পোশাকের সঙ্গে মানানসই মেকআপ অনেক বেশি জরুরি। কিন্তু শীতের পোশাকের সঙ্গে সাজগোছের বিষয়টি অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। শীতের পোশাকের সঙ্গে কেমন মেকআপ হবে, সেটি খেয়াল রাখতেই আমাদের আজকের এই টিপস। পোশাকের সঙ্গে মেকআপ ঠিক রাখতে কী কী করবেন, সেটি নির্ভর করে সময়ের ওপর। তাই সময় এবং পোশাকের ধরন বুঝেই সারতে হবে শীতের মেকআপ।
মুখের মেকআপ
শীতকালে মুখের মেকআপ করার সময় একটু বেশি যতœ নিতে হবে, বিশেষ করে যাদের ত্বক শুষ্ক। মেকআপের আগে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। যাদের স্কিন ড্রাই, তাদের মুখ পরিষ্কারের জন্য ক্লিনজিং মিল্ক ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। সাধারণ থেকে অয়েলি স্কিন যাদের, তারা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। মুখে মৃত কোষ থাকলে, অল্প বেসন গুলে আলতো করে স্ক্রাবিং করে নেবেন। যাদের মুখে ওপেন পোর্স বা সূক্ষ্ম ভাঁজ আছে, তারা অবশ্যই ভিটামিনযুক্ত টোনার দিয়ে টোনিং করবেন। এবার নিজের স্কিনটোনের সঙ্গে মিলিয়ে লিকুইড ফাউন্ডেশন নিন। মুখে হালকা ভেজা ভাব থাকা অবস্থায়, ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার ফাউন্ডেশনে মিশিয়ে, নিজের মুখে এবং ঘাড়ে ভালো করে মেখে ফেলুন। খেয়াল রাখতে হবে, ফাউন্ডেশন যেন ত্বকের সঙ্গে পুরোপুরি মিশে যায়। মেকআপ করে দিনের বেলা বাইরে বেরুতে হলে মনে রাখবেন, শীতেও কিন্তু সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। তাই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সানস্ক্রিন মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার হালকা করে পুরো মুখে মেখে নিতে হবে। তবে খুব বেশি ড্রাই স্কিন হলে, শীতকালে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ব্যবহার না করাই ভালো। ব্লাশার ব্যবহার করতে চাইলে, স্কিনটোনের সঙ্গে মানাবে এমন শেডই ব্যবহার করবেন।
চোখের মেকআপ
শীতে যেহেতু ঘেমে যাওয়ার সমস্যা নেই, তাই চোখের মেকআপ ডার্ক হতেই পারে। যাদের শুষ্ক ত্বক, তারা প্রথমে চোখের পাশ ভালো করে ময়েশ্চারাইজড করে নেবেন। ভ্রু যদি ঘন না হয়, তা হলে চুলের রঙের চেয়ে তিন শেড হালকা রঙের আই ব্রো পেনসিল ভ্রুতে বুলিয়ে নিতে পারেন অথবা কালচে খয়েরি রঙের আইশ্যাডোও ভ্রুতে লাগাতে পারেন। এবার ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচ করে আইশ্যাডো লাগান। চোখের ওপরের অংশ থেকে আইশ্যাডো ক্রমশ গাঢ় থেকে ভ্রুর দিকে হালকা হবে। ভ্রুর নিচে হালকা কিন্তু উজ্জ্বল রঙের (সিলভার, পিচ) হাইলাইটার লাগাতে পারেন। শীতকালে উজ্জ্বল রঙের আইশ্যাডো দেখতে বেশ ভালো লাগে। তবে গায়ের রং চাপা হলে লাল, গোলাপি এবং গাঢ় শেডগুলো ব্যবহার না করাই ভালো, মেরুন, ব্রোঞ্জ, হালকা গোল্ডেন এবং যেকোনো ন্যাচারাল রংও আপনি লাগাতে পারেন। এবার আই-লাইনারের তুলি দিয়ে উপরের চোখ মনমতো করে এঁকে নিন। এখন কিন্তু চোখ টেনে আঁকার স্টাইলটা বেশ চলছে। তবে চোখ খুব বড় হলে সরু করে লাইনার লাগাবেন। যাদের চোখ ছোট, তারা চোখের কোণ থেকে শুরু করে চোখের বাইরে একটু বের করে লাইনার পরতে পারেন, এতে চোখ বড় দেখাবে। এবার নিচের চোখে কাজল পেনসিল বুলিয়ে নিন। মাসকারার ব্রাশ দিয়ে ভালো করে আইল্যাশগুলো উপরের দিকে তুলে দিন।
ঠোঁটের মেকআপ
সুন্দর ঠোঁট মুখকে আরও সুন্দর করে, তাই না? কিন্তু শীতকালে ঠোঁট ফাটা একটি বড় সমস্যা। তাই শীতে ঠোঁট সর্বদা ময়েশ্চারাইজড রাখতে হবে। মেকআপের সময় ঠোঁট ফাটা থাকলে, কিন্তু কোনো মেকআপ ভালো দেখাবে না। প্রথমে লিপলাইনার দিয়ে সুন্দর করে ঠোঁট এঁকে নিন। যাদের ঠোঁট পাতলা, তারা বাইরের দিক দিয়ে ঠোঁট এঁকে নেবেন। ঠোঁট পুরু হলে ভেতরের দিক দিয়ে বর্ডার করবেন এবং অতিরিক্ত অংশে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নেবেন। এবার লিপ লাইনার এবং পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়ে লিপস্টিক লাগান। যাদের গায়ের রং চাপা বা ঠোঁট কালচে তাদের গ্লসি ন্যাচারাল রং ভালো লাগে। যারা ফর্সা, তারা গাঢ় থেকে হালকা যেকোনো রংই পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। শীতের জন্য গ্লসি লিপস্টিক হলে সবচেয়ে ভালো। এ সময় ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক ভুলেও ব্যবহার করতে যাবেন না, ঠোঁট আরও শুকনো দেখাবে। যারা গাঢ় রংয়ের লিপস্টিক পরতে পছন্দ করেন না, তারা লিপস্টিকের বদলে ন্যাচারাল কালারের লিপগ্লসও ব্যবহার করতে পারেন।