গরমকালে ব্রণ বেরোলে তার সঙ্গে তবু যুঝে ওঠা যায়, কিন্তু শীতের দিনেও যাদের ব্রণ হয়?
নিঃসন্দেহে তারা খুব বিরক্ত হন।
তার কারণ একে তো ত্বকের রুক্ষতার সঙ্গে প্রাণান্তকর একটা লড়াই চালাতে হয়।
তার উপর যদি ব্রণর আক্রমণ ঠেকানোর উদ্যোগ নিতে হয়, তা হলে তো বিরক্ত হওয়ারই কথা!
কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন, কেন এমনটা হয়?
শীতের দিনে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য আপনার সিবেসিয়াস গ্ল্যান্ড বেশি বেশি তেল উৎপাদন করে।
তাই ত্বকে তেলের একটা উপস্থিতি থাকেই।
তার উপর রুক্ষতা কাটানোর জন্য নিশ্চয়ই অন্য সময়ের চেয়ে ভারী ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার করেন?
এর উপর আছে বায়ু দূষণ-ধুলো ময়লার প্রভাব।
বেশিরভাগেরই মাথায় খুশকিও হয় শীতের রুক্ষ দিনে।
আর এই সব উপাদানের মিলিত আক্রমণে আপনার ত্বকের ছিদ্র বা পোরস বন্ধ হয়ে যায়।
তা থেকেই ইনফেকশন হয়ে ব্রণ দেখা দেয়।
যদি আপনি মুখে বারবার হাত দেন, তা হলে কিন্তু সমস্যা আরও বাড়বে।
সেই সঙ্গে যাঁরা ক্রনিক হাঁচি-কাশি বা ঠান্ডা লাগার সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের শরীরে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহের মাত্রাও বেশি থাকে।
ফলে সেই কারণেও ব্রণ বাড়ে।

ব্রণ থেকে বাঁচার জন্য কী করবেন?
প্রথমত, শরীর ভিতর থেকে সুস্থ ও শীতল রাখার চেষ্টা করতে হবে।
ইনফ্লামেশন কমানোর চেষ্টা করুন, অতিরিক্ত গরম জলে মুখ ধোওয়া বা স্নান করা সমস্যা আরও বাড়াবে।
পুষ্টিকর খাবার খান। খাদ্যতালিকায় বাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড, তৈলাক্ত মাছ, ফুল ফ্যাট দুধ, কুসুমসহ ডিম ইত্যাদি থাকা উচিত।
তা শরীরকে প্রয়োজনীয় ফ্যাটের জোগান দেবে, ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়বে না আগে থেকেই।
শীতে যে সব ফল পাওয়া যায়, যেমন পাকা পেঁপে, কমলালেবু, স্ট্রবেরি খাওয়ার পাশাপাশি ফেস প্যাকের উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করুন।
খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি-এর ঘাটতি থাকলে কিন্তু ত্বক ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে।
প্রচুর জল খান। হালকা ফেস ওয়াশ ব্যবহার করুন, বারবার এক্সফোলিয়েট করার প্রয়োজনীয়তাও নেই।
দুধের সর বা নারকেল তেল আর মধুর মিশ্রণে ত্বক খুব ভালো পরিষ্কার হবে।
হালকা ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার করুন, দরকারে তা দিনের মধ্যে কয়েকবার ব্যবহার করবেন।
তবে ময়েশ্চরাইজার যেন অতিরিক্ত সুগন্ধি না হয়, তা দেখবেন।
তাতে কিন্তু ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে।

চন্দন, মধু আর টি ট্রি অয়েল ব্রণর উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ব্রণের উপর রাতে শোওয়ার আগে এক ফোঁটা ডাইলিউটেড টি ট্রি অয়েল, চন্দনের ফোঁটা বা খাঁটি মধু দিয়ে রাখুন।
সকালে জলে ধুয়ে নিন। এরকম টানা কয়েকদিন করলেই ব্রণ বসে যাবে।
সেই সঙ্গে দেখবেন যেন পেট পরিষ্কার হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে কিন্তু ব্রণ সারানো আরও কঠিন হয়ে যাবে।
তাই শীতের দিনেও জল খাওয়ার পরিমাণ কমাবেন না।
খুব ভালো হয় সারাদিন ঈষদুষ্ণ জল চুমুক দিয়ে পান করতে পারলে।