

স্কিনের অন্যতম একটি কমন সমস্যা হলো হাইপার পিগমেন্টেশন

এছাড়াও অনেক সময় একনে হয়ে তা সেরে যাবার পর, সেখানে একনে স্পট দেখা দেয়।

ভিটামিন সি এইসব দাগ দূর করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে।

ভিটামিন সি তে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুনাগুন ত্বকের লালচে ভাব, ব়্যাশ, জ্বালা-ব্যথা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে কিংবা রান্নার আগুনের তাপে ত্বকে অনেক সময় বাদামী তিল হতে পারে।

ভিটামিন সি এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বাদামী তিল দূর করতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও ত্বকে বয়সের ছাপ দূর করতে, কোলাজেন প্রোডাকশন বৃদ্ধি করতে,ডার্ক সার্কেল দূর করতে ভিটামিন-সি দারুণ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 

ভিটামিন সি স্কিনকে সান ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে ।

সান এক্সপোজারে  আপনার স্কিনের যে ক্ষতিগুলো হয়, সেগুলো রিপেয়ার করার জন্য ভিটামিন সি এর কাজ অতুলনীয়। 

ভিটামিন সি কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

ভিটামিন সি ব্যবহার করার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি উপায় হচ্ছে এটি সিরাম আকারে ব্যবহার করা।

যেকোন স্কিন টাইপের মানুষ এই সিরাম ব্যবহার করতে পারবে।

তবে এর জন্য অবশ্যই বেসিক স্কিন কেয়ার করতে হবে। প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

এটা কোনভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না । ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে।

ভিটামিন সি সিরাম দিনে বা রাতে যে কোন সময় ব্যবহার করা যাবে।

রাতে ক্লিনজার-এর পর এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার আগে ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করতে হবে।

দিনে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার আগে ভিটামিন সি  সিরাম ব্যবহার করতে হবে। এরপর সানস্ক্রিন এপ্লাই করতে হবে।

এতে করে সারাদিন সূর্য,ধুলাবালি ইত্যাদি থেকে সৃষ্ট  ফ্রি রেডিক্যালস থেকে আপনার স্কিন মুক্ত থাকবে। 

ভিটামিন-সি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা

রেটিনল আর ভিটামিন সি সিরাম দুটোই অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস যুক্ত, একসাথে ব্যবহার করলে একটি আরেকটিকে ইনঅ্যাকটিভ করে ফেলে।

সেক্ষেত্রে একটি সকালে, আরেকটি রাতে ব্যবহার করতে পারেন।

রেটিনল রাতে ব্যবহার করলে, পরের দিন সকালে বেসিক স্কিন কেয়ার করে ভিটামিন সি সিরাম লাগাতে পারেন।

ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করার সময় গ্লাইকোলিক, স্যালিসাইলিক এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড, এগুলো একসাথে ব্যবহার  করবেন না।

বেসিক স্কিন কেয়ার এর ৩ মাস হলেই ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করতে পারবেন। এর আগে না! 

যারা ভিটামিন সি সিরাম নতুন বা প্রথম  ব্যবহার করবেন তারা চেষ্টা করবেন সবচেয়ে কম পার্সেন্টেজ যুক্ত ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করতে।

যেমন ৩% দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে স্কিনে মানানসই হয়ে গেলে ধীরে ধীরে এর মাত্রা বাড়াতে পারবেন।

অনেকেরই ভিটামিন সি সিরাম স্যুট করে না। তাই ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নিবেন।

প্যাচ টেস্ট হলো আপনার স্কিনে কোন প্রোডাক্ট মানানসই কিনা তা পরীক্ষা করার পদ্ধতি।

প্যাচ টেস্ট করার জন্য এক ফোঁটা ভিটামিন সি সিরাম আপনার থুতনিতে বা কপাল এবং নাকের উপর অর্থাৎ টি জোনে দুই ইঞ্চি-এর মতো লাগিয়ে রাখুন।

১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এই সময়ের মাঝে  স্কিনে অন্য কোন প্রোডাক্ট এপ্লাই করা যাবে না।

এই সময়ের মধ্যে যদি স্কিন চুলকায়, গরম মনে হয়, লাল বা র‍্যাশ হয় তাহলে সিরামটি আর ব্যবহার করবেন না।

আর যদি কোন ধরনের সমস্যা না হয় তাহলে নিশ্চিন্তে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। 

ভিটামিন-সি বাতাস এবং আলোর সংস্পর্শে জারণ প্রতিক্রিয়ায় বিক্রিয়া ঘটিয়ে ফেলে।

তাই ভিটামিন সি সিরাম একটু ঠান্ডা এবং আলো থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবেন। 

অনেকেই মনে করেন যে, নায়াসিনামাইড এবং ভিটামিন সি একসাথে ব্যবহার করা যাবে না।

এ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।

এই দুটি উপাদানের মিশ্রণ-এর উপকারিতা অসাধারণ।

এরা একত্রে এজিং এবং হাইপার পিগমেন্টেশন  এর ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করে।

অনিয়মিত ত্বকের টোন এবং টেক্সচার, বিবর্ণতা রোধ এবং পোর মিনিমাইজ করতে সাহায্য করে নায়াসিনামাইড এবং ভিটামিন সি৷ 

অনেকের ধারনা সকালে ভিটামিন সি ব্যবহার করা যাবে না

সকালে ভিটামিন সি ব্যবহার করলে স্কিন সান সেনসিটিভ হতে পারে। এ ধারণাটি আসলে ভুল।

সকালে সানস্ক্রিন এর সাথে ভিটামিন সি ব্যবহার করলে সান প্রোটেকশন এর মাত্রা বেড়ে যায়।

তাই ভিটামিন সি দিনে ব্যবহার করলে কোন সমস্যা হবে না।