সারাদিন নানা ঝামেলায় স্কিনের যত্ন নিতে আমরা ভুলে যাই।
তার উপর যারা আছি নিয়মিত ঘর-সংসার সামলাই কিংবা অফিস বা কাজ করতে হয়, তাদের তো স্কিন কেয়ার রুটিনটা হয়ে যায় আরো ওলট-পালট।
অথচ অল্প কিছু স্টেপ ফলো করলেই কিন্তু রোজকার স্কিন কেয়ারটা হয়ে যায়।
চলুন দেখে নিই কর্মজীবি নারীর প্রতিদিনের স্কিন কেয়ার রুটিনের স্টেপগুলো।
স্টেপ ওয়ান: ফোমিং ফেসওয়াশ বা ফেস ক্লিনজার
প্রতিদিনই ঘুম থেকে উঠে আগে মুখটা পরিষ্কার করে নিন। কয়েকবার মুখে পানির ঝাপটা দিন।
এরপর আপনার স্কিনের সাথে মানিয়ে যায় এমন ফোমিং ফেসওয়াশ বা ফেস ক্লিনজার দিয়ে ম্যাসাজ করে মুখটা পরিষ্কার করে নিন।
সাধারণ ফেসওয়াশের চাইতে ফোমিং ফেসওয়াশ বা ফেস ক্লিনজার স্কিনের জন্য বেশি উপকারী।
স্টেপ টু: বরফ ঘষুন
ফেস পরিষ্কার করা হয়ে গেলে এবার মুখে বরফ ঘষুন।
স্কিনের ব্লাড সার্কুলেশন বাড়িয়ে স্কিনকে এক্সোফোলিয়েট করতে সাহায্য করে বরফ।
এছাড়াও বরফ স্কিনের পোরস টাইট করে, অয়েলি ভাব কমায়, ব্রণের আগমন প্রতিরোধ করে, ডার্ক সার্কেলস দূর করে এবং রিঙ্কেলস কমিয়ে দেয়।
নিয়মিত বরফ ঘষলে স্কিনের দাগগুলোও হালকা হয়ে যায়।
স্টেপ থ্রি: টোনার
মুখ পরিষ্কার করে এবার আপনার স্কিনের ধরন অনুযায়ী টোনার লাগিয়ে নিন।
অনেকেই টোনার ইউজ করতে চান না। অথচ যে কোনো ধরনের স্কিনের যত্নেই টোনারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
অয়েলি স্কিনের জন্য অ্যালকোহল বেসড টোনার খুবই উপযোগী।
এটি স্কিনের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে স্কিনকে অয়েল ফ্রি রাখতে সাহায্য করে।
আবার শুষ্ক ত্বকের জন্য ওয়াটার বেসড টোনার খুবই উপকারী। এটি ড্রাই স্কিনকে সতেজ রাখে।
এছাড়াও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই অথবা ভিটামিন বি সমৃদ্ধ টোনারগুলোও স্কিন ভালো রাখতে সাহায্য করে।
স্টেপ ফোর: এসেনশিয়াল অয়েল
টোনারের পর লাগিয়ে নিন এসেনশিয়াল অয়েল।
নিয়মিত একটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করলে রিঙ্কেলস দূর হয়, স্কিনটোনের ব্যালেন্স ঠিক থাকে।
এটি অ্যান্টি এজিংয়ের জন্যেও উপকারী। তাছাড়া যে কোনো ধরনের ক্ষত, দাগ, একজিমা, এলার্জি থেকেও স্কিনকে মুক্ত রাখে।
স্টেপ ফাইভ: সিরাম
এবারে একটা সিরাম লাগিয়ে নিন। আপনার স্কিনকে কোমল, মসৃণ ও মোলায়েম রাখতে সিরাম অতীব প্রয়োজনীয়।
সিরাম স্কিনের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এটি স্কিনের ইনফ্ল্যামেশন দূর করে এবং পল্যুশন ও সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নির হাত থেকে স্কিনকে রক্ষা করে।
তাই স্কিনকে সতেজ ও স্বাস্থ্যকর রাখতে টোনার মিস করলেও সিরাম কিন্তু অবশ্যই লাগাবেন।
স্টেপ সিক্স: আই ক্রিম
আমাদের চোখ ও চোখের চারপাশের স্কিন খুবই সেনসেটিভ অংশ। তাই এটুকুর যত্নও হওয়া চাই তেমন ধরনেরই।
সে কারনেই চোখ ও এর আশেপাশের অংশে আই ক্রিম লাগানো জরুরি।
আই ক্রিম ডার্ক সার্কেলস ও ফাইন লাইনস দূর করে।
এসপিএফ বেসড আই ক্রিম লাগানো ভালো, এটি সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি থেকে চোখ ও এর আশেপাশের স্কিনকে রক্ষা করবে।
স্টেপ সেভেন: ময়েশ্চারাইজার ও লিপ
স্কিন ভালো রাখতে চান আর ময়েশ্চারাইজারের কথা ভুলে যাবেন, তা কিন্তু হবে না।
স্কিনে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে কখনোই ভুলবেন না।
স্কিনকে আর্দ্র ও সতেজ রাখতে ময়েশ্চারাইজার আপনার স্কিন কেয়ার রুটিনে আবশ্যিক।
সেই সাথে ঠোঁটকেও ময়েশ্চারাইজ করুন।
লিপ ময়েশ্চারাইজার কালচে ভাব, সানট্যান ও মরা চামড়া দূর করে ঠোঁটকে আরো সুন্দর করে তোলে।
স্টেপ এইট: সানস্ক্রিন
ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে এবার সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন।
সানস্ক্রিন ত্বকের উপরে একটি শক্তিশালী আবরণ তৈরি করে ফেলে যা সানবার্ণ, ট্যান, ব্লেমিশেজ, এজিং, ধুলোবালি, দূষণ, ক্ষতিকর রশ্নির হাত থেকে স্কিনকে রক্ষা করে।
তাই সব সময় সব ঋতুতেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
এ তো গেলো দিনের শুরুর স্কিন কেয়ার। দিন শেষেও তো কেয়ার নিতে হবে।
সাধারণত রাতের বেলা স্কিন নিজেই নিরাময় হতে শুরু করে।
রাতের স্কিন কেয়ারটা তাই হয় স্কিনের নিজস্ব নিরাময়ের সহযোগী।
রাতের স্কিন কেয়ার শুরু করুন সকালের মত করেই
মুখটা ধুয়ে পরিষ্কার করে বরফ ঘষে নিন।
অতিরিক্ত হিসেবে আপনার স্কিনের ধরণ অনুষায়ী একটা ফেস মাস্ক লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষন।
এরপর সকালের স্টেপগুলো কমপ্লিট করুন। শেষ স্টেপটায় ময়েশ্চারাইজারের পর নাইট ক্রিম লাগিয়ে নিন।
এটি স্কিনের আর্দ্রতা বজায় রেখে স্কিনের স্বাভাবিক নিরাময় প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
তাছাড়া স্কিনে বয়সের ছাপ পরতে দেয় না, দাগ দূর করে স্কিনকে আরো সুন্দর করে তোলে।