শেষ কবে মুখে একটু মেকআপ করেছিলেন মনে আছে?
আসলে যেদিন থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই সাজগোজ সব ঘুচে গেছে আমাদের বেশিরভাগের।
যেহেতু বাইরে বেরোনোর পাট নেই, তাই ফাউন্ডেশন, কমপ্যাক্ট, কনসিলার তো দূরের কথা।
এমনকী আইলাইনার বা লিপস্টিকের মতো সাধারণ সাজসরঞ্জামও পড়ে রয়েছে নেহাত অবহেলায়!
সকাল বিকেল মুখে একটু ময়শ্চারাইজার মেখেই কাজ চালিয়ে দিচ্ছেন বহু মেয়ে!
তাতে ত্বক বহুদিন পর একটানা তাজা শ্বাস নিতে পারছে ঠিকই, কিন্তু আয়নায় নিজেকে দেখে সেই যে মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে, আর কিছুতেই ভালো হচ্ছে না!
নিজেকে বন্দি মনে হচ্ছে, মন খারাপ লাগছে, সারাটা দিনই অসম্ভব ক্লান্ত লাগছে।
সমস্যাটা এখানেই!
বাইরে বেরোনোর আগে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে প্রেজেন্টেবল করে তোলার জন্যই যে শুধু মেকআপের প্রয়োজন তা নয়।
বরং আপনার আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার জন্য, দিনভর চনমনে থাকতেও মেকআপের দরকার আছে!
একাধিক গবেষণা দেখিয়েছে, ডিপ্রেশন কাটিয়ে ফিল-গুড ফ্যাক্টর ধরে রাখতে মেকআপ দারুণ কাজ করে!
তাই যেদিন খুব মুষড়ে পড়বেন, কোনও কিছুই ভালো লাগবে না, সেদিনগুলোয় একটু আয়নার সামনে জোর করে বসুন।
ফের হাতে তুলে নিন মেকআপ ব্রাশ! সেজেগুজে কয়েকটা সেলফি তুলুন নিজের! দেখবেন, মনখারাপের মেঘ কোথায় হাওয়া হয়ে গেছে!
তবে শুধু মন খারাপ হওয়ার অপেক্ষাতেই বা বসে থাকবেন কেন?
নিজের জন্যই না হয় সেজে উঠুন!
বিয়েবাড়িতে যাওয়ার মতো করে সাজতে বলছি না, এমনভাবে সাজুন যাতে আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেরই ভালো লাগে!
রইলো কিছু ছোট্ট টিপস
মুখটা প্রথমে ফেসওয়াশ বা ক্লেনজার দিয়ে ভালো করে মুছে প্রথমে টোনার, তারপর ময়শ্চারাইজার মেখে নিন।
বাড়িতেই আছেন, ফলে ভারী ফাউন্ডেশন মাখার দরকার নেই। বিবি ক্রিমটাই মেখে নিন মুখে।
তাতে একটা সমান স্কিনটোন পাবেন। বিবি ক্রিম না থাকলে ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে অল্প ফাউন্ডেশন মিশিয়ে মাখলেও একই ফিনিশিং পাবেন।
হালকা করে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার বুলিয়ে নিন মুখে।
টিন্টেড লিপ বাম আছে? সেটা আঙুলে সামান্য ঘষে নিয়ে গালে হালকা করে ড্যাব করে দিলে চমৎকার একটা আভা পেয়ে যাবেন।
চোখে আইলাইনার পরুন সময় নিয়ে। সরু করে উইং করুন।
বাড়িতেই তো আছেন, সাজে একটু নাটকীয়তা থাকলে ক্ষতি কী? চোখের নিচের পাতায় মোটা করে কাজল পরে নিন।
টিন্টেড লিপ বামটা এবার বুলিয়ে নিন ঠোঁটে। তার উপরে পছন্দের শেডের লিপস্টিক পরুন। খুব সুন্দর একটা গ্লসি লুক পাবেন।
যাদের টিপ পরার অভ্যেস আছে, টিপ পরুন। না পরলেও ক্ষতি নেই। নিজের ভালো লাগছে কিনা সেটাই আসল।
চুলটা সুন্দর করে ব্রাশ করে নিন। এবার দেখুন নিজেকে আয়নায়! মনটা ভালো হয়ে গেল তো?
এই ভালো লাগাটা ধরে রাখতে মাঝেমাঝেই বসে পড়ুন আয়নার সামনে। দেখবেন লকডাউনের দিনগুলো কেমন হালকা হয়ে যায়!
বিশেষ টিপস
গাঢ় রঙ পরতে দ্বিধা করবেন না! লাল টুকটুকে বা বার্ন্ট অরেঞ্জ শেডের যে লিপস্টিকটা পরার আগে সাতপাঁচ ভাবেন, এই সময় নির্দ্বিধায় পরে নিন।
গাঢ়, উজ্জ্বল রং মন ভালো করে দেবে নিমেষে! চোখেও পরুন নীল বা সবুজের মতো শেড।
যারা মেকআপ নিয়ে মাঝেসাঝে এক্সপেরিমেন্ট করতে চান, তারা কাজে লাগাতে পারেন এই ফাঁকা সময়টা।
শেড নিয়ে, ব্রাশের স্ট্রোক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন। অফবিট রং পরে দেখুন মানাচ্ছে কিনা।
মেকআপের ব্লেন্ডিংটা রপ্ত করে নিন।
লকডাউন উঠে গেলে আপনার সাজগোজের কেতায় তাক লেগে যাবে সেরা মেকআপ আর্টিস্টদেরও! সেটাও কি কম পাওনা বলুন?