Search
Close this search box.

কাঠের চিরুনি কেন ব্যবহার করবেন?

অনেক আগে থেকেই কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা হত।

দেখা যায় আমাদের মা, দাদিদের চুল ছিলো শক্ত, লম্বা ও ঘন। তার কারণ তারা কাঠের চিরুনি ব্যবহার করতেন।

তখন প্লাস্টিকের প্রচলন এত ছিল না।

আর আমাদের নতুন যুগে আমরা ব্যবহার করি বিভিন্ন রঙের আর বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের চিরুনি।

আর তার ফলেই চুলে দেখা দেয় নানান সমস্যা। কারণ প্লাস্টিকের  চিরুনিতে থাকে বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান, যা চুলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

যে কারণে প্লাস্টিকের চিরুনি ভালো না

প্লাস্টিক তৈরি হয় ইথিলিন যৌগ দিয়ে যার তৈরি দিয়ে আঁচড়াবার সময় মাথায় প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন করে।

উৎপন্ন তাপ আমাদের চুল ও স্ক্যাল্প এর ক্ষতি সাধন করে।

আমাদের চুল বা স্ক্যাল্প এই তাপ নিতে না পেরে ভেঙে যায় আর ভুল পড়া শুরু হতে থাকে। 

আমাদের অনেকের স্কাল্পেই এলার্জির সমস্যা হয়।

প্লাস্টিকের ক্ষতিকর উপাদান থেকে এই সমস্যাটি হয়।

কিন্তু কাঠের চিরুনি ব্যাবহার করলে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।

কেন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা ভালো 

প্রাকৃতিক ভাবে কাঠের চিরুনি চুলের জন্য খুবই ভালো।

কারণ কাঠের চিরুনি মাথায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

কাঠের চিরুনিতে ক্ষতিকর কোনো উপাদান নেই।

ফলে এটি আমাদের মাথার ত্বকের জন্য খুব নমনীয়।

কাঠের চিরনি ব্যাবহার করা হলে এটি মাথার সমস্ত দিকে সমান ভাবে রক্ত সঞ্চালনকে ছড়িয়ে দেয়।

যেটা সুন্দর চুলের জন্য খুবই দরকারি উপাদান।

চুল ভেঙে যাওয়া রোধে

এখন চুল ভেঙে যাওয়া খুব কমন একটি ব্যপার।

চুল ভেঙ্গে যাওয়ার সমস্যা প্রায় সবারই দেখা যায়।

কিন্তু যখন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করলে ওই সমস্যা দূর করা সম্ভব।

আমাদের স্ক্যাল্প এ প্রাকৃতিক ভাবে যে তেল উৎপন্ন হয়, কাঠের চিরুনি এই তৈলাক্ত ভাবকে সমস্ত চুলে সুন্দর ভাবে ছড়িয়ে দেয়।

ফলে চুল তার প্রয়োজনীয় ময়েশ্চার পায়। এর ফলে চুল একটা বাউন্সি লুক পায়। এবং চুল ফেটে যাওয়া নিয়ন্ত্রন করে।

উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দিতে

আশেপাশের ধূলাবালি, দূষণ ও বিভিন্ন কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করার ফলে আমাদের চুল খুব নির্জিব ও রুক্ষ হয়ে যায়।

চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা চলে যায়।

কাঠের চিরুনি ব্যবহার করলে আমাদের মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে।

আর প্রাকৃতিক তেল সমানে ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে আমাদের চুল তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় এবং নির্জিব হওয়া থেকে বেঁচে যায়। 

খুশকি প্রতিরোধে

খুশকির সমস্যা নিয়ে কম বেশি সবাই ভোগে।

কাঠের চিরুনি এই সমস্যা রোধে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।

খুশকি হলো মাথার ত্বক জ্বলুনির ফলাফল।

কাঠের চিরুনির নরম, গোলাকৃতির দাঁতগুলি মাথার ত্বকে কাটা বা ত্বকে ত্বকে খারাপভাবে বিতরণ করবে না ফলে খুশকির সম্ভাবনা কমে যায়।

আর কাঠের চিরুনি তেলকে মাথার সমস্ত দিকে সুন্দর ভাবে ছড়িয়ে দেয়।

যেটা স্ক্যাল্প ময়েশচারাইজড্ করে। এর ফলে খুশকির মত সমস্যা গুলি হয় না।

তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করতে

কাঠের চিরুনি আপনার চুল, ত্বক এবং মাথার ত্বকের মতো কার্বন ভিত্তিক।

যেহেতু চুল এবং কাঠ উভয়েরই নেতিবাচক বৈদ্যুতিক চার্জ রয়েছে, তাই একটি কাঠের চিরুনি আপনার চুলকে শুয়ে থাকতে সহায়তা করে।

এবং এটিকে একটি মসৃণ এবং চকচকে চেহারা দেয়।

কাঠ যেহেতু একটি প্রাকৃতিক উপাদান, তাই এটি এলার্জি বা ত্বকের অবস্থার উদ্দীপনা জাগ্রত করতে পারে না যা প্লাস্টিক এবং ধাতব চিরুনি ব্যবহার বাড়িয়ে তোলে।

ভলিউম বৃদ্ধি করতে 

যখন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা হয়, তখন প্রাকৃতিক ভাবে চুলের ভলিউম বাড়ে।

হয়তো বিশ্বাস হবেনা। কিন্তু এটা সত্যি।

আমরা জানি কাঠের ভেতর দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়।

আর ঘর্ষণের ফলে তড়িৎ উৎপন্ন হয়।

তাই এতি চুলকে  একত্রে পেচিয়ে ফেলে না ফলে চুলে ভলিউম সৃষ্টি হয়। 

ট্যাংলিং বা জট ছাড়াতে

আপনার কাঠের চিরুনি মাথার ত্বকে এবং চুলের মধ্য দিয়ে মসৃণভাবে গ্লাইড হওয়ার সাথে সাথে ডি-ট্যাংলিং সহজ এবং ভাঙা চুল নিরাপদে এড়ানো যায়।

এছাড়াও, যেহেতু আপনার কখনো ভেজা চুলগুলি ব্রাশ করা উচিত নয়, কেবল এটি চিরুনি দেওয়া উচিত তখনই যখন চুল শুকিয়ে আপনি সেট হয়ে গেছেন।

পরিষ্কার ত্বক পেতে

কাঠের চিরুনি দিয়ে আঁচড়ালে মাথা পরিষ্কার থাকে।

কারন আঁচড়াবার সময় মাথার ধুলো ময়লা বেরিয়ে আসে চিরুনির সঙ্গে ।

তার ফলে স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকে। এবং চুল কম পড়ে।

কাঠের চিরুনি দিয়ে আঁচড়ালে চুল চকচকে হয়।

এটি স্কাল্পের  তেলকে সমস্ত দিকে ছড়িয়ে দেয় এবং প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের কাজ করে।

কাঠের চিরুনি শুধু রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় না।

এটি চুলের গুনাগুন বাড়ায়। চুলকে গোড়া থেকে শক্ত করে।

কোন ধরনের চুলে কাঠের চিরুনি উপযোগী? 

আপনার চুল যেমন ই হোক না কেন কাঠের চিরুনি সব রকমের চুলের জন্য একদম পারফেক্ট।

এটি বলতে গেলে মায়েদের মতো চুলের যত্ন করে চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে দ্বিগুণ।  

কাঠের চিরুনি পরিষ্কার করার সঠিক নিয়ম

আপনার কাঠের চিরুনি সবসময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন।

আঁচড়ানর পর চিরুনিতে অতিরিক্ত বা ভেঙে যাওয়া চুল থাকলে সেটা বের করে ফেলে দিন। 

কাঠের চিরুনি রাখার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এটি যেন ভেজা জায়গায় না থাকে।

কোনো শুকনো জায়গায় রাখাবেন। কারণ পানি কাঠের শত্রু।

পানিতে ভেজা অবস্থায় থাকলে সেটা খুব শীঘ্রই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

মাঝে মাঝে আপনার কাঠের চিরুনি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, তিসি, ফ্লেক্স সিড বা নারকেল তেল মাখানোর চেষ্টা করুন।

এবং তেল কাঠের মধ্যে ভেজানো না হওয়া পর্যন্ত আধা ঘন্টা বসে থাকুন। তারপর নরম কাপড় দিয়ে আলতো করে মুছে নিলেই ব্যাস রেডি। 

তাহলে জানা গেলো কাঠের চিরুনির উপকারিতা। তাহলে আজ থেকেই ব্যবহার করতে শুরু করুন। আর নিজের চুলের যত্ন করুন।