চুলে নানারকম ‘কাট’ কেটে নিউ লুক তো আছেই, সেইসাথে এখন গত কয়েকবছর ধরে নতুন স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করে দিচ্ছে হেয়ার স্ট্রেটনিং।
বিয়েবাড়ি হোক বা কোনো অনুষ্ঠান —হেয়ার স্ট্রেটনিং যেন মাস্ট।
তাই আমাদের ‘নতুন’ হয়ে ওঠার চার্টে থাকে হেয়ার স্ট্রেটনিং।
হেয়ার স্ট্রেটনিং আপনি যদি প্রথমবার করেন, তাহলে খুবই স্বাভাবিক আপনার মনে এই নিয়ে নানা প্রশ্ন আসা।
নতুন জিনিস করার আগে ভালো করে সে বিষয়ে জেনে নিতে কে না চায়! আর সেই বিষয়টি যখন হয় আপনার চুলের সাথেই জড়িয়ে!
এমনিতেই আজকাল নানাকারণে চুল পড়া অত্যধিক বেড়ে গেছে।
সেইসাথে বাড়ছে চুল রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যাবার সমস্যাও।
তাই হেয়ার স্ট্রেটনিং করিয়ে স্মুদ, নরম সিল্কি চুল পাবার লোভ ষোলো আনা থাকলেও করানোর আগে স্বভাবতই জেনে নিতে ইচ্ছে করে এটা চুলের জন্য আদৌ কতটা নিরাপদ বা হেয়ার স্ট্রেটনিং কি চুল পড়ার বা রুক্ষ হয়ে যাবার জন্য দায়ী থাকে?
হেয়ার স্ট্রেটনিং কী
চুলকে কৃত্রিমভাবে সিল্কি, স্মুদ ও স্ট্রেট করার যে প্রক্রিয়া তাকেই বলা হয় হেয়ার স্ট্রেটনিং।
এই স্ট্রেটনিং-এর গোটা প্রক্রিয়াটাই আসলে হয় কিন্তু চুলে ‘হিট’ বা উত্তাপ দিয়ে।
এর নানারকম প্রক্রিয়া আছে। এর মধ্যে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট, জাপানী পদ্ধতিতে থার্মাল ট্রিটমেন্ট, নানারকম কেমিক্যাল দিয়ে ট্রিট করে চুলকে স্ট্রেট করা প্রধান।
হেয়ার স্ট্রেটনিং পার্মানেন্ট ও টেম্পোরারি এই দুরকম হতে পারে।
হেয়ার স্ট্রেটনিং-এর উপকার
লোকে আপনার স্মুদ, সিল্কি, উজ্জ্বল, সুন্দর লম্বা স্ট্রেট চুলের দিকে তো তাকাবেই।
এছাড়া স্ট্রেট চুল কিন্তু ম্যানেজ করাও সোজা হয়।
ঠিকভাবে স্ট্রেট চুলের যত্ন নিলে দেখবেন চুলে জটও কম পড়ছে। চুল আঁচড়াতেও সুবিধা হচ্ছে।
কিন্তু করার আগে ভাবুন
হেয়ার স্ট্রেটনিং কিন্তু অনেকসময় চুলের ক্ষতিও করে।
স্ট্রেট করার মাস খানেক পরে চুল যখন বাড়তে থাকবে দেখবেন স্ট্রেট করা পুরনো চুল আর স্ট্রেট না করা নতুন চুল মিলে কেমন অদ্ভুত লাগছে!
তাই আপনাকে মাস তিনেক পর পরই হয়ত পার্লারে ছুটতে হবে স্ট্রেট করার পার্মানেন্ট ফল পেতে।
ফলে খরচাও বাড়বে। মনে রাখবেন ভালো ভালো প্রফেশনাল পার্লারে হেয়ার স্ট্রেট করা কিন্তু যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ।
এছাড়া স্ট্রেটনেসকে বজায় রাখার জন্য ঘন ঘন হেয়ার স্ট্রেট করালে চুল রুক্ষ হয়ে যায় তো বটেই, তাছাড়া চুল ভঙ্গুরও হয়ে যায়।
তাই তখন চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায়।
বারবার কৃত্রিমভাবে চুলের স্ট্রেট করা কিন্তু খুশকি ও ইচিং-এর সমস্যাও ডেকে আনে, চুলের গোড়া ও স্কাল্পেরও ক্ষতি করে এই হেয়ার স্ট্রেটনিং।
হেয়ার স্ট্রেটনিং-এর ফলে চুলের স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়, ফলে চুলের নর্মাল বৃদ্ধিও এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এছাড়া হেয়ার স্ট্রেটনিং-এর সময় যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা অনেকসময় অ্যালার্জিরও কারণ হয়।
বাড়িতে করবেন না
হেয়ার স্ট্রেটনিং-এর গোটা প্রক্রিয়াটাই যেহেতু হয় চুলে ‘হিট’ বা উত্তাপ দিয়ে তাই হেয়ার স্ট্রেটনিং করার যন্ত্র আজকাল কিনতে পাওয়া গেলেও তা দিয়ে বাড়িতে বসে হেয়ার স্ট্রেট না করতে যাওয়াই ভালো।
এতে পার্লারের মতো ফল তো পাবেনই না। আর না জেনে করতে গিয়ে ওতে অনেকসময় হয়ত চুলে বেশী উত্তাপ লেগে যায়।
ফলে চুল বেশী রুক্ষ হয়ে গিয়ে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে। তাই যখনই হেয়ার স্ট্রেট করাবেন পার্লারে অবশ্যই যাবেন।
আর সস্তার পার্লারে গিয়ে মাথার চুলের ওপর এসব গবেষণা না করাই ভালো। তাই ভালো দামী পার্লারে যান।
হয়ত একটু বেশী খরচ হবে, কিন্তু প্রফেশনাল হেয়ার এক্সপার্টদের সাহায্য নেওয়াই এক্ষেত্রে উচিত।
তাই চুলের ওপর গবেষণা করতে চান, নিজেকে নিউ লুকে দেখতে হেয়ার স্ট্রেট করাতে ছান—খুব ভালো কথা।
কিন্তু তার আগে হেয়ার স্ট্রেটনিং নিয়ে নিজে একটু গবেষণা করে নিন।
যারা করেছেন তাঁদের থেকে শুনুন ব্যাপারটা কিরকম। তারপর এগোন।
নয়ত দেখবেন স্টাইল করতে গিয়ে হয়ত চুলটারই বারোটা বেজে গেল!
তারপর আবার ডাক্তারের কাছে ছুটতে হচ্ছে হেয়ার ট্রিটমেন্টের জন্য।
তাই সাবধানে করুন। আর হেয়ার স্ট্রেটনিং করার আগে ভাবুন।