মেহেদি বা এর রং ব্যবহার বিষয়ে আমাদের সমাজে নানা ধারণা চালু আছে।
কেউ কেউ মনে করেন, পায়ে মেহেদি দেওয়া যায় না।
এটা ভুল ধারনা।
ইসলাম নারীদের মেহেদি ব্যবহারে সম্পূর্ণরূপে অনুমতি প্রদান করেছে।
শুধু তাই নয়, স্বামীর মনোরঞ্জনের জন্য স্ত্রীকে সজ্জিত হতে ইসলাম উৎসাহ প্রদান করেছে।
বর্তমান সমাজে মেহেদির ব্যবহার ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠান আয়োজন উপলক্ষেও আমাদের মাঝে মেহেদি ব্যবহারের বেশ প্রচলন আছে।
নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই নানা সময় নানা কাজে মেহেদি বা তার রং ব্যবহার করছেন।
নারীরা হাতে, পায়ে অথবা চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মেহেদির রং বেছে নিচ্ছেন।
পুরুষরাও চুল ও দাড়ির অকালপক্বতা রোধে কিংবা সৌন্দর্য হিসেবে মেহেদি ব্যবহার করছেন।
মেহেদি পরার ব্যাপারে খুব সুন্দর একটি হাদিস রয়েছে তা হল–
আম্মাজান আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, এক মহিলা পর্দার আড়াল হতে একটি কিতাব হাতে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে বাড়িয়ে দিলো।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাত না বাড়িয়ে বললেনঃ আমি বুঝতে পারছি না এটা কোন পুরুষের হাত নাকি নারীর হাত?
সে বললো, বরং নারীর হাত।
নবী (ﷺ) বললেনঃ তুমি মহিলা হলে অবশ্যই তোমার নখগুলো মেহেদির রং দ্বারা রঞ্জিত করতে।
(আবু দাউদ,৪১৬৬)
পায়ে মেহেদি পরার বিধান-
মেয়েদের পায়ে মেহেদি দেয়া জায়েয। এতে কোনো সমস্যা নেই।
অনেকে বলেন, যেহেতু নবিজি (ﷺ) তাঁর দাড়ি মোবারকে মেহেদি দিতেন, সেহেতু নারীদের জন্য পায়ে মেহেদি দেওয়া উচিত নয়।
এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। নবিজি তো মাথায় তেলও ব্যবহার করতেন। অথচ আমরা অনেকে তো পায়ে তেল ব্যবহার করি।
এগুলো আবেগী কথা-বার্তা। বরং, নারীরা পায়ে মেহেদী দিতে পারবে।
এ ব্যাপারে আলিমগণ একমত। (ফাতহুল বারি: ১০/৩৬৭, রাদ্দুল মুহতার: ৬/৪২২)
আল্লামা ইবনে নুজাইম বলেন, নারীদের হাতে পায়ে মেহেদি ব্যবহার করতে কোনো আপত্তি নেই, যদি তা দিয়ে কোনো প্রাণীর প্রতিকৃতি আঁকা না হয়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যাহ-৫/৩৫৯, আলবাহরুর রায়িক-৮/২০৮)
এজন্য উলামায়ে কেরাম মেয়েদের হাতে মেহেদি ব্যবহার করা মুস্তাহাব বলেছেন।
ইমাম শাফেয়ী (রহ.)- এর মতে যে মহিলার স্বামী রয়েছে তার জন্য সব সময় হাতে মেহেদির আলামত/রং রাখা মুস্তাহাব।
মেহেদি সংক্রান্ত হাদিস ও মনীষীদের বাণী থেকে বুঝে আসে, যদি সম্ভব হয় তাহলে সব সময় হাতে মেহেদির রং রাখা উত্তম।
আর যদি সম্ভব না হয় তাহলে মাঝেমধ্যে হলেও রাখা উচিত।